চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের জন্য চালু হওয়া দেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল বাস সেবা অর্থাভাবে সংকটের মুখে পড়েছে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে বিআরটিসি ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে চালু হওয়া এই সেবা চট্টগ্রাম নগরীর ১০টি রুটে প্রতিদিন তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে স্কুলে যাতায়াতের নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য সুবিধা দিয়ে আসছে।
এ সেবা পরিচালনার খরচ বহন করছিল শিল্প প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড। ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি গত বছর ৭২ লাখ টাকা পরিশোধ করে। তবে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বাকি অর্থ দিতে না পারার কথা জানিয়ে সম্প্রতি তারা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছে। অন্যদিকে প্রতিটি বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য ফেয়ার বক্স রাখা হলেও শিক্ষার্থীরা নিয়মিত নামমাত্র ৫ টাকা ভাড়াও পরিশোধ করছে না।
বিআরটিসির চট্টগ্রাম বাস ডিপোর অপারেশন ম্যানেজার মো. জুলফিকার আলী কালবেলাকে বলেন, বাসগুলোয় কোনো ভাড়া তোলা হয় না। সেখানে ভাড়ার বাক্স বসানো আছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় ৫ টাকা করে বক্সে ফেলবে—এমন উদ্যোগ নেওয়া ছিল; কিন্তু শিক্ষার্থীরা সে টাকা নিয়মিত পরিশোধ করে না।
এই সেবা শুধু নিরাপদ যাতায়াতই নয়, শহরের যানজট নিরসনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ৭৮ জন শিক্ষার্থী ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট প্রতিটি বাসে রয়েছে জিপিএস ট্র্যাকিং, আইপি ক্যামেরা ও রিয়েল টাইম লোকেশন সুবিধা। শিক্ষার্থী বাসে উঠলেই অভিভাবকের মোবাইল ফোনে পৌঁছে যায় বার্তা।
অভিভাবক মো. আরাফাত হোসেন বলেন, এ বাসটি আমাদের অনেক উপকারে আসছে। আমাদের সঙ্গে যেতে হচ্ছে না। আমাদের বাচ্চাদের আপডেট নিয়মিত পাই। আমরা চাই না এ সেবা বন্ধ হোক।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. শরিফ উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, সেবাটি টিকিয়ে রাখতে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজছি। জিপিএইচ ইস্পাত তাদের আর্থিক পরিস্থিতির কারণে অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে বাসগুলো পরিচালনা বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই।
তিনি বলেন, বাসগুলো ২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। সেসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছি, শিক্ষার্থীরা যেন বাস ভাড়া পরিশোধ করে। যাতে অন্তত জ্বালানি বা রক্ষণাবেক্ষণের খরচ তোলা যায়।
মন্তব্য করুন