জ ই আকাশ, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:২৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বাঁচার তাগিদে কাজ করছেন চরাঞ্চলের নারীরা

বাঁচার তাগিদে কাজ করছেন চরাঞ্চলের নারীরা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা। উত্তাল পদ্মা নদীর এক পাড়ে চর জেগে বসতি গড়ে ওঠে, আরেক পাড়ে ভাঙে। এখানকার নারীরা প্রতিনিয়ত লড়াই করে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায়। ঘরবাড়ি হারিয়ে নতুন করে সংসার পাতে।

চর এলাকার সেলিমপুর গ্রামের আকলিমা বেগম। নদীভাঙন এলাকায় কীভাবে লড়াই করে বাঁচতে হয়. সেটা দেখতে দেখতেই বড় হয়েছে। বাঁচার তাগিদে যখন যেটা পায় সেটাই করে।

আকলিমা বেগম বলেন, ‘আমরা চরে থাকি। সারা দিন কামকাইজের মধ্যে দিয়ে আমাগো সময় পার হয়। সকালে ঘুম থেকে উইঠ্যা ঘরের কাম শেষ কইরা তারপর মাঠে নামি। কয়ডা গরু আছে, তাদের খাওন তো জোগাড় করা লাগে। আমাগো চরের অনেকেই বাড়ির কামকাইজ শেষ কইরা আবার গরুর খাওন আনার জন্য মাঠে-ঘাটে যায়। অনেকে দিন মজুরেরও কামলা দেয়। কী করুম, জিনিসপত্রের দাম! পোলাপান নিয়া বাঁচুন তো লাগব। তাই এত কষ্ট করন লাগে।’

গঙ্গাধরদি গ্রামের বিথী বেগম জানান, ‘আমগো চরাঞ্চলে গরু-বাছুর পালনে খাবার কেনা লাগে না। চরে ঘাস আছে। একটু কষ্ট কইরা কাইটা আনলেই হয়। তাই আমাগো গরু পালন খরচ কম হয় বইলা লাভ অনেক বশি হয়। আগে চরে আরও বেশি ঘাস ছিল। অহন ঘাস অনেকটা কইমা যাইতেছে। কারণ, আগের চাইতে মানুষ দিন দিন পতিত জমিগুলো আবাদ করতাছে। এ ছাড়া প্রতি বছর কমবেশি নদীভাঙনে অনেক জমিজমা নদীতেও চইলা গেছে। যাতে কিছু বাড়তি টেকা হয়, এজন্যই কষ্ট হইলেও কয়ডা গরু পালতাছি।’

এভাবেই নারীরা ঘরকন্না, কৃষিকাজের পাশাপাশি গরুও প্রতিপালন করছেন। এর ফলে আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন তারা। তাদের প্রতিপালিত দুই শতাধিক গরু প্রতিবছর কোরবানি ঈদে এই চরাঞ্চল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন হাটবাজারে নেওয়া হয়। যার অধিকাংশ লালনপালন করে থাকেন চরাঞ্চলের নারীরা।

এ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নই নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। এর মধ্যে আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জ তিনটি দুর্গম চরাঞ্চল।

গরু প্রতিপালনের পাশাপাশি কৃষিকাজও করেন নারী কৃষকরা। চরাঞ্চলের দো-আঁশ মাটিতে ভুট্টা, সরিষা, ধান, মাষকলাই, চিনাবাদাম সবচেয়ে বেশি চাষ হয়। এ ছাড়া পুরুষ শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় অপেক্ষাকৃত কম মজুরিতে নারী শ্রমিকরা বেশি কাজ করেন।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শ্রমিক বলেন, দিন মজুরি হিসেবে গবাদি পশুর জন্য ঘাস সংগ্রহ করে দিই। মহিষ, ঘোড়া, ছাগল, ভেড়া এবং হাস-মুরগিও লালন পালন করে সংসারে আয় বাড়াই। এ ছাড়া গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারিভাবে নিবন্ধিত রয়েছে অনেক নারী শ্রমিক।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাতে যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস

সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া

সাভারে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেপ্তার ৫

সাতক্ষীরায় ‘স্যাম্পল’ ওষুধ বিক্রি, টাস্কফোর্সের অভিযান

সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে নতুন ৫ সদস্য

ছয় মাসে ১৫ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রস্তাব পেল বিডা

জোভান-নিহার ‘সহযাত্রী’

ভারতীয় ভিসা জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ১

টাইফয়েড টিকা পেতে লাগবে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন

নারায়ণগঞ্জে পুলিশি নির্যাতনের শিকার বিএনপি কর্মী ইব্রাহিম সুস্থতার পথে

১০

শিক্ষার উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ পারভেজ মল্লিক

১১

চাকসু নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা, নির্বাচন ১২ অক্টোবর

১২

জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে ইসির ২৪ পরিকল্পনা

১৩

লালে রঙিন হাজারো নারী, স্বামীর জন্য করলেন প্রার্থনা

১৪

সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে শুধু নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই : হাফিজ উদ্দিন

১৫

গুম যেন না হয় তা নিয়ে সরকার কাজ করছে : প্রেস সচিব

১৬

যাদের জন্য ডিম খাওয়া বিপজ্জনক

১৭

আশঙ্কাজনক হারে ছড়িয়ে পড়ছে পশুবাহিত এক অজানা রোগ

১৮

ভারতীয় নাগরিক মোস্তফার এনআইডি বাতিল কেন নয়, হাইকোর্টের রুল

১৯

প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনায় বৈঠকে বসেছে কমিটি

২০
X