আসন্ন বাজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের নাকচের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী এবং অর্থ সচিব বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এ ছাড়া, ভাতার পরিমাণ ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি আদায় না হলে অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের হুমকিও দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (২৮ মে) মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন স্বাক্ষরিত এই স্মারকলিপিটি সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ নূর আলম সরদার অর্থ মন্ত্রী ও অর্থ সচিবের দপ্তরে পৌঁছে দেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আগামী বাজেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাব নাকচ হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে এ ধরনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির শাসনামলে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের আচরণ কখনোই মেনে নিবে না মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। যাদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে এ দেশের লাল-সবুজের পতাকা অর্জিত হয়েছে তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কারা বাঁধা সৃষ্টি করেছে তাদের চিহ্নিত করে জাতির সামনে মুখোশ উন্মোচন করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় জায়গায় বরাদ্দ ও অপচয় হচ্ছে। এটা নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। বিভিন্ন সময় আমরা দেখি কমিশন বাণিজ্যের কারণে অনেক দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটের প্রস্তাব নাকচ হয় না। শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের জন্য সামান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিলেই সেক্ষেত্রে নানাবিধ ষড়যন্ত্র ও বাধা সৃষ্টি করে প্রস্তাব নাকচ করা হচ্ছে। যাদের জীবন ও ত্যাগের কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা বর্তমান বাজারে কিছুই নয়। প্রতি মাসে সামান্য ২০ হাজার টাকা দিয়ে তাদের পরিবার চালানো ও চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব। লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সামান্য কিছু বরাদ্দ করা হয় যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, আগামী বাজেটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি করে কমপক্ষে মাসিক ৫০ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা ঘোষণা করতে হবে। পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা সমহারে বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সুচিকিৎসা পাচ্ছেন না এবং বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিনামূল্যে শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সব ধরনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশেষায়িত হাসপাতাল’ নির্মাণের লক্ষ্যে আগামী বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। অন্যথায়, বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে অর্থ মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ রাজপথে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
মন্তব্য করুন