কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২৭ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গবেষণা

সিদ্ধান্ত নিতে একসঙ্গে সক্রিয় হয় পুরো মস্তিষ্ক

সিদ্ধান্ত নিতে একসঙ্গে সক্রিয় হয় পুরো মস্তিষ্ক

মস্তিষ্কের কার্যপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রচলিত মডেলগুলোকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে নতুন দুটি গবেষণা। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় স্নায়ুকোষের কার্যকলাপ রেকর্ড করতে সক্ষম হয়েছেন। এতে দেখা গেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়, বিশেষ করে কোনো কিছু জয় করার বিষয়ে হলে মস্তিষ্কের প্রতিটি অঞ্চলজুড়ে ৬ লাখেরও বেশি স্নায়ুকোষ একসঙ্গে সক্রিয় হয়ে ওঠে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার নতুন মাত্রা উন্মোচন করেছে।

যুগান্তকারী এ গবেষণা প্রকাশিত হয় বিশ্বখ্যাত জার্নাল নেচারে। এতে বলা হয়েছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ শুধু বিশেষ কিছু মস্তিষ্ক অঞ্চলের কাজ নয়; বরং এটি পুরো মস্তিষ্কের সমন্বিত ক্রিয়াকলাপ। এ আবিষ্কার অটিজম ও সিজোফ্রেনিয়ার মতো নিউরোসাইকিয়াট্রিক রোগের গবেষণায় নতুন দিক উন্মোচন করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি গবেষণাগার একসঙ্গে কাজ করে ১৩৯টি ইঁদুরের মস্তিষ্ক থেকে ৬ লাখ ২১ হাজার ৭৩৩টি একক স্নায়ুকোষের কার্যকলাপ রেকর্ড করেন বিজ্ঞানীরা। এর থেকে নিউরনের সংকেত যাচাই করে শুধু বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য ৭৫ হাজার ৭০৮টি নিউরন বেছে নেওয়া হয়, যাতে বিশ্লেষণের ফল সঠিক হয়। তারা ইঁদুরের ২৭৯টি ভিন্ন মস্তিষ্ক অঞ্চলের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করেন, যা মোট মস্তিষ্কের প্রায় ৯৫ শতাংশ।

একটি গবেষণায় অংশ নেওয়া ইঁদুরদের সামনে একটি পর্দায় ডানে অথবা বামে আলো জ্বলত। আলো দেখে ইঁদুরদের একটি চাকা ঘুরিয়ে আলোর দিকে ইঙ্গিত করতে হতো। সঠিক হলে মিলত পুরস্কার। কিছু ক্ষেত্রে আলো এতই ক্ষীণ ছিল যে, ইঁদুরদের আগের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অনুমান করতে হতো—সেই অনুমানের সময়েই মস্তিষ্কজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে স্নায়ুকোষের সমন্বিত সংকেত।

তবে এ গবেষণার ফল প্রচলিত ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আগে মনে করা হতো যে, তথ্য প্রথমে অনুভূতিতে, তারপর সিদ্ধান্তে, শেষে মোটরে যায়। তবে নতুন এ গবেষণা বলছে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় পুরো মস্তিষ্ক একযোগে সক্রিয় হয়। এমনকি যেসব অঞ্চল আগে শুধু সেন্সরি বা মোটর কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হতো, সেগুলোতেও সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত কার্যকলাপ ধরা পড়ে।

আন্তর্জাতিক ব্রেইন ল্যাবরেটরির (আইবিএল) সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ইউনিভার্সিটি অব জেনেভার গবেষক অধ্যাপক আলেকজান্দ্রে পুজে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়, বিশেষ করে পুরস্কারের সঙ্গে যুক্ত হলে মস্তিষ্ক যেন আলোকিত হয়ে ওঠে।’

দ্বিতীয় গবেষণায় উঠে আসে, ইঁদুররা তাদের আগে অভিজ্ঞতা থেকে কোথায় আলো জ্বলবে, তা অনুমান করতে থাকে এবং এ ভবিষ্যদ্বাণীমূলক সংকেত শুধু উচ্চস্তরের চিন্তন এলাকায় সীমাবদ্ধ না থেকে, পুরো মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ থ্যালামাসেও এ ধরনের সংকেত ধরা পড়ে। অর্থাৎ মস্তিষ্কের প্রতিটি স্তরেই পূর্বানুমান তৈরি হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিআইডির ওপর হামলা, যুবক আটক

শুল্কের প্রভাব কমাতে এসি, চা ও স্কুল সরঞ্জামের দাম কমাচ্ছে ভারত

আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বপ্নের কথা জানালেন জামায়াত আমির

গুরুতর অভিযোগে আর্জেন্টিনাকে কোটি টাকার জরিমানা ফিফার

সুরমা নদীতে ভাসছিল জমিয়ত নেতার মরদেহ

ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত আফগানিস্তানে ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশ

পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যার পেছনে অস্ত্র হিসেবে পানি ব্যবহার করছে ভারত? 

অশ্লীল স্পর্শের শিকার অক্ষয় কুমার

শিশু তাসনুহার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

‘ব্রাজিলের বিশ্বকাপ দলে কাদের জায়গা নিশ্চিত?’, উত্তর দিলেন আনচেলত্তি

১০

ডাকসু নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন মাহিন

১১

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৩০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হলো 

১২

ইঁদুরের কামড়ে হাসপাতালে প্রাণ গেল নবজাতকের

১৩

যে ৮ কারণে মুখের চামড়া কুঁচকে যায়

১৪

মোবাইল চার্জ দেওয়ার সঠিক সময় কখন?

১৫

বিয়ের ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের দায়ে যুবকের ২০ বছর কারাদণ্ড 

১৬

মুগ্ধতায় মিম

১৭

এক নজরে দেখে নিন এশিয়া কাপের ৮ দলের স্কোয়াড

১৮

এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশের সেরা একাদশ বাছাই করলেন আকাশ চোপড়া

১৯

ফেসবুকে কোন সময়ে পোস্ট দিলে বেশি ভিউ পাওয়া যায়? যা বলছেন বিশেষজ্ঞ

২০
X