সিলেটে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলী আলমগীর হোসেনের বদলী আদেশের পরও বহাল তবিয়তে অফিস করে যাচ্ছেন সিলেট কার্যালয়ে। রাষ্ট্রপতির আদেশের পরও সিলেট কার্যালয় ছেড়ে নতুন কর্মস্থল খাগড়াছড়িতে যোগ দিতে গড়িমসি করছেন। যার ফলে নতুন প্রকৌশলী আবুল কাশেম দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।
আবুল কাশেম গত ২৭ জুলাই থেকে অফিসে দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য ধরনা দিয়ে আসছেন। একাধিকবার ফোনে ও স্ব-শরীরে নতুন কার্যালয়ে গেলেও তাকে দায়িত্বভার দেওয়া হয়নি।
এদিকে খাগড়াছড়িতে বদলীর আদেশ পাওয়া আলমগীর হোসেন নানা মাধ্যমে এখানে থাকার প্রচেষ্টা করে যাচ্ছেন। এমনকি নতুন আদেশ প্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে সিলেট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কার্যক্রম।
জানা গেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৭ প্রকৌশলীকে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে ২৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন জেলায় বদলি করা হয়।
ওই আদেশে বলা হয়- সিলেট জেলার পানি সরবরাহ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী (চ.দ.) আলমগীর হোসেনকে একই পদে খাগড়াছড়ি জেলায় বদলি করা হয়। সিলেটে বদলি করা হয় সুনামগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাশেমকে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বদলি আদেশের পর সাত কার্যদিবস পেরিয়ে গেলেও নিজ কর্মস্থল খাগড়াছড়িতে যোগদান না করে সিলেটেই অফিস করছেন আলমগীর হোসেন। ফলে সিলেট ও খাগড়াছড়ি জেলায় এই পদে যথাযথ কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে আটকে আছে দাপ্তরিক কার্যক্রম।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী আলমগীর হোসেন কালবেলাকে বলেন, আমার বদলী আদেশ পেয়েছি। শারীরিক অসুস্থ থাকার কারণে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে সময় লাগছে।
নতুন বদলী হয়ে আসা প্রকৌশলীর দায়িত্ব প্রদান করা প্রসঙ্গে বলেন, আমি কাগজপত্র গোছাচ্ছি। সব কিছু গুছিয়ে আগামী ৯ আগস্ট নতুন কর্মস্থলে যোগদান করবো।
নতুন কর্মস্থলে যোগদানে বিলম্বের বিষয়ে জানতে সিলেট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নতুন নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কাশেম কালবেলাকে বলেন, বদলীর আদেশ আসার পরদিন আমার নতুন কর্মস্থল সিলেট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগদানের জন্য যোগাযোগ করি। কিন্তু বদলীর আদেশ পাওয়া বর্তমান নির্বাহী আলমগীর হোসেন আমার দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে এখানে থেকে যাওয়ার নানা পায়তারা করছেন। এমনকি আমার নামে বিভিন্ন মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন। যা তদন্ত সাপেক্ষে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। শুধু তাই নয় তিনি বিভিন্ন ভাবে আমাকে হুমকি ধামকি প্রদান করাচ্ছেন। আমি একাধিকবার স্ব-শরীরে ও ফোনে যোগাযোগ করেছি। তারপর আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করি। যথাযথ কর্তৃপক্ষ মৌখিক ও লিখিত ভাবে আলমগীর হোসেনকে জানিয়েছেন রোববার (৬ আগস্টের) মধ্যে আমাকে দায়িত্বভার প্রদান করে তিনি তার নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে।
এ বিষয়ে জানতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুহাম্মদ শেখ সাদী রহমতউল্লাহ কালবেলাকে বলেন, প্রকৌশলীদের বদলীর আদেশক্রমে সিলেট জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আলমগীর হোসেনকে খাগড়াছড়িতে বদলী করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সিলেটে নতুন প্রকৌশলী সুনামগঞ্জের আবুল কাশেমকে বদলী করে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও নতুন দায়িত্ব বুঝিয়ে দেননি আলমগীর হোসেন। আগামী ৯ আগস্টের মধ্যে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ আগস্ট লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন