নোয়াখালী ব্যুরো
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৩২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আটকের পর সাবেক ছাত্রদল নেতার মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

নিহত আব্দুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত
নিহত আব্দুর রহমান। ছবি : সংগৃহীত

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আটক ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা হাসপাতালে মারা গেছেন। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। আটকের পর পরিবারের সামনেই মারধর এবং সময়মতো চিকিৎসা না দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। তবে পুলিশ অভিযাগ অস্বীকার করেছে।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) আসরের নামাজের পরে নিহত সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুর রহমানকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত আব্দুর রহমান (৩৩) জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হীরাপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মাওলানা সাইদুল হকের ছেলে। তিনি সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ আব্দুর রহমান ও হাবিবুর রহমান (২৫) নামে দুই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাৎক্ষণিক তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পর সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রহমান মারা যান। তাদের দুইজনেরই শরীরে নীলা-ফুলা জখম ছিল। কিন্তু তাদের শরীরে গুরুতর কাটাছিঁড়া কিছু ছিল না। হাসপাতালে ভর্তি থাকা হাবিবুর রহমানের অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত নয়।

নিহত আবদুর রহমানের চাচাতো ভাই মো. হানিফ অভিযোগ করে বলেন, ‘সোমবার ভোররাতের দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে আমার চাচাতো ভাই আব্দুর রহমান ও একই বাড়ির আরেক ভাতিজা হাবিবুর রহমানকে তাদের ঘর থেকে আটক করা হয়। আটকের পর তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে মারধর করা হয়। সকালে স্থানীয় পশ্চিম পাড়া বাবুলের দোকানের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের কাছ থেকে কার্তুজ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে জানানো হয়। পরে সকাল আট-নয়টার দিকে তাদের সোনাইমুড়ী থানা সোপর্দ করা হয়।’

হানিফ আরও জানান, ‘তাদের থানায় সোপর্দ করার পর তারা থানায় গিয়ে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান। তখন পুলিশকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করা হয়। তখন পুলিশ জানায়, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানোর পর সেখানে আবেদন করলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পেলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘দুজনকে বিকেল ৫টায় আদালতে পাঠানো হয়। আদালত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বললে পুলিশ সাড়ে ৫টার দিকে দুজনকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর আবদুর রহমান মারা যান। আর ভাতিজা হাবিবুর রহমান একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, ‘সকালে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। তখন তাদের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। যখন তাদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয় তখন তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। তখন স্থানীয় বজরা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মারামারির ঘটনায় দায়ের হওয়া পূর্বের ৩টি মামলা রয়েছে। আর হাবিবের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাদের কাছ থেকে রাইফেলের দুইটি গুলি ও ৩টি রাম দা উদ্ধার করা হয়েছে।’

ওসি মোরশেদ আলম জানান, ‘নিহত যুবকের লাশ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার আসরের পর তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ট্রাম্পের গাজা দখলের ঘোষণায় জামায়াতের নিন্দা

এই সময় শিশুদের স্বাস্থ্য সমস্যা ও করণীয়

হাসিনার মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রতিবাদ

৩২ নম্বরে ভাঙচুরের কারণ জানাল সরকার

গাজায় দুর্ঘটনায় ইসরায়েলের দুই সেনা নিহত, আহত ৮

ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব

পপিকে হত্যার জন্য খুনি ভাড়া করেছিল পরিবার  

সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাসভবনে ভাঙচুর-আগুন

এবার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন

হাবিপ্রবিতে মুজিব পরিবারের ম্যুরাল ও নামফলক ভাঙল শিক্ষার্থীরা

১০

পার্লামেন্টে বিরোধীদের তোপের মুখে মোদি সরকার

১১

এবার আমুর বাড়িতে ভাঙচুর

১২

৩২ নম্বরে ভাঙচুর, কী বলছে ছাত্রদল?

১৩

ধানমন্ডি বত্রিশে গরুর মাংস খাওয়ানোর উদ্যোগ

১৪

ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

১৫

জবি ছাত্রদলের মার্চ ফর জাস্টিস ও উপাচার্যকে স্মারকলিপি

১৬

ইউজিসির সাবেক সচিব ফেরদৌস জামান সাময়িক বরখাস্ত

১৭

স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক মন্ত্রী উ শৈ সিংয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

১৮

ছেলেসহ জাহিদ মালেকের ২৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ  

১৯

‘কাউয়া কাউয়া’ স্লোগানে ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে ভাঙচুর-আগুন

২০
X