টানা উত্তেজনাকে ঘিরে সিলেট নগরজুড়ে ছিল স্থবিরতা। সম্প্রতি শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের ঘোষণার পর উল্লাসে মেতে ওঠেন শহরবাসী। এ সময় বিভিন্ন স্থাপনা, দোকানপাট ও আওয়ামী সমর্থক রাজনীতিকদের ঘরবাড়িতে হামলাও চালানো হয়।
তবে সবকিছু ছাপিয়ে বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে সিলেট নগরে গাড়ির চাকা সচল রয়েছে। খুলেছে দোকানপাটও। যেন প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে সিলেট নগর।
এদিকে, নগরীতে যান চলাচল বাড়লেও গত মঙ্গলবারের মতো গতকাল বুধবারও কোনো ট্রাফিক পুলিশের দেখা মেলেনি। বিপরীতে আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও স্কাউটরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন। নগরের আম্বরখানা, বন্দর, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, রিকাবীবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিলেট জেলা রোভার স্কাউটস ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিলে ট্রাফিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজ করছেন। ফলে ভোগান্তি ও যানজট থেকে রক্ষা পাচ্ছে নগরবাসী।
জিন্দাবাজার এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থী সাহেদ আহমদ বলেন, ‘রাস্তায় কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই জনদুর্ভোগ হবে ভেবেই দায়িত্ব পালন করছি। যতদিন না স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে ততদিন আমরা এই দায়িত্ব পালন করব।’
চৌহাট্টা পয়েন্টে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা শিক্ষার্থী উপমা আক্তার জেরিন কালবেলাকে বলেন, দেখুন এদিকে অনেক হাসপাতাল রয়েছে। ফলে অনেক রোগীবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স এদিকটায় যাতায়াত করে। তাই এখানে আমরা অ্যাম্বুলেন্সকে সবার আগে সুযোগ করে দিচ্ছি।’
সিলেট জেলা রোভার স্কাউটসের সম্পাদক তোফায়েল আহমদ তুহিন বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সড়কে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি। শহরের ১০টি মোড়ে আমাদের দুই শতাধিক রোভার সড়কের শৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত আছে।
এদিকে, গতকাল সোমবার সিলেট সিটি করপোরেশনেও হামলা ও ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। এর পর থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ বেশিরভাগ কর্মকর্তা অফিসে অনুপস্থিত রয়েছেন। ভয়ে কাজ করছেন না পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও। ফলে নগরজুড়ে আবর্জনার স্তূপ জমে আছে। এ অবস্থায় মঙ্গলবার থেকে নগরে আবর্জনা পরিষ্কার শুরু করা হয়। বুধবারও তাদের একই কাজ করতে দেখা যায়।
এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী উপস্থিত থেকে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দিয়ে নগরের বন্দরবাজার এলাকার আবর্জনা পরিষ্কার করাতে দেখা যায়।