বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২
হোসনে আরা বিউটি
প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪২ পিএম
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জলের নহর  

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

কোথায় বিয়ে দিলে বাবা?

পাত্রের বাড়িতে দুটো গুরুজনকে পাঠাতে,

তাদের অভিজ্ঞ চোখে ধরা পড়তো

শাশুড়ির লোভাতুর চোখ,

তারা দেখতে পেতেন বাবার বাড়ি পড়ে থাকা

ননদের কথার তেজে পড়শীরাও নাজেহাল।

আমি তো পরের বাড়ির মেয়ে

খাবারে ভাগ বসালে কুত্তাগুলো ও কামড় বসায়

তাহলে এরা কি আমায় ছেড়ে দেয়?

###

বাবা আমি কি তোমার এতটাই বোঝা ছিলাম?

দুটো ঘর যাচাই না করে বিয়ে দিলে,

তোমার ঘরে রাজকন্যা ছিলাম

হোক তোমার কুঁড়েঘর, সব বাবার কাছে তার মেয়ে রাজকন্যা।

কত অভাবে থেকেছো

যখন যা চেয়েছি তাই পেয়েছি, বুঝতে দাওনি।

###

তোমার আদরের ধন পরের বাড়ির ঘুটি কুড়ানি,

অসুখে মেলে না ওষুধ।

বৈভবের বেদনায় নীল এখানকার আকাশ।

জানি বাবা, অভাব যেন আমায় ছুঁতে না পারে

মোটা কাপড় মোটা ভাতে জীবন কেটে যায়

তার জন্য গেরস্ত ঘরে পাঠিয়েছ।

###

জীবনজুড়ে শুধুই অভাব এখানে,

ভালোবাসার অভাবে হৃদয়ে হাহাকার

সম্মানের অভাবে অসম্মানের সাথে বসবাস

অভাবের আকাশে চাঁদের আলোটা ও ক্ষীণ।

মনের অভাবে মরেছে মন,

###

কোথায় বিয়ে দিলে বাবা?

শ্বশুর তোমায় কটু কথা বললে

সে ঘরে আমার ঘুম আসে না।

###

যার হাতে আমায় তুলে দিয়েছো

এত ভালো মানুষ আমার ভালো লাগে না,

যেন নিরুত্তাপ চায়ে চুমুক দেয়া,

শুধু মাঝে মধ্যে কাঁসার থালার মতো

ঝনঝনিয়ে ওঠে নালিশের বহর বাড়লে।

###

মানুষটার পোষা গাড়িটার ওপর

যতটুকু দরদ, তার সিকি ভাগও যদি

পেতাম তবে জীবনকে আগলে রাখতাম।

এক বিন্দু ভালোবাসা পেলেও

জোছনার আলোতে গেঁথে দিতাম

বিনি সুতোর মালা।

মনকে উড়িয়ে দিতাম সাদা মেঘের ভেলায়।

###

এমন তো আমি চায়নি

না পাওয়ার অনুযোগ আমার নেই।

তবু কেন মিষ্টি করে কখনো বলেনি

আমি তোমাকে সুগন্ধি তেল এনে দিতে না

পারলেও চিরুনির আঁচড়ে সুবিন্যস্ত করে

দিতে পারবো তোমার ভ্রমর কালো চুল।

কখনো হাত দুটো ধরে বলেনি,

তোমার লাবণ্যতা, এলোমেলো, তোমার অসুন্দরকে ও আমি ভালোবাসি।

###

যার মন অন্য মনে বাধা

তাকে তো চায়নি আমি।

তাকেই তো চেয়েছিলাম

ঘুমের ঘোরে ও তাকে ঘিরে থাকে

আমার ঘ্রাণ।

###

এমন জীবনে কেন বেঁধে দিলে আমার জীবন?

যার হাত ধরে বৃষ্টিতে ভেজা হলো না

শরতের জোছনা মাড়িয়ে ছাতিম ফুল

কুড়ানোর বাহানায়,

স্পর্শের আগুনে জ্বললো না জীবন।

###

বাবা বীরেন কাকাকে পথে পেয়ে তোমাকে

আসতে বললাম, আলুথালু বেশে দেখে কাকা

খুব কেঁদেছিল, তুমি শুনে মন খারাপ করো না।

ঘর ভরে দিতে পারোনি বলে এখানে তোমার কোনো কদর নেই।

তবুও একদিন এসে দেখে যেও

একা না পারলেও এসো

ছমির চাচাকে ধরে ঘোর ঘোর থকতে রওনা দিও

আমায় দেখে আবার বাড়িতে ফিরে খেয়ো,

না হলে আমার উপবাসে

তোমার চোখে জলের নহর বইবে অবিরত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ

নৌবাহিনী থামাল মিয়ানমারে সিমেন্ট পাচার

আবাসিক হোটেল থেকে নারী পর্যটকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ফয়সালের জামিন বিতর্ক নিয়ে আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস

‘কোনো এক মিরাকেলের মধ্যে দিয়ে ফিরে আসেন ব্রাদার’

মানবপাচার মোকাবিলায় ভুক্তভোগী কেন্দ্রিক আইনজীবী গড়ে তোলার আহ্বান

লস অ্যাঞ্জেলেস কনস্যুলেটে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা

সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

রিজার্ভ বেড়ে ৩২.৪৮ বিলিয়ন ডলার

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা গড়ার অঙ্গীকার শেখ আব্দুল্লাহর

১০

হাদির বিষয়ে ড. ইউনূসকে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোন

১১

অবশেষে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার

১২

দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

১৩

পে স্কেল নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে যে সিদ্ধান্ত নিল কমিশন

১৪

গাড়ির গ্যারেজে ঝুলছিল চালকের মরদেহ

১৫

হাদির অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন

১৬

কাউকে ভোট দেওয়া ফরজ নয়, ইমান নিয়ে মরা ফরজ : ছারছীনা পীর

১৭

ফিফা দ্য বেস্টে কাকে বেছে নিলেন মেসি?

১৮

ভারত আ.লীগের ৩০ হাজার সন্ত্রাসী পালছে : হাসনাত

১৯

বিশ্বকাপে রেকর্ড প্রাইজমানি ঘোষণা ফিফার

২০
X