ময়মনসিংহ ব্যুরো ও নান্দাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৬ জুলাই ২০২৫, ১১:২৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সিফাতের পর এবার মিলল অপহৃত শিশু সাদাবের লাশ

ময়মনসিংহ
সিফাতের পর এবার মিলল অপহৃত শিশু সাদাবের লাশ

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে একই দিনে নিখোঁজ হওয়া দুই শিশুর মধ্যে সিফাত হাসানের (১০) পর এবার মিলল আয়মান আকন্দ সাদাবের (৫) খণ্ডিত মরদেহ। নিখোঁজের চার দিন পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে দেড়শ গজ দূরের কচুরিপানাভর্তি একটি পুকুর থেকে তার খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে আশপাশের জঙ্গলে দেহের আরও তিনটি অংশ পাওয়া যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গত ১১ জুলাই নিখোঁজ হয়েছিল দুই শিশু সিফাত ও সাদাব। এরপর দুই শিশুর পরিবারের কাছে দফায় দফায় মুক্তিপণও চাওয়া হয়। সন্তান ফিরে পেতে মুক্তিপণ দিলেও নিখোঁজের পরদিন বাড়ির অদূরে মেলে শিশু সিফাতের মরদেহ। চার দিন পর মিলেছে আয়মান আকন্দ সাদাবের মরদেহ।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আয়মান সাদাব নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘরিয়া গ্রামের প্রবাসী আল আমিনের ছেলে। সে মায়ের সঙ্গে গফরগাঁওয়ের উপজেলার পাগলা থানার দীঘিরপাড় গ্রামে নানাবাড়িতে থাকত। সাদাবের নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার নানা। পরদিন ১২ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে মোবাইল ফোনের দুটি নম্বর থেকে ৩০ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় শিশু দুটির স্বজনদের কাছে। দুটি নম্বরের একটিতে ২০ হাজার ও অন্য নম্বরে ৮ হাজার টাকা পাঠানো হয়। ফোন করে বলা হয়েছিল, ‘ছেলে ভালো আছে, টেনশন কইরেন না। টাকা পাঠালে আধা ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দিয়া যাব।’ কিন্তু গফরগাঁও রেলস্টেশনে গিয়ে স্বজনরা অপেক্ষা করলেও ফোন নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া যায়।

সাদাবের মামা খলিল মিয়া বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আমাদের বাড়ি থেকে দেড়শ গজ দূরে এক প্রতিবেশী পুকুরপাড়ে ঘাস কাটতে গিয়ে দুর্গন্ধ শুরু হলে খোঁজ করতে গিয়ে ভাগনের লাশ দেখতে পায়। পুকুরে পড়ে মরল না কেউ তাকে মেরে ফেলে রাখল বুঝতে পারছি না।’

নিহত সাদাবের মা সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমার একমাত্র নিষ্পাপ ছেলে কী অন্যায় করেছে। তাকে এভাবে অপহরণ করে দাবি করা টাকা নিয়েও চার দিন আটকে রেখে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে। আমার বুক খালি করেছে। আমি আমার নিষ্পাপ ছেলের খুনিদের ফাঁসি চাই।’

দুই শিশু নিখোঁজ ও মুক্তিপণ দাবির বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও তারা যথাসময়ে কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ পরিবারের। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগর সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত যেসব হত্যাকাণ্ড হচ্ছে, এর দায়ভার রাষ্ট্রের। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি অবনতির কারণেই এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

পাগলা থানার ওসি ফেরদৌস আলম বলেন, দুই শিশু অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জোর তদন্ত চলছে। মুক্তিপণ নেওয়া চক্রের সদস্যদের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। প্রতারণার জন্য তারা টাকা নিয়েছিল। প্রতারক চক্রের সদস্যরা পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। যে কোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খালেদা জিয়া ঐক্যের প্রতীক : আমিনুল হক

বিরল প্রজাতির শকুন উদ্ধার

নভেম্বরে আড়াই লাখ ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করেছে ডিএনসিসি

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণে সহপাঠীসহ ৩ জন রিমান্ডে

কাতারের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাবে মধ্যরাতে

কৃষকের ১২ হাজার তরমুজ চারা নষ্ট করল দুর্বৃত্তরা

বন্ধুত্বের টানে যশোরে কোরিয়ান নাগরিক সিমকো 

হিরো আলমকে হত্যাচেষ্টায় জামিন পেলেন ম্যাক্স অভি

হাসনাত-সাদিকসহ অক্সফোর্ড ইউনিয়নে আমন্ত্রণ পেলেন যারা

গতি বাড়াতেই বিচ্ছিন্ন হয় বগি, শব্দ পেয়ে ট্রেন থামালেন চালক

১০

দুই মাসের জন্য ছিটকে গেলেন রিয়াল তারকা

১১

নিজ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণায় যা বললেন আলোচিত ফয়জুল হক

১২

জনস্বাস্থ্য পেশার সম্ভাবনা নিয়ে আইএসইউতে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের সেমিনার 

১৩

সিনেমার কায়দায় প্রেমিকাকে বিয়ের প্রস্তাব, ভিডিও ভাইরাল

১৪

আজও কমলো স্বর্ণ ও রুপার দাম

১৫

চমকে দিলেন ফারিণ

১৬

সাগরের ৩৯২ মিটার গভীরে কী বানাচ্ছে নরওয়ে

১৭

সাভারে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় বিএনপির দোয়া

১৮

রুমাল পেতে বাসের সিট দখল, সরিয়ে অপরজন বসতেই লঙ্কাকাণ্ড

১৯

সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আরেক বাংলাদেশি নিহত

২০
X