এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সংস্থা আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। গত ২৬ আগস্ট চিঠিটি এক্সিম ব্যাংকে পাঠায় সংস্থাটি। এরপর ওই দিনই নিজের অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ তুলে নেন ব্যাংকটির এমডি ফিরোজ হোসেন। ফিরোজ হোসেনের ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য বলছে, ২৬ জুলাই এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ জারি করে আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিট। ওই দিন লাঞ্চ আওয়ারের পর চিঠিটি রিসিভ করে এক্সিম ব্যাংক। কিন্তু ওই দিন বিকেল ৪টা ৯ মিনিটে এক্সিম ব্যাংকের হিসাব থেকে ৫ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা তুলে নেন এমডি ফিরোজ হোসেন। যদিও ব্যাংকে থাকা বাকি টাকা তুলতে সক্ষম হননি তিনি।
বিষয়টি জানতে চাইলে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ২৬ তারিখ লাঞ্চ আওয়ারের পরই এ চিঠিটা ব্যাংক রিসিভ করেছে। এখন শাখায় পাঠাতেও তো একটা প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয়। শাখা এ চিঠি কটায় পেয়েছে এবং এমডি সাহেব কটায় টাকা স্থানান্তর করেছেন, বিস্তারিত আমার জানা নেই। আমি জানার চেষ্টা করছি। জেনে আপনাকে জানাব। আর তার তো ব্যাংকে দেড় কোটি টাকার মতো আছে। সেখানে ৫ লাখ টাকা স্থানান্তর করেছেন—এটা কোনো টাকা হলো?
এক্সিম ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, কয়েক মাস ধরে ব্যাংকটিতে ব্যাপক তারল্য সংকট চলছে। এজন্য গ্রাহকদের ঠিকমতো আমানতের টাকা দিতে পারছে না ব্যাংকটি। ব্যাংকটির কিছু শাখা আমানতকারীদের সর্বোচ্চ ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করতে পারছে বলে জানা গেছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে এক্সিম ব্যাংকের এমডি ফিরোজ হোসেন কালবেলাকে বলেন, রাজস্ব সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছিল। এ জটিলতা সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। কিন্তু জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে পরিশোধ করে দিয়েছি। এজন্য ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই চিঠি আছে আমার কাছে। আর আমি এখন দায়িত্ব পালন করছি না। ছুটিতে আছি।
তথ্য বলছে, আওয়ামী লীগ আমলে এক্সিম ব্যাংকে অনিয়মের তদন্তের স্বার্থে গত ৫ জানুয়ারি এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ হোসেনসহ অন্য আরও চার ব্যাংকের এমডিকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় ব্যাংকগুলোর বোর্ড। এসব এমডি ব্যাংকগুলোতে চালানো ফরেন্সিক অডিটে যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারেন সেজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শেই তাদের ছুটিতে পাঠানো হয়। এরপর থেকে ফিরোজ হোসেন এখনো ছুটিতে রয়েছেন। তবে গতকাল ফিরোজ হোসেনের ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন