বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, গোমতীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে

কুমিল্লায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, গোমতীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে

ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে তীব্র স্রোতে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে কুমিল্লা জেলার ১৪টি উপজেলা প্লাবিত হওয়ার খবর দিয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়। ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি। ক্ষণে ক্ষণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। লোকালয়ে হু হু করে ঢুকছে পানি। এতে দিশাহারা হয়ে ঘরবাড়ি ফেলে প্রাণে বাঁচতে মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন।

এদিকে এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই শহরবাসীর। কয়েক দিন ধরে কুমিল্লা শহরতলির শাহপুর, শুভপুর, চান্দপুর, কাপ্তানবাজার, ভাটপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। যে কোনো সময় গোমতীর বাঁধ ভেঙে শহরে পানি ঢুকতে পারে, এই ভয় তাদের।

উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহ না কমায় দিন দিন নতুন নতুন এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে বন্যার পানি। দুদিন ধরে বৃষ্টিপাত না হলেও বন্যার তীব্রতা কমেনি। নিম্নাঞ্চলে হু হু করে ঢুকছে বাদামি রঙের ঘোলাটে পানি।

নগরীর মোগলটুলি এলাকার বাসিন্দা সাদিক হোসেন মামুন কালবেলাকে বলেন, কয়েক দিন ধরে গোমতী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তাদের নির্ঘুম রাত কাটে। গোমতী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধও নরম হয়ে গেছে। যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে লোকের এমন কথা শুনে ভয় লাগছে তাদের। তিনি আরও বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিটি সেকেন্ড দুশ্চিন্তায় কাটছে। কখন না জানি নদী ভেঙে পানি ঢুকে যায়।

রোববার সরেজমিনে কুমিল্লার গোমতী নদীর বিবির বাজার, চানপুর ও ভাটপাড়া এলাকায় দেখা গেছে, নদীরক্ষা বাঁধে স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ করছেন। এক স্বেচ্ছাসেবী বলেন, পাঁচশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন। সবাই সচেতন হলে শহর রক্ষা বাঁধটিকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবেদ আলী কালবেলাকে বলেন, ১৭টি উপজেলার মধ্যে চান্দিনা, হোমনা এবং মেঘনা উপজেলা বাদে বাকি ১৪টি উপজেলা তলিয়েছে বানের পানিতে। সরকারি হিসাবে জেলায় মোট ৭ লাখ ৯৩ হাজার ১৪২ জন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেসরকারি হিসেবে তা ১০ লাখের কাছাকাছি। চলমান বন্যায় জেলায় মোট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪২৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সরকারিভাবে ১ হাজার ৮০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নগদ ৪৫ লাখ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, জেলাজুড়ে ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৫ হাজারের মতো বানভাসী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ২৯২ পুরুষ, ২২ হাজার ১৯৭ নারী, ১২ হাজার ৫০৫ শিশু ও ২৮১ প্রতিবন্ধী আশ্রয় নিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, গোমতী নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি ১ সেন্টিমিটার কমে তো আবার ১ সেন্টিমিটার বাড়ে। অর্থাৎ গোমতীর পানিপ্রবাহ অপরিবর্তিত রয়েছে। আমরা খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছি। পরিস্থিতি উন্নতি হতে সময় লাগবে। সবাইকে সম্মিলিতভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডিআরইউতে মঞ্চ ৭১–এর কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবি

জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব অপরিহার্য: উপদেষ্টা

কনভেনশন হলে গেরিলা বৈঠকে গ্রেপ্তার শিমুল ৪ দিনের রিমান্ডে

শাহবাগে এসে ডিএমপি কমিশনারের ‘দুঃখ প্রকাশ’

ইনকিলাব সম্পাদককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাল ছাত্রশিবির

বিএনপি নেতাকে কোপাল যুবলীগ নেতা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী হাটহাজারী বিমানবন্দর

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ডাকসু নির্বাচন / ১৩২ শিক্ষার্থীকে খাওয়ালেন প্রার্থী, রিটার্নিং কর্মকর্তা বললেন আচরণবিধি লঙ্ঘন

সাদাপাথর লুটপাট নিয়ে সিলেটে গণশুনানি

১০

একাধিক উপকারিতা কাঠবাদামের, যাদের জন্য ক্ষতিকর

১১

একই দিনে দুইবার পরিবর্তন, রাকসু নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ

১২

পারকি সৈকতের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ

১৩

জয়পুরহাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুর্ধর্ষ চুরি

১৪

হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের নামে প্রতারণা, সতর্ক থাকার নির্দেশ

১৫

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের প্রচারণার ভিডিওতে থাকায় বিপাকে শেবাগ

১৬

ভারতের ছাড়া পানি থেকে বাঁচতেই বাঁধ উড়িয়ে দিল পাকিস্তান!

১৭

সিলেটে পানির জন্য হাহাকার, সড়ক অবরোধ

১৮

অপারেশনের পর জ্ঞান না ফেরায় রোগীর মৃত্যু

১৯

শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজারে ওরস বৃহস্পতিবার

২০
X