চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার হাঈদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি দে হামলার শিকার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে পৌর এলাকার বিওসি রোডে তার ওপর হামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্যামল দে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে স্কুলে যাচ্ছিলেন। পথে ওঁৎ পেতে থাকা মুখোশ পরা ছয়-সাতজন সন্ত্রাসী অটোরিকশা থামিয়ে তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক পেটায়। হামলাকারীদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন।
এ সময় তার সঙ্গে থাকা দুই শিক্ষক স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করে স্কুলে নিয়ে যান। পরে তাকে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এদিকে, ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হামলার প্রতিবাদে স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
হামলায় আহত শিক্ষক শ্যামল দে সাংবাদিকদের বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি নিয়োগ কেন্দ্র করে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এর জেরে আগেও তারা একাধিকবার আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এ নিয়ে থানায় দুটি জিডিও করেছি।
পটিয়া থানার ওসি নুরুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, শিক্ষকের ওপর হামলার বিষয়টি জেনেছি। হামলাকারীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ করছে।
এদিকে, শিক্ষক শ্যামল কান্তি দের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং বিচার চেয়ে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছেন হাইদগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। হামলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। গতকাল দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক তানিয়া ইয়াছমিন বলেন, হামলাকারীরা অশালীন ভাষায় গালমন্দ করে প্রধান শিক্ষক কেন জিডি করেছেন, তা জানতে চায়। তারা তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমাদের চিৎকার শুনে সাধারণ মানুষ এগিয়ে এলে হামলাকারীরা চলে যায়। পরে আমরা প্রধান শিক্ষককে নিয়ে স্কুলে যাই।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মুমিনুল হক, আব্দুল মান্নান, জাহেদা সুলতানা, তানিয়া ইয়াছিন, স্বপ্না দত্ত, সুরঞ্জিত চক্রবর্তী, মো. মহিউদ্দিন, শহীদুজ্জামান, মৌলানা জসিম উদ্দীন, প্রান্ত বড়ুয়া চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন