কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:১২ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সা ক্ষা ৎ কা র

গ্রামভিত্তিক অর্থপ্রবাহ অর্থনীতিকে একেবারে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করেছে

ড. জাহিদ হোসেন
গ্রামভিত্তিক অর্থপ্রবাহ অর্থনীতিকে একেবারে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করেছে

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ড. জাহিদ হোসেন বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও পোল্যান্ডে ১৪ বছর শিক্ষকতা করছেন। তিনি ১৯৯৫ সালে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে অর্থনীতিবিদ হিসেবে যোগ দেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের ব্যাংক খাত, উন্নয়ননীতি পর্যালোচনাসহ বাংলাদেশ, দক্ষিণ এশিয়া ও বৈশ্বিক অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করেন। লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত এখন। দেশের অর্থনীতি, ব্যাংক, উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি, বৈষম্যসহ নানা বিষয় নিয়ে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির অবস্থা কেমন দেখছেন?

ড. জাহিদ হোসেন: বর্তমান অর্থনীতির অবস্থাকে দুটি ভাগে ভাগ করে দেখা যেতে পারে। প্রথমটি হলো—সামষ্টিক স্থিতিশীলতা, যা ৫ আগস্টের আগে বেশ কয়েক বছর ধরেই একটি সংকটের মধ্যে ছিল। দ্বিতীয়টি হলো—অর্থনীতির সার্বিক কর্মচাঞ্চল্য বা গতিশীলতা, যা এখন কোন দিকে যাচ্ছে।

স্থিতিশীলতার দিক থেকে বললে, গত জুলাই-আগস্টের তুলনায় আমরা এখন অনেকটাই স্বস্তির অবস্থানে পৌঁছেছি। যেমন—মূল্যস্ফীতির সূচক এখনো উচ্চপর্যায়ে থাকলেও আগের মতো প্রতি মাসে বাড়ছে না, বরং এখন নিম্নগামী। বেশ কয়েক মাস ধরেই খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি কমার দিকে, যদিও তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এখনো অনেক ওপরে।

আপনি সামষ্টিক স্থিতিশীলতায় স্বস্তির কথা বলছেন। বিশেষ করে ডলার সংকট মোকাবিলায় কোন বিষয়গুলো মূল ভূমিকা রেখেছে বলে আপনি মনে করেন?

ড. জাহিদ হোসেন: সামষ্টিক অর্থনীতির দ্বিতীয় বড় অস্থিতিশীলতা ছিল বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ডলার সংকট। ২০২২ সাল থেকে কৃত্রিমভাবে ডলারের দাম চেপে রাখার ভুল নীতি সংকটকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সংস্কার করা হয়।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। সেপ্টেম্বরের পর থেকে আনুষ্ঠানিক বা ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ বেড়েছে। এর প্রধান কারণ হলো অর্থ পাচার বন্ধ হয়ে যাওয়া। যারা নিয়মিত মোটা অঙ্কের অর্থ পাচার করতেন, তারা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় এ ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। ডলারের এ বর্ধিত জোগান ও দুর্বল চাহিদা—দুটি মিলে বাজারে স্থিতিশীলতা এনেছে। পরিস্থিতি এখন এমন যে, ডলারের দাম অতিরিক্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই বাজার থেকে ডলার কিনছে। এটি বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে একটি বড় উন্নতির লক্ষণ।

ডলার বাজারের স্বস্তির পাশাপাশি ব্যাংক খাত নিয়েও অনেক উদ্বেগ ছিল। সেই খাতের ‘রক্তক্ষরণ’ ঠেকানোর ক্ষেত্রে কী ধরনের অগ্রগতি হয়েছে?

