বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ), চট্টগ্রাম নগরের মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজার বহিষ্কারাদেশ সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের নিয়ম বহির্ভূত বলে দাবি করে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী সাত দিনের মধ্যে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারপূর্বক সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ওই প্রত্যাহার আদেশ প্রচার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
রোববার (১৮ মে) মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজার পক্ষে জজ কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক আরিফ মঈন উদ্দীন ও চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সচিব নিজাম উদ্দীন বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন।
শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বৈছাআ নগর কমিটির আহ্বায়ক আরিফ মঈনুদ্দিন ও সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বহিষ্কারাদেশে জানানো হয়, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজার মাদক সেবন এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ছবি/ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রায় ১৪০০ শহীদ ও অর্ধলক্ষ আহতদের ওপর দাঁড়ানো এই প্ল্যাটফর্মের একজন সদস্যের এমন অনিয়ন্ত্রিত ও অসামাজিক কার্যকলাপ জনমনে প্রশ্ন তৈরি করেছে। তাই ফাতেমা খানম লিজাকে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির মুখপাত্র পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
বহিষ্কারের পর তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণে দুই ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন মুখপাত্র ফাতেমা খানম লিজা। এ সময়ের মধ্যে মাদক সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করতে না পারলে নগর কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানান তিনি।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়েছে, বহিষ্কারাদেশে লিজার বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও অসামাজিক জীবনযাপনের যে অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে তৎ সমর্থনে কোনো প্রমাণাদি উপস্থাপন করেন নাই। যা বর্তমানে চরিত্র হরণের শামিল এবং বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আইনে অপরাধের শামিল। এবং উক্ত বহিষ্কারাদেশের বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনা না করে প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী। এছাড়া দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কোনো নোটিশ প্রদান না করে বা কারণ দর্শানোর কোনো নোটিশ না দিয়ে সংগঠনের আইন পরিপন্থিভাবে বহিষ্কারাদেশ প্রদান করেছেন। এমতাবস্থায় সাত দিনের মধ্যে লিজার বিরুদ্ধে সংগঠনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারপূর্বক সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় উক্ত প্রত্যাহার আদেশ প্রচার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় মুখপাত্র তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন।
এ বিষয়ে আইনজীবী মো. মঞ্জুরুল হক কালবেলাকে বলেন, বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক আরিফ মঈন উদ্দীন ও চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সচিব নিজাম উদ্দীন সংগঠনের প্যাড ব্যবহার করে ফাতেমা খানম লিজাকে বহিষ্কারাদেশ চিঠি দেয়। তাতে ব্যক্তিগত কারণ দেখানো হয়েছে। কিন্তু সংগঠনের প্যাড ব্যবহার করে ব্যক্তিগত কারণ দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া লিজার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করতে পারতো। কিন্তু এসবের কোনো কিছু করা হয়নি। এছাড়া লিজার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনো প্রমাণাদি তারা উপস্থাপন করেননি।
মন্তব্য করুন