জাতীয় সংগীত পরিবর্তন ইস্যুতে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, এগুলো বিতর্ক সৃষ্টির প্রয়াস। আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও বারবার বলেছেন, বিতর্ক সৃষ্টি হয় এমন কোনো জায়গায় আমরা হাত দেব না। আমরা হলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমাদের দায়িত্ব আইনি পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার করা। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়ন করা।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ওলামা-মাশায়েখসহ বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আগে সবকিছু স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে আনব। এরপর আমরা নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজিয়ে নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করব। নির্বাচিত দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেব।
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, মসজিদ, মন্দির এবং মাজারে হামলা গর্হিত কাজ। ধর্মীয় উপাসনায় যারা হামলা চালায় তারা মানবতার শত্রু। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দেশে বিক্ষিপ্তভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সব ধর্ম-বর্ণের মানুষদের নিয়েই এ দেশ গঠিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় সাধারণ জনগণের পাশাপাশি মাদ্রাসার ছাত্রদের পূজার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে মন্দির পাহারা দেওয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে এ নিয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, চলতি মাসেই সৌদি আরবের ধর্মমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। সেখানে হজের খরচ কমিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হবে।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আলমগীর রহমান, রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক পারভেজ রায়হান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনে বোর্ড অব গভর্নর মাওলানা জামাল উদ্দিন সন্দ্বীপী।
এর আগে সকালে রাজশাহীর পবায় মডেল মসজিদ পরিদর্শন করেন ধর্ম উপদেষ্টা। সেখানে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মানি বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান।
এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা সবার দায়িত্ব। কেউ যাতে ধর্মীয় চেতনার পরিপন্থি কর্মকাণ্ড করে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করতে না পারে সে বিষয়েও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি সেখানেও স্থানীয় ইমাম-মুয়াজ্জিন ছাড়া বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত। পরে ধর্ম উপদেষ্টা ডাঙ্গিপাড়া আল জামিয়া আস সালাফিয়্যাহ এবং নওদাপাড়ায় আল মারকাজুল ইসলামি আস সালাফি পরিদর্শন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পরে তিনি নগরীর কাটাখালী জামিয়া উসমানিয়া মাদ্রাসা পরিদর্শন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিকেলে হযরত শাহ মখদুম (রহ.) দরগাহ পরিদর্শন করবেন। সন্ধ্যায় রাজশাহী সার্কিট হাউসে সরকারি বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজশাহী দারুস সালাম কামিল মাদ্রাসা পরিদর্শন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বেলা সাড়ে ১১টায় গোদাগাড়ী গৌরাঙ্গ বাড়ি মন্দির ও শারদীয় দুর্গা মন্দির পরিদর্শন এবং দরিদ্রদের মধ্যে সহায়তা সামগ্রী বিতরণ করবেন।
দুপুর ২টায় নদওয়াতুল ইসলাম কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজশাহী ছোট বনগ্রামে থাকা জামিয়া রহমানিয়া মাদ্রাসা পরিদর্শন ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
মন্তব্য করুন