ড. জাহিদ হোসেন: সামষ্টিক অর্থনীতির তৃতীয় চাপের জায়গা ছিল ব্যাংক খাত। এ খাতের দুর্দশা এখনো কাটেনি, তবে যে ‘রক্তক্ষরণ’ হচ্ছিল, তা মোটামুটি ঠেকানো গেছে। আগস্টের পর একটি আতঙ্ক ছিল যে, লুটপাটের শিকার হওয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর মানুষ আস্থা হারাবে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুত কিছু ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া এবং তারল্য সহায়তা দেওয়ায় সেই আতঙ্ক প্রশমিত হয়েছে। যদিও এখনো কিছু দুর্বল ব্যাংকে গ্রাহকরা চেক দিয়ে টাকা পাচ্ছেন না, তবে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে—এ আস্থা তৈরি হওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি।

খেলাপি ঋণের পরিমাণ পরিসংখ্যানে বাড়ছে, যা দেখে অনেকে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। গত মার্চ পর্যন্ত স্বীকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর একটি বড় কারণ হলো, আগে খেলাপি ঋণ লুকানোর যে প্রবণতা ছিল, তা এখন কমে আসছে। অর্থাৎ কার্পেটের নিচ থেকে আসল চিত্র বেরিয়ে আসছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ চিহ্নিত করার নীতিমালা আরও কঠোর করেছে (আগের ১৮০ দিনের বদলে এখন ৯০ দিনেই খেলাপি)। ফলে এর পরিমাণ আরও বাড়বে। তবে এর মানে এই নয় যে, নতুন করে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। আগামী সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির প্রবাহ বন্ধ হয়েছে কি না।

স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে উন্নতির কথা বললেও আপনি অর্থনীতির কর্মচাঞ্চল্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কোন কোন খাতে এ দুর্বলতা সবচেয়ে বেশি স্পষ্ট এবং এর কারণ কী?

ড. জাহিদ হোসেন: এখানেই উন্নতির লক্ষণ খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আগস্ট পর্যন্ত রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধি খারাপ নয়। কিন্তু এর বাইরে অর্থনীতির গতি সঞ্চারকারী অন্যান্য সূচক, বিশেষ করে বিনিয়োগে কোনো ইতিবাচক সাড়া মিলছে না। জুলাই মাসের বিনিয়োগের পরিসংখ্যানে কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা এখনো খুবই দুর্বল। আপনি ব্যাংকারদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বলবেন, করপোরেট গ্রাহকদের কাছ থেকে নতুন ঋণের আবেদন আসছে না বললেই চলে। ব্যক্তিগত ঋণ, যেমন—গাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট কেনার ক্ষেত্রে সম্প্রতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা গেলেও সার্বিকভাবে নতুন বিনিয়োগ বা ব্যবসা সম্প্রসারণের কোনো জোরালো ইঙ্গিত নেই। এর অর্থ হলো, উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় চলতি মূলধনের চাহিদা থাকলেও নতুন বিনিয়োগ স্থবির হয়ে আছে, যা অর্থনীতির গতি ফেরানোর পথে সবচেয়ে বড় বাধা।

অর্থনীতির ধীরগতির প্রভাব সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও দারিদ্র্যের ওপর কীভাবে পড়ছে?

ড. জাহিদ হোসেন: এখানেই সবচেয়ে বড় উদ্বেগের চিত্রটি ফুটে উঠেছে। সম্প্রতি পিপিআরসির জরিপে দেখা গেছে, ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। যদিও তাদের জরিপ পদ্ধতি বিবিএসের মতো নয়, তবুও এ বৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতা তুলে ধরে। সেটি হলো, আমাদের সমাজে একটি বিশাল ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ (vulnerable) জনগোষ্ঠী রয়েছে, যারা দারিদ্র্যসীমার ঠিক ওপরে বাস করে। যে কোনো ছোট ধাক্কা—যেমন পরিবারের কারও অসুস্থতা বা আকস্মিক ব্যয়—তাদের আবার দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দেয়।

‘সেতুবন্ধ’ শীর্ষক এক বিশ্লেষণে আমরা দেখিয়েছিলাম, ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, একটি পরিবারের মাসে মাত্র দুদিনের আয় বন্ধ হলেই তারা দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে। এই ‘টোকা দিলেই পড়ে যায়’—এ ধরনের পরিবারের সংখ্যা অনেক। ২০২২ সালের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, সেই তুলনায় মজুরি না বাড়া এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ যে দুর্দশায় পড়েছিল, তা থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেনি।

এ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছে কোন বিষয়গুলো?

