সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:১৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বাণিজ্যিকভাবে মেহেদি চাষে ভাগ্য বদলেছে অনেকের

মেহেদি পাতা কেটে নিয়ে যান কৃষকরা। ছবি : কালবেলা
মেহেদি পাতা কেটে নিয়ে যান কৃষকরা। ছবি : কালবেলা

মেহেদি পাতার নাম শুনলেই যেন একটা উৎসব উৎসব আমেজ চোখে ভেসে ওঠে। মেহেদিতে হাত রাঙানো ছাড়া বাঙালি নারীদের কোনো উৎসবই যেন পূর্ণতা পায় না। ধর্মীয় উৎসব বিয়ে-শাদিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেহেদির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে।

ইদানিং টিউব মেহেদি ব্যবহারে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করছেন। বেশিরভাগ মেহেদি ব্যবহারকারীরা এখন অর্গানিক মেহেদি পাতার ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন। চাষকৃত এসব অর্গানিক মেহেদি পাতা বান্ডিল আকারে এখন মিলছে বিভিন্ন নামিদামি সুপার শপগুলোতেও।

বাণিজ্যিকভাবে এই মেহেদি উৎপাদনে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে সাভারের ভকুর্তা এলাকার একটি গ্রামে। প্রায় ২০০ বিঘা জমিতে করা হয়েছে মেহেদি পাতার চাষ। ঢাকার অদূরে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের শ্যামলাসি বাহেরচর গ্রাম। গ্রামটির বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয় মেহেদি পাতার। এ কারণে বর্তমানে গ্রামটি মেহেদি নগর নামে পরিচিত। প্রতি বিঘা জমিতে লাগানো যায় সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার মেহেদির চারা। রোগ বালাই কম বলে লাভের পরিমাণ বেশি। বছরে উৎপাদন হয় কমপক্ষে দেড় কোটি টাকার মেহেদি পাতা। মেহেদি চাষের সঙ্গে জড়িত বেশিরভাগ চাষির সংসার চলে মেহেদি পাতা বিক্রি করেই। এক কথায় মেহেদি চাষের মাধ্যমে ওই এলাকার অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এবং অর্থনৈতিকভাবে সফলতার মাধ্যমে বদলেছে ভাগ্য।

১৯৯৬ সাল থেকে শ্যামলাসি বাহেরচর গ্রামে মেহেদি পাতার বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু করে মেহেদি হাসান নামে এক কৃষক। তার দাবি ঐ এলাকায় তিনিই প্রথম মেহেদি চাষাবাদ শুরু করেন। তার দেখাদেখি অনেকেই এখন ঝুঁকছেন মেহেদি চাষে।

মেহেদি হাসান বলেন, একবার মেহেদি গাছ লাগালে জমি থেকে বছরে তিন থেকে চারবার ফলন পাওয়া যায় মেহেদি পাতার। সারাবছর বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকেন চাষিরা। প্রতিকূল আবহাওয়া ও রোগবালাইয়ে তেমন ক্ষতি না হওয়ায় লাভবান হয় চাষিরা। উৎপাদিত মেহেদি পাতা বিক্রি হয় রাজধানীর কাওরানবাজার, রায়েরবাজার, যাত্রাবাড়ী এবং চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়।

কৃষক আমির আলি বলেন, এখন আর মেহেদি পাতা বিভিন্ন বাজারে নিয়ে বিক্রি করার খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা এসে জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। অনেক পাইকার আবার গোটা জমির ফসল এক বছরের জন্যই কিনে নেয়। পরে পাইকারের সুবিধা মতো মেহেদি পাতা কেটে নিয়ে যায়।

স্থানীয় মেহেদী চাষিরা বলছেন, মেহেদি পাতার চাষ পদ্ধতি ও চাষাবাদের সম্পর্কে অনেকেই অবগত নয়। সরকারিভাবে সঠিক প্রচার ও সার্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে মেহেদির উৎপাদন বাড়ানো গেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করেও বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, প্রতিবিঘা জমিতে মেহেদি চাষে খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা এবং বছরে বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলভীর রহমান কালবেলাকে বলেন, মেহেদি পাতা চাষ খুবই লাভজনক। একবার মেহেদি পাতার গাছ লাগালে সেই গাছ থেকে ফলন পাওয়া যায় বছরের পর বছর। রোগ বালাই খুব একটা আক্রমণ করে না। যদিওবা কিছু পোকামাকড় আক্রমণ করে তবে সেটি অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক কম। তবে মেহেদি পাতা চাষে যাতে কোনো প্রকার বিঘ্ন না ঘটে সেই লক্ষ্যে সাভার উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নানান কৃষি বিষয়ক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি আমরা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মদ পানে মহা সর্বনাশ, ৬ জনের মৃত্যু

বড় ভাই মির্জা ফখরুলের মতোই কবিতা দিয়ে শুরু করলেন মির্জা ফয়সল

সোনারগাঁয়ে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন

মা ইলিশ রক্ষায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার টহল

ন্যাশনাল পিপলস যুব পার্টির মাদকবিরোধী আলোচনা সভা

নিউমার্কেটে চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম, নগদ টাকাসহ গ্রেপ্তার ১

আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ করায় ছাত্রশিবিরের নিন্দা

শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংকের বিবৃতি

কক্সবাজার আদালতে বিচারকের মোবাইল-মানিব্যাগ চুরি

পাঠ্যপুস্তক ছাপার দায়িত্ব হস্তান্তর ‘মাথাব্যথায় মাথা কাটার মতো সিদ্ধান্ত’ : টিআইবি

১০

বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়ে ভারতকে হারাল অস্ট্রেলিয়া

১১

মৌসুমি বায়ুসহ আগামী ৪ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস

১২

চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা

১৩

এবার উপদেষ্টাদের নিয়ে মুখ খুললেন সামান্তা শারমিন

১৪

ঢাকায় আসছেন জাকির নায়েক

১৫

ছক্কা মেরে ইতিহাস গড়লেন স্মৃতি মান্ধানা!

১৬

উপদেষ্টা রিজওয়ানাকে এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি

১৭

একটি দল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায় : কফিল উদ্দিন 

১৮

চাকসু নির্বাচনে নতুন প্রত্যয়ে ছাত্রদল

১৯

বন্দর ব্যবসায়ী নেতারা / মাশুল বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধের ষড়যন্ত্রের অংশ

২০
X