হোসনে আরা বিউটি
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জলের নহর  

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

কোথায় বিয়ে দিলে বাবা?

পাত্রের বাড়িতে দুটো গুরুজনকে পাঠাতে,

তাদের অভিজ্ঞ চোখে ধরা পড়তো

শাশুড়ির লোভাতুর চোখ,

তারা দেখতে পেতেন বাবার বাড়ি পড়ে থাকা

ননদের কথার তেজে পড়শীরাও নাজেহাল।

আমি তো পরের বাড়ির মেয়ে

খাবারে ভাগ বসালে কুত্তাগুলো ও কামড় বসায়

তাহলে এরা কি আমায় ছেড়ে দেয়?

বাবা আমি কি তোমার এতটাই বোঝা ছিলাম?

দুটো ঘর যাচাই না করে বিয়ে দিলে,

তোমার ঘরে রাজকন্যা ছিলাম

হোক তোমার কুঁড়েঘর, সব বাবার কাছে তার মেয়ে রাজকন্যা।

কত অভাবে থেকেছো

যখন যা চেয়েছি তাই পেয়েছি, বুঝতে দাওনি।

তোমার আদরের ধন পরের বাড়ির ঘুটি কুড়ানি,

অসুখে মেলে না ওষুধ।

বৈভবের বেদনায় নীল এখানকার আকাশ।

জানি বাবা, অভাব যেন আমায় ছুঁতে না পারে

মোটা কাপড় মোটা ভাতে জীবন কেটে যায়

তার জন্য গেরস্ত ঘরে পাঠিয়েছ।

জীবনজুড়ে শুধুই অভাব এখানে,

ভালোবাসার অভাবে হৃদয়ে হাহাকার

সম্মানের অভাবে অসম্মানের সাথে বসবাস

অভাবের আকাশে চাঁদের আলোটা ও ক্ষীণ।

মনের অভাবে মরেছে মন,

কোথায় বিয়ে দিলে বাবা?

শ্বশুর তোমায় কটু কথা বললে

সে ঘরে আমার ঘুম আসে না।

যার হাতে আমায় তুলে দিয়েছো

এত ভালো মানুষ আমার ভালো লাগে না,

যেন নিরুত্তাপ চায়ে চুমুক দেয়া,

শুধু মাঝে মধ্যে কাঁসার থালার মতো

ঝনঝনিয়ে ওঠে নালিশের বহর বাড়লে।

মানুষটার পোষা গাড়িটার ওপর

যতটুকু দরদ, তার সিকি ভাগও যদি

পেতাম তবে জীবনকে আগলে রাখতাম।

এক বিন্দু ভালোবাসা পেলেও

জোছনার আলোতে গেঁথে দিতাম

বিনি সুতোর মালা।

মনকে উড়িয়ে দিতাম সাদা মেঘের ভেলায়।

এমন তো আমি চায়নি

না পাওয়ার অনুযোগ আমার নেই।

তবু কেন মিষ্টি করে কখনো বলেনি

আমি তোমাকে সুগন্ধি তেল এনে দিতে না

পারলেও চিরুনির আঁচড়ে সুবিন্যস্ত করে

দিতে পারবো তোমার ভ্রমর কালো চুল।

কখনো হাত দুটো ধরে বলেনি,

তোমার লাবণ্যতা, এলোমেলো, তোমার অসুন্দরকে ও আমি ভালোবাসি।

যার মন অন্য মনে বাধা

তাকে তো চায়নি আমি।

তাকেই তো চেয়েছিলাম

ঘুমের ঘোরে ও তাকে ঘিরে থাকে

আমার ঘ্রাণ।

এমন জীবনে কেন বেঁধে দিলে আমার জীবন?

যার হাত ধরে বৃষ্টিতে ভেজা হলো না

শরতের জোছনা মাড়িয়ে ছাতিম ফুল

কুড়ানোর বাহানায়,

স্পর্শের আগুনে জ্বললো না জীবন।

বাবা বীরেন কাকাকে পথে পেয়ে তোমাকে

আসতে বললাম, আলুথালু বেশে দেখে কাকা

খুব কেঁদেছিল, তুমি শুনে মন খারাপ করো না।

ঘর ভরে দিতে পারোনি বলে এখানে তোমার কোনো কদর নেই।

তবুও একদিন এসে দেখে যেও

একা না পারলেও এসো

ছমির চাচাকে ধরে ঘোর ঘোর থকতে রওনা দিও

আমায় দেখে আবার বাড়িতে ফিরে খেয়ো,

না হলে আমার উপবাসে

তোমার চোখে জলের নহর বইবে অবিরত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শনিবার রাজধানীর যেসব এলাকায় যাবেন না

১ জুন : ইতিহাসের এই দিনে আলোচিত যত ঘটনা

১ জুন : নামাজের সময়সূচি

‌মোটরসাই‌কেল কি‌নে বা‌ড়ি ফেরা হ‌লো না হাসাবু‌লের

সিরাজগঞ্জে ট্রাকচাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত

ইউপি সদস্যের ভাইকে কুপিয়ে হত্যা

মোহাম্মদপুরে আবাসিক ভবনে আগুন, দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে

এমপি আনার হত্যা / তদন্তে এবার নেপাল যাচ্ছেন ডিবিপ্রধান হারুন

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের বিশেষ ট্রেন আবারও চলবে

এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো নিয়ে যা জানা গেল 

১০

শেষ হলো ১৬তম শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব

১১

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে স্বেচ্ছাসেবক লীগ

১২

দাফনের ১৫ বছর পরও অক্ষত মরদেহ

১৩

বিদ্যুৎস্পর্শে ব্যবসায়ীর মৃত্যু

১৪

ভোট নিয়ে অভিযোগ, প্রতিকার চাইলেন আ.লীগ নেতা

১৫

মিয়ানমারের ৮৬ শতাংশ শহর বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে

১৬

এক ইলিশ বিক্রি হলো ৭ হাজারে

১৭

এবার টানা ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস

১৮

দাম বৃদ্ধির খবরে তেল সরবরাহ বন্ধ

১৯

অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে : পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

২০
X