ড. জাহিদ হোসেন: দুটি বিষয় এ ক্ষেত্রে বড় ‘শক অ্যাবজরবার’ বা রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেছে। প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। কভিডের পর থেকে বিদেশে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ বেড়েছে। বর্তমানে বিদেশে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন বলে ধারণা করা যায়। গত অর্থবছরে তারা ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যার সিংহভাগই গেছে দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে। গ্রামভিত্তিক এ অর্থপ্রবাহ অর্থনীতিকে একেবারে ভেঙে পড়া থেকে রক্ষা করেছে।

দ্বিতীয় ইতিবাচক দিক হলো কৃষি খাত। গত আগস্টের বন্যার পর থেকে এ খাতে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসেনি। রাজনৈতিক অস্থিরতা শহরকেন্দ্রিক হওয়ায় এর প্রভাব কৃষিতে তেমন পড়েনি। ফলে শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের উৎপাদন স্বাভাবিক গতিতে এগিয়েছে। তবে এ দুটি বিষয় অর্থনীতিকে ধরে রাখতে সাহায্য করলেও সংকট থেকে বের করে আনার জন্য যথেষ্ট নয়।

আপনি অর্থনীতির সম্প্রসারণে তিনটি বড় সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন—ব্যাংক খাত, জ্বালানি-বিদ্যুৎ এবং ব্যবসায়িক নিয়মকানুন। ব্যাংক খাতের সংস্কার নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এ সংস্কারের প্রক্রিয়াটি আসলে কতটা জটিল এবং এর অগ্রগতি কতটুকু?

ড. জাহিদ হোসেন: ব্যাংক খাতের সংস্কার অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়া এবং এর দুটি দিক রয়েছে—একটি হলো নীতিগত সংস্কার, অন্যটি কাঠামোগত। নীতিগত ক্ষেত্রে কিছু গুণগত পরিবর্তন এসেছে। আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টেলিফোন করে চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়ম হতো। এখন সেই স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হয়েছে। ঝুঁকিভিত্তিক সুপারভিশন, ব্যাংকের প্রকৃত সুবিধাভোগী মালিক চিহ্নিত করা এবং স্বজনদের ঋণ নেওয়ার সীমা পর্যবেক্ষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলোর পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে সময় লাগবে।

কাঠামোগত সংস্কারের পথটি আরও কঠিন। বাইরে থেকে ১৫-২০টি দেউলিয়া ব্যাংককে একীভূত করার কথা বলা সহজ, কিন্তু বাস্তবে এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো দেশে অনুপস্থিত ছিল। সংস্কারের জন্য গঠিত টাস্কফোর্সের আইনি বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল। এরপর আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অর্ডিন্যান্স’ তৈরি করতে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দিয়ে ব্যাংকগুলোর অবস্থা নিরীক্ষা করাতেই অনেক সময় চলে গেছে। এরপর যখন মার্জারের উদ্যোগ নেওয়া হলো, তখন ব্যাংকগুলোর ভেতর থেকেও প্রতিরোধ এসেছে। অর্থাৎ প্রতিটি পদক্ষেপেই ‘করে করে শিখতে হয়েছে’। এটি একটি ছোট সরকারের জন্য বিশাল একটি ‘ফায়ার ফাইটিং’য়ের মতো।

এ সংস্কারগুলোর ভবিষ্যৎ কী? আপনি একটি নজির স্থাপন করার কথা বলছেন। এ উদ্যোগগুলো কি টেকসই হবে এবং তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?

