জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. অভ্র দাস ভৌমিকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচি পালনকারীদের অভিযোগ, ডা. অভ্র দাস ভৌমিক বিগত স্বৈরশাসনের অন্যতম দোসর হিসেবে কাজ করেছেন।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক হিসাবে পদায়ন করা হয়। বিগত বছরগুলোর দুর্নীতি তদন্তের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাকে। ক্ষমতায় না থাকা সত্ত্বেও ফ্যাসিবাদী সহায়ক শক্তি ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরকে ১০ দিনও টিকতে দেয়নি। গত ২ সেপ্টেম্বর তাকে ওএসডি করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবির একাধিক বিদেশি মেডিকেল ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং প্রফেসর ও কনসালট্যান্ট সাইকিয়াট্রিস্ট। এমনকি বর্তমান পরিচালক ডা. অভ্র দাস ভৌমিক নিজেও এক সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মানসিক রোগ বিভাগে তার ‘সহকারী রেজিস্ট্রার’ হিসেবে কাজ করেছেন।
বিগত স্বৈরাচারী সরকারের রোষাণলে ডা. সফিকুল কবির এখনো সহযোগী অধ্যাপক হিসাবেই থেকে গেছেন। অথচ ডা. অভ্র দাস ভৌমিকসহ ৫ জন চিকিৎসক অনেক জুনিয়র হওয়া সত্ত্বেও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান, যা জ্যেষ্ঠতা নীতিমালার সম্পূর্ণ পরিপন্থি বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
এ অবস্থায় অবিলম্বে পরিচালক পদ থেকে ডা. অভ্র দাস ভৌমিকের পদত্যাগ এবং ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরকে দ্রুত পুনর্বহালের দাবি জানান মানববন্ধনকারীরা। একই সাথে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচারসহ সব ধরনের বৈষম্যের দ্রুত অবসান ঘটুক, এমন প্রত্যাশা করছেন তারা।
ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবির স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন। তিনি কালবেলাকে জানান, অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে আসছে অন্যায়ভাবে বৈষ্যম্যের শিকার চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আন্দোলনের কারণে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা যেন কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখছেন তারা।
আন্দোলনের অন্যতম সহযোগী সাবেক সহকারী অধ্যাপক ডা. আতিকুল হক মজুমদার জানান, বিগত সরকারের শাসনামলে বৈষম্যের কারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে তিনি ফিনল্যান্ডে চলে যান। সেখানে তিনি উচ্চতর ডিগ্রি নেন। কিন্তু এই অনুপস্থিতির সুযোগে প্রাপ্য পদন্নোতি থেকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বঞ্চিত করে তাকে ওএসডি করে রাখা হয়। ফলে ওনার চাকরি অনিয়মিত হয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে পিএইচডি সমাপ্ত করে দেশে ফেরার পর অনেক চেষ্টা করেও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ মহলের কাছ থেকেও চাকরি নিয়মিতকরণের এবং ভুতাপেক্ষ পদোন্নতিসহ পদায়নের ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা পাননি। উল্টো তিরস্কার ও লাঞ্ছনা পেয়েছেন। এমনকি চাকরি ছেড়ে দিতেও তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়।
মন্তব্য করুন