আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:১২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মুক্তির আনন্দ সোলায়মানের বাড়িজুড়ে

মা জুলেখা খাতুনকে জড়িয়ে আছেন সোলেমান মিয়া। ছবি : কালবেলা
মা জুলেখা খাতুনকে জড়িয়ে আছেন সোলেমান মিয়া। ছবি : কালবেলা

এক দিন, এক মাস বা এক বছর নয়, প্রায় ১৬ বছর পরিবার-পরিজনদের কাছ থেকে দূরে ছিলেন তিনি। কারাগারের অন্ধকারে কেটেছে