ড. জাহিদ হোসেন: আমাদের হাতে সংস্কারের রূপরেখা বা ‘কী করতে হবে’ তার তালিকা আছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের ৫০০ পৃষ্ঠার টাস্কফোর্স রিপোর্টে তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। কিন্তু দিন শেষে শুধু পরিকল্পনা থাকলেই হবে না, একটি জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।

ব্যাংক মার্জারের যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে, আশা করি তা এ সরকারের সময়েই সম্পন্ন হবে। একবার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে ভবিষ্যৎ সরকারের পক্ষে একে পাল্টানো কঠিন হবে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো একটি নজির স্থাপন করা, যাতে ভবিষ্যতে একই ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য নতুন করে ‘চাকা আবিষ্কার’ করতে না হয়। আইন ও প্রক্রিয়াগুলো তৈরি হয়ে গেলে কাজ সহজ হয়ে যাবে।

আমি তরুণ প্রজন্মের ওপর আশাবাদী। যারা এ পরিবর্তন ঘটিয়েছে, সেই ‘জেন-জি’ বা তরুণদের চিন্তাভাবনা আগের প্রজন্মের চেয়ে ভিন্ন। তারা ব্যক্তির দলীয় পরিচয়ের চেয়ে তার যোগ্যতা ও পারফরম্যান্সকে গুরুত্ব দেয়, যা সম্প্রতি কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের ফলেও প্রতিফলিত হয়েছে। যদি এই ‘পারফরম্যান্সভিত্তিক’ এবং ‘জবাবদিহিমূলক’ সংস্কৃতি সমাজে প্রতিষ্ঠা পায়, তবেই এ সংস্কারগুলো টেকসই হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।

অতীতে প্রায়ই বলা হতো, ‘রাজনৈতিক সদিচ্ছা’ থাকলেই সংস্কার সম্ভব। কিন্তু আপনার বক্তব্যে মনে হচ্ছে, বিষয়টি এতটা সরল নয়। সংস্কার বাস্তবায়নে মূল বাধা বা সক্ষমতার সংকটটি আসলে কোথায়?

ড. জাহিদ হোসেন: আমার গত এক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আগে যখন সংস্কারের কথা উঠত, তখন আমাদের একটি বাঁধা উত্তর ছিল—‘রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব’। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারছি, সদিচ্ছা ছাড়া সংস্কার হয় না, তবে শুধু সদিচ্ছা থাকলেই সংস্কার হবে—এর কোনো গ্যারান্টি নেই। এর জন্য প্রয়োজন সংস্কার বাস্তবায়নের সক্ষমতা বা ‘ডেলিভারি ক্যাপাসিটি’।

এ সক্ষমতা চারটি গোষ্ঠীর সমন্বিত ভূমিকার ওপর নির্ভরশীল:

১. ক্যাবিনেট: যেখানে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে অর্থ, পরিকল্পনা, জ্বালানির মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা একটি ‘টিম’ হিসেবে কাজ করবেন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।

২. আমলাতন্ত্র: শুধু নির্দেশ দিলেই হবে না। মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি সংস্কার বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা না করেন, তবে সেই উদ্যোগ সফল হবে না।

৩. ব্যবসায়ী সংগঠন: আর্থিক খাত বা ব্যবসায়িক নিয়মকানুন সংক্রান্ত সংস্কারে এফবিসিসিআইর মতো সংগঠনগুলোর সমর্থন অপরিহার্য। যেমন—এনবিআরের সংস্কার আন্দোলনে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সমর্থন না থাকলে তা ঠেকানো কঠিন হতো।

৪. নাগরিক সমাজ: স্বাস্থ্য, শিক্ষা বা বিচার ব্যবস্থার মতো খাতে নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সমর্থন সংস্কারকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।

যে কোনো বড় সংস্কারে এ চারটি শক্তিকে এক জায়গায় আনতে না পারলে, সদিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তা বাস্তবায়ন করা প্রায় অসম্ভব।

সামনে এলডিসি উত্তরণের একটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর ফলে অর্থনীতিতে কী ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এবং উত্তরণের জন্য আমাদের প্রস্তুতি কেমন?

