বাজান বয়স হয়ে গেছে। আমার শরীর দুর্বল, হাত-পা কাঁপে। শরীরে শক্তি পাই না। কষ্ট হলেও সৈয়দপুর থেকে শিশুদের খেলনা এনে বিক্রি করি। অল্প পয়সায় মালও দিতে চায় না দোকানদার। তবে জীবনের প্রয়োজনে বিক্রি করতে হয় খেলনা। বিক্রি করতে পারলেই খাইতে পারমু। এখন আর আগের মতো মাটির কাজ করতে পারি না। প্রায় সময়ই অসুস্থ থাকি। অসুস্থ শরীর নিয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে, অনেক সময় হাটবাজারে ও স্কুলের সামনে বিক্রি করি। খেলনা বিক্রি করে দুএক বেলা পেলে খাই, না পেলে নাই।
সোমবার (২৪ জুলাই) সকালে কালবেলার প্রতিনিধির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলছিলেন মজিদ উদ্দিন (৭৫)। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের কালিকাপুর জুম্মাপাড়ার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: মেয়েকে আর দেখা হলো না বৃদ্ধ বাবার
কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন চেয়ারম্যান আজিজার মিঞার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এম এইচ জাকারিয়ার দৃষ্টিগোচর হয়।
রোববার (৩০ জুলাই) সেচ্ছাসেবী সংগঠনের আজাদ হোসেন আওলাদ মিয়ার মাধ্যমে মজিদ উদ্দিনকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
এসময় আবেগ আপ্লুত হয়ে কালবেলাকে মজিদ উদ্দিন বলেন, আমি ভাবতে পারিনি আমাকে নিয়ে পত্রিকায় লেখার পর আমাকে সহায়তা করা হবে। এই সহায়তায় আমার পরিবার দুমুঠো ভাত খেতে পারবে। আমি ব্যবসাটাও বড় করতে পারব।
চেয়ারম্যান আজিজার মিঞার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এম এইচ জাকারিয়া জানায়, আমি কালবেলায় সংবাদ দেখে মর্মাহত হই। আমার সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে খোঁজখবর নিয়ে সত্যতা পেয়ে আমি মজিদ উদ্দিনকে আর্থিক সহায়তা করি। আগামীতে মজিদ উদ্দিনের ব্যবসা বড় করতে আমি একান্তভাবে সব সহায়তা করব।
প্রসঙ্গত, দুই ছেলে থাকলেও বিয়ের পর তারা বৃদ্ধ মজিদ উদ্দিন ও তার স্ত্রী ফুলতি বেগমের খোঁজখবর নেয় না। সারা দিন খেলনা বিক্রি করে চলত মজিদ উদ্দিনের সংসার। উপজেলা সমাজসেবা থেকে বয়স্ক ভাতা পেলেও টানাপড়েন লেগেই থাকত। জীবন সংগ্রামে মজিদ উদ্দিন যেন এক লড়াকু সৈনিক।
মন্তব্য করুন