অতি প্রয়োজনীয়তা হওয়া সত্ত্বেও অক্সিজেন জরুরি ওষুধের তালিকায় নেই। হাসপাতাল ভেদে অক্সিজেনের দামও ভিন্ন হয়। তাই অক্সিজেনকে সহজলভ্য করতে ও দাম নির্ধারণ করতে এটিকে জরুরি ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত বাংলাদেশ অক্সিজেন সামিটে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ন্যাশনাল অক্সিজেন সিস্টেম গড়ে তুলে সারা দেশে সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। ডিপিপি প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশাপাশি অক্সিজেন ডিভাইসের মান নিয়ন্ত্রণও করা হবে। আমরা দেশে অক্সিজেন, ভ্যাকসিন, অ্যান্টিভেনম ও অ্যান্টিরেবিস উৎপাদনের উদ্যোগ নিচ্ছি।’
সায়েদুর রহমান বলেন, ‘যদি নাগরিকদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ করতে না পারি, তবে আমাদের স্বাধীনতা অর্থহীন। যে কোনো খাতে এমন ব্যর্থতা, যা জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করে, সেগুলো মোকাবিলার সক্ষমতা আমাদের থাকতে হবে।’
সামিটে আরও অংশ নেন স্বাস্থ্যসেবা সচিব মো. সাইদুর রহমান, আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, পরিচালক (হাসপাতাল) অধ্যাপক ডা. এএইচএম মইনুল আহসান প্রমুখ।
আইসিডিডিআর,বি আয়োজিত অক্সিজেন সামিটে বাংলাদেশের অক্সিজেন চাহিদা, প্রাপ্যতা, নীতিমালা, বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও গবেষণার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশকেন্দ্রিক গবেষণা উপস্থাপনার পাশাপাশি ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ কমিশন অন মেডিকেল অক্সিজেন সিকিউরিটির প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত বৈশ্বিক তথ্য, প্রমাণ ও গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
আয়োজকদের মতে, মেডিকেল অক্সিজেন একটি অপরিহার্য জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, কিন্তু এর নিরবচ্ছিন্ন প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ। কভিড-১৯ মহামারির সময় বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে সব বয়সী মানুষের জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। তবু এই জীবনরক্ষাকারী উপকরণের ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি ও বৈষম্য রয়ে গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসাক্ষেত্রে অক্সিজেনের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, কিন্তু সরবরাহ এখনো অপর্যাপ্ত। তাই বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং অক্সিজেন ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই।
ল্যানসেট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রোগী ও স্বজনদের সাক্ষ্য থেকে বোঝা যায় অক্সিজেন সেবা ও পালস অক্সিমিটার ব্যবহারে এখনো বিপুল পরিমাণ ব্যক্তিগত ব্যয় বহন করতে হয়। তাই সরকারগুলোকে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতায় পালস অক্সিমেট্রি ও অক্সিজেন সেবা অন্তর্ভুক্ত করা এবং ব্যবহার ফি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
মন্তব্য করুন