ড. জাহিদ হোসেন: এলডিসি উত্তরণের পর কিছু তাৎক্ষণিক এবং মধ্যমমেয়াদি ঝুঁকি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমরা আগে থেকেই এলডিসিভিত্তিক কোনো সুবিধা পেতাম না, তাই সেখানে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। বড় চ্যালেঞ্জ আসবে মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজার থেকে, তবে সেটিও ২০২৯ সালের পর। সবচেয়ে বড় তাৎক্ষণিক ঝুঁকিটি আসবে ওষুধ শিল্পে। এলডিসি হিসেবে আমরা পেটেন্ট করা ওষুধের ওপর যে ছাড় পেতাম (রয়্যালটি ফি ছাড়া উৎপাদন), তা উঠে যেতে পারে। এর ফলে ইনসুলিন, ক্যানসারসহ বিভিন্ন জরুরি ওষুধের দাম অনেক বেড়ে যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, দেশের প্রায় ২০ শতাংশ ওষুধ এ পরিবর্তনের কারণে প্রভাবিত হতে পারে। এ ছাড়া স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় কোনো পরিবর্তন না হলেও জলবায়ু পরিবর্তন বা কারিগরি সহায়তার মতো কিছু ছোট ছোট আন্তর্জাতিক তহবিল পাওয়ার সুযোগ সংকুচিত হতে পারে।

এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় আমাদের করণীয় কী? বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা ধরে রাখা এবং ডব্লিউটিওর শর্ত মেনে চলার ক্ষেত্রে আমাদের কৌশল কী হওয়া উচিত?

ড. জাহিদ হোসেন: ইউরোপীয় ইউনিয়নের শুল্কমুক্ত সুবিধা ধরে রাখার জন্য আমাদের বিকল্প পথে হাঁটতে হবে। যেমন—বাণিজ্য চুক্তি বা জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করা। যদিও আমাদের রপ্তানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় জিএসপি প্লাস পাওয়া কিছুটা জটিল, তবে সবকিছুই আলোচনার ওপর নির্ভরশীল। ভিয়েতনাম বা ভারত যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে পারে, আমরা কেন পারব না?

আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ আসবে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়মকানুন মেনে চলার ক্ষেত্রে। এলডিসি হিসেবে আমরা আমদানির ওপর যে উচ্চহারে শুল্ক আরোপ করতে পারতাম, তা আর সম্ভব হবে না। আমাদের ট্যারিফ নীতি সংস্কার করে শুল্ক কমাতে হবে, নইলে প্রতিযোগী দেশগুলো আমাদের বিরুদ্ধে ডব্লিউটিওতে মামলা করতে পারে। এর জন্য একটি ‘মসৃণ উত্তরণ কৌশল’ বা ‘Smooth Transition Strategy’ প্রণয়ন করতে হবে, যেখানে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুল্কহার যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা থাকবে।

অনেকেই এলডিসি উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এ দাবিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

ড. জাহিদ হোসেন: এলডিসি উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়টি সরকারের হাতে নেই। তা ছাড়া এটি হবে ‘সময় ধার করা’, ‘সময় কেনা’ নয়। পিছিয়ে দেওয়ার অর্থ হলো, যে সংস্কারগুলো আমাদের দ্রুত করা প্রয়োজন, সেগুলো আমরা আরও দেরিতে করব, যার একটি অর্থনৈতিক মূল্য আছে।

তা ছাড়া সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য যোগ্য। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার পরেও আমাদের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে, কৃষিতে উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে। সুতরাং, অর্থনীতি স্থবির হয়ে গেছে—এমন যুক্তি দেখিয়ে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করলে তা আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচকভাবে গৃহীত হবে বলে আমার মনে হয় না।

আপনি ‘মধ্যম আয়ের ফাঁদ’-এর কথা বলেছেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর সবচেয়ে বড় উপসর্গ কী এবং এটি কেন এত বেশি উদ্বেগের কারণ?

ড. জাহিদ হোসেন: মধ্যম আয়ের ফাঁদের অনেক উপসর্গ থাকলেও বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় এবং স্পষ্ট উপসর্গ হলো শ্রমবাজারে কর্মসংস্থান সংকট। ২০১৬ সালের পর থেকে এ খাতে এক ধরনের স্থবিরতা চলছে। ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে উৎপাদন খাতে নারী কর্মসংস্থান বাড়ার বদলে উল্টো কমে গেছে। অন্যদিকে, শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বরাবরই বেশি ছিল, যা সম্প্রতি আরও বাড়ছে। এ সংকটকে দুটি দিক থেকে বিশ্লেষণ করা যায়—চাহিদার দিক ও জোগানের দিক।

কর্মসংস্থান সংকটের ‘চাহিদার দিক’ বলতে আপনি কী বোঝাচ্ছেন? আমাদের শিল্প খাত কেন যথেষ্ট পরিমাণে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারছে না?

ড. জাহিদ হোসেন: ‘চাহিদার দিক’ থেকে এর সমস্যা হলো, আমাদের শিল্প খাত প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মসংস্থান তৈরিতে ব্যর্থ হচ্ছে। শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি হলেও তা কর্মসংস্থানবান্ধব নয়। এর মূল কারণ আমাদের নীতিমালা। আমাদের নীতিতে একটি ‘রপ্তানিবিরোধী পক্ষপাত’ রয়েছে। আমরা বরাবরই উচ্চ শুল্ক দিয়ে দেশীয় বাজারমুখী শিল্পকে সুরক্ষা দিয়ে এসেছি।

যেমন—ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি), মোবাইল ফোন অ্যাসেমব্লি বা মোটরসাইকেল শিল্পের মতো খাতগুলো এ সুরক্ষার কারণে বিকশিত হয়েছে। কিন্তু এগুলো সবই ‘মূলধন-নিবিড়’ শিল্প। অর্থাৎ এসব শিল্পে প্রচুর বিনিয়োগ লাগলেও খুব কম শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে, পোশাক বা জুতা শিল্পের মতো ‘শ্রম-নিবিড়’ এবং রপ্তানিমুখী খাতগুলো নীতিগতভাবে ততটা উৎসাহ পায়নি। ফলে কর্মসংস্থান তৈরির চাহিদাটাই দুর্বল রয়ে গেছে।

আপনি জোগানের দিককে আরও বড় সমস্যা বলে মনে করছেন। এ সংকটটি ঠিক কী এবং এর মূল কারণ কোথায়?

ড. জাহিদ হোসেন: আমি বলব, জোগানের সমস্যাটি আরও গভীর ও জটিল। এর অর্থ হলো, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি জোগান দিতে পারছে না। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় এ নিয়ে অনেক প্রতিবেদন আসছে। যেমন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেই বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি। ইতিহাস, বাংলা বা সমাজবিজ্ঞানের মতো বিষয়ে মাস্টার্স করেও একজন শিক্ষার্থী বছরের পর বছর চাকরি পাচ্ছে না।

এই সমস্যার দুটি স্তর রয়েছে:

১. দক্ষতার অসামঞ্জস্য: আমরা এমন সব বিষয়ে স্নাতক তৈরি করছি, যেগুলোর বাজারে চাহিদা কম। ফলে ভালো ফল করেও তারা চাকরি পাচ্ছে না।

২. শিক্ষার গুণগত মানের সংকট: এটি আরও ভয়াবহ। ধরা যাক, বাংলা বিষয়েই বাজারে চাহিদা আছে, কিন্তু একজন বাংলা স্নাতককে দিয়ে হয়তো একটি শুদ্ধ চিঠিও লেখানো যাচ্ছে না। অর্থাৎ শিক্ষার মান এতই দুর্বল যে, শিক্ষার্থীরা নিজ বিষয়েও পারদর্শী হয়ে উঠছে না। এর মূল প্রোথিত আমাদের ভিত্তিগত শিক্ষায়। একজন শিক্ষার্থী যদি প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্তরেই ভালোভাবে যোগ-বিয়োগ বা একটি ফরম পূরণ করার মতো দক্ষতা অর্জন করতে না পারে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গিয়ে তার ভিত্তি দুর্বল থাকবেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হয়, তারা প্রায়ই অন্য কোথাও সুযোগ না পেয়ে শেষ বিকল্প হিসেবে আসে। অর্থাৎ সংকটটা শুরু হচ্ছে একেবারে গোড়া থেকে।

এই গভীর সংকট থেকে উত্তরণের পথ কী? এর কোনো স্বল্পমেয়াদি সমাধান কি সম্ভব?

