মিরসরাইয়ের খৈইয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় মো. ফয়সাল (২৫) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের ঝরনা মুখে অবস্থিত কাঁঠাল বাগান আবদুস সালাম তালুকদার হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় হামলায় সাংবাদিক শিমুল জাবালি (৩২), তার স্ত্রী লুফাইয়্যা শাম্মী (২৭), শ্যালিকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াক্বিয়াহ শাম্মী (২১), নাবিহা শাম্মী (১৫) আহত হন।
হামলায় জড়িত মো. ফয়সাল (২৫) নামে একজনকে মিরসরাই থানা পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। তিনি খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের পূর্ব খৈইয়াছড়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক শিমুল জাবালি বাদী হয়ে মিরসরাই থানায় মো. ফয়সাল ও সুমনের নাম উল্লেখ করে বুধবার দিনগত রাতে অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সুমন পূর্ব খৈইয়াছড়া এলাকার তাজুফকির গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে খৈইয়াছড়া ঝরনা দেখতে ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে আসেন দৈনিক ইত্তেফাকের ঢাকায় অনলাইন বিভাগে কর্মরত সাংবাদিক শিমুল জাবালি। এসময় তার স্ত্রী লুফাইয়্যা শাম্মী, শ্যালিকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াক্বিয়াহ শাম্মী, নাবিহা শাম্মী সঙ্গে ছিল।
সাংবাদিক শিমুল জাবালি বলেন, দুপুরে ঝরনায় যাওয়ার সময় কাঁঠাল বাগান আবদুস সালাম তালুকদার হোটেল এলাকায় ফয়সাল থেকে আমরা ৩টি বাঁশ ভাড়া নিই ৩০ টাকা দিয়ে। যাওয়ার সময় বাঁশ ফেরত দিলে ১৫ টাকা ফেরত দিবে বলেন ফয়সাল। পরে আমরা বিকেল ৫টায় ঝরনা দেখে ফেরার সময় বাঁশ ৩টি ফেরত দিয়ে ১৫ টাকা ফেরত চাই। এসময় ফয়সাল বলে আমি দোকান বন্ধ করে ফেলেছি টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না। এসময় আমরা বাঁশ নিয়ে চলে যেতে চাইলে ফয়সাল, সুমনসহ ৫ থেকে ছয়জন আমাদের ওপর হামলা করে। এসময় বাঁধা দিলে আমার স্ত্রী ও শ্যালিকাদের ওপর তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে হামলা করে এবং শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। আমার স্ত্রীর গায়ে একাধিক চড়থাপ্পড় দিয়ে গলা চিপে হত্যার চেষ্টা করে ও আমার ওপর বাঁশ দিয়ে আঘাত করে। পরে পুলিশকে ফোন করলে ঘটনাস্থল থেকে ফয়সাল নামে একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
লুফাইয়্যা শাম্মী জানান, খৈইয়াছড়া ঝরনার সৌন্দর্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে অভিভূত হয়ে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসি। কিন্তু ঝরনার মুখে বাঁশ বিক্রির নামে কিছু বখাটের কর্মকাণ্ড দেখে আমরা হতবাক হয়ে যায়। তারা আমাদের হত্যার উদ্দেশে হামলা করে। মেরে মরদেহ পাহাড়ে ফেলে দেবে কেউ টেরও পাবে না বলে হুমকি দেয়। সুমন ও ফয়সালসহ ৫ থেকে ৬ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী আমার স্বামী ও বোনদের ওপর হামলা করে এবং শ্লীলতাহানীর চেষ্টা করে। আমার গলায় অপারেশন হয়েছিল। তারা আমার গলা চেপে ধরে মুখে চড়থাপ্পড় দেয়। আমি পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে হামলায় জড়িত সকল অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মিরসরাই থানার ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, খৈইয়াছড়া ঝরনা এলাকায় পর্যটকদের ওপর হামলা ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ফয়সাল নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন