ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আলহাজ আমির হোসেন আমুর ঝালকাঠি রোনালস রোডের বাসভবন থেকে লাগেজ ভর্তি অক্ষত পাঁচ কোটি এবং আরও কয়েকটি লাগেজভর্তি আংশিক পোড়া কয়েক কোটি টাকা, ডলার ইউরোসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা।
সোমবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিক ঝালকাঠি শহরের রোনালস রোডে আমির হোসেন আমুর বাসভবনে আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা লাগেজভর্তি এই টাকা দেখতে পান। পরে বিষয়টি সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জানালে লাগেজ ভর্তি টাকা উদ্ধার করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দুপুরে পদত্যাগ করার পর আমির হোসেন আমুর বাসভবনে ভাঙচুর করে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। কয়েক হাজার মানুষ মিছিল করে আমুর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে তিনতলা বাড়িটি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কয়েক দফা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু রাত আনুমানিক বারোটার দিকে ওই ভবনের তৃতীয় তলায় স্থানীয়রা আবার আগুন দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভাতে গেলে লাগেজের ওপর পাইপ দিয়ে পানি নিক্ষেপ করলে লাগেজের ভেতর থেকে বেশকিছু টাকার বান্ডিল বেরিয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সঙ্গে থাকা গণমাধ্যমকর্মীরা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানান। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা গিয়ে লাগেজ ও বস্তাগুলো উদ্ধার করেন।
এর মধ্যে একটি লাগেজ থেকে গণনা করে অক্ষত এক কোটি এবং অন্য লাগেজগুলো থেকে আংশিক পোড়া বিভিন্ন দেশের কয়েক কোটি টাকা উদ্ধার করেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ওই টাকাসহ লাগেজগুলো উদ্ধার করে। এর মধ্যে থেকে তারা গণনা করে একটি লাগেজে অক্ষত এক কোটি টাকা এবং অপর লাগেজগুলো থেকে গণনা করে আংশিক পোড়া দুই কোটি ৭৭ লাখ টাকা উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ছাড়া ডলার ও ইউরো উদ্ধার করেন তারা। টাকা ও বিদেশি মুদ্রা সবমিলিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভবনটির তৃতীয় তলার কক্ষে অনেক কম্বলে লাগা আগুন নেভানোর সময় কিছু টাকার বান্ডিল বের হয়ে আসে। এর সঙ্গে কয়েকটি লাগেজও পাওয়া যায়। জেলা প্রশাসককে জানানোর পর সেনাবাহিনী ও পুলিশ টাকাগুলো উদ্ধার করে।