ড. জাহিদ হোসেন: এর কোনো দ্রুত বা স্বল্পমেয়াদি সমাধান পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। আমাদের দুই ধরনের জনগোষ্ঠীর জন্য দুই ধরনের কৌশল নিতে হবে:

১. যারা এরই মধ্যে বেকার: দেশে প্রায় চার-পাঁচ কোটি কর্মক্ষম মানুষ রয়েছে, যারা এ ব্যবস্থার শিকার। তাদের জন্য কিছু উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—ইউসেপ একটি সফল মডেল দেখিয়েছে। তারা সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের প্রথমে ১০ মাসের একটি ‘প্রতিকারমূলক’ মৌলিক শিক্ষা দেয় এবং এরপর শিল্পের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে। তাদের স্নাতকদের মধ্যে বেকারত্বের হার খুবই কম। এ ছাড়া বর্তমান সরকার জাপানে কর্মী পাঠানোর জন্য ভাষা প্রশিক্ষণের যে উদ্যোগ নিয়েছে, সে ধরনের পদক্ষেপ বাড়াতে হবে।

২. ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করা: নতুন করে যাতে এ বেকার বাহিনীতে কেউ যোগ না হয়, তার জন্য আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

অর্থাৎ একদিকে যেমন যারা এরই মধ্যে বেকার হয়ে গেছেন, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে পুরো শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তিকেই শক্তিশালী করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাগেরহাটে কলেজ ছাত্রদল সভাপতির ওপর হামলা

ঘাস চিবিয়ে মাঠ ‘অনুভব’ করতেন রোনালদো!

মালয়েশিয়ায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

৭ লাখ বছর পর জেগে উঠছে ইরানের তাফতান আগ্নেয়গিরি!

শিক্ষক নিয়োগে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি কবে, জানাল এনটিআরসিএ

গণভোট নিয়ে গড়িমসি করছে সরকার : জামায়াত

চেতনা চাপিয়ে দেওয়ার রাজনীতি বাংলাদেশে আর হবে না : শিবির সভাপতি

ইলিশ রক্ষা অভিযানে জেলেদের হামলা, কোস্টগার্ডের গুলি

গুগলে কম সময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য জানার ৫ কার্যকর কৌশল

রোনালদোর ‘হাজার গোল’ ছোঁয়ার ভবিষ্যদ্বাণী এআই-এর!

১০

চট্টগ্রাম বন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মবিরতি

১১

অনুমতি ছাড়াই নারীর ছবি অনলাইনে পোস্ট, সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা

১২

যোগদান করছেন চট্টগ্রামের নতুন ডিসি সাইফুল ইসলাম

১৩

একসঙ্গে বেড়ে ওঠা, বিদেশে কাজ ও মৃত্যুর পরও পাশাপাশি দাফন

১৪

বানার নদীর স্রোতে ভেসে গিয়ে দুই নারীর মৃত্যু

১৫

আ.লীগ নেতা হাসানাত আব্দুল্লাহর নামে মামলা

১৬

স্মার্টফোনে থাকা সব ছবি গোপনে দেখবে ফেসবুক, কীভাবে

১৭

নর্থ সাউথের সেই শিক্ষার্থীর দোষ স্বীকার

১৮

ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির দাবিতে নয়াপল্টনে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ

১৯

জাপানের এনইএফ বৃত্তি পেল বাংলাদেশের ২০ শিক্ষার্থী

২০
X