ম্যাক্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সফলভাবে আয়োজন করেছে ‘এন্টারপ্রেনার-লেড ইমপ্যাক্ট : ন্যাশনাল ওয়ার্কশপ অ্যান্ড মাল্টিস্টেকহোল্ডার ডায়ালগ’।
মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর লেকশোর গ্র্যান্ড হোটেলের লা ভিটা হলে ‘একটি সুস্থ বাংলাদেশ গড়তে উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
দিনব্যাপী এ আয়োজনের মাধ্যমে ১২০ জনেরও বেশি নীতি-নির্ধারক, দাতা সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, সরকারি প্রতিনিধি, করপোরেট ও উদ্যোক্তা সহায়ক প্রতিষ্ঠান এবং খুলনা, পটুয়াখালী ও লালমনিরহাটের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ হলেও প্রায়ই অদেখা থেকে যান। দেশে বর্তমানে ১ কোটিরও বেশি সিএমএসএমই (কটেজ, মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) রয়েছে, যা দেশের জিডিপির প্রায় ২৫ শতাংশ জোগান দেয় এবং ৩ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। গ্রামীণ ও শহরতলির জীবিকার মূল ভরসা হয়ে আছে এই খাত।
বিশেষ করে ওয়াশ (পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন), খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং মাতৃ ও কিশোরী স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা শেষ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি সমাধান, পুষ্টিকর খাদ্য এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেন। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন জীবিকা সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক কল্যাণে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
ওয়ার্কশপে প্রদর্শিত হয় উদ্যোক্তাদের সাফল্যের গল্প ও উদ্ভাবন। এতে ছিল Ignite Talks, Co-Creation Lab এবং দুটি উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনা। এতে উদ্যোক্তারা ও অংশীদাররা একসাথে কাজ করে উদ্যোক্তা প্রতিবন্ধকতা যেমন— অর্থায়নে জটিলতা, বাজার সংযোগের দুর্বলতা ইত্যাদি চিহ্নিত করেন এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করেন।
ম্যাক্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, এই কর্মশালা সহযোগিতার শক্তিকে সামনে এনেছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের নীতি-নির্ধারক, ব্যাংক, করপোরেট ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে যুক্ত করে আমরা এমন একটি শক্তিশালী পরিবেশ তৈরি করছি, যা উদ্যোক্তাদের আয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য খাতে প্রভাব রাখতে সহায়তা করবে।
সংলাপ শেষে বিভিন্ন অংশীদাররা যৌথ প্রতিশ্রুতি দেন— ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহজতর অর্থায়ন, শক্তিশালী বাজার সংযোগ এবং টেকসই ব্যবসা মডেল তৈরিতে সহযোগিতা করা হবে। এ কর্মশালা থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে ম্যাক্স ফাউন্ডেশনের নীতি-অ্যাডভোকেসি ও কার্যক্রমে দিকনির্দেশনা দেবে। এর ফলে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা আরও বেশি সহায়তা পাবেন এবং একটি সুস্থ, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠনে অবদান রাখবেন।
উল্লেখ, ম্যাক্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ বৈশ্বিক ম্যাক্স ফাউন্ডেশন নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে কাজ করে। শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রমাণভিত্তিক, কমিউনিটিকেন্দ্রিক ও উদ্যোক্তানির্ভর সমাধান বাস্তবায়ন করে আসছে ২০০৫ সাল থেকে। সংস্থাটি ওয়াশ, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং মাতৃ ও কিশোরী স্বাস্থ্য খাতে একীভূত কর্মসূচি পরিচালনা করে। প্রমাণনির্ভরতা, সিস্টেম উন্নয়ন এবং বাজারভিত্তিক পদ্ধতির মাধ্যমে ম্যাক্স ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ টেকসই ও সম্প্রসারণযোগ্য প্রভাব তৈরি করছে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য।
মন্তব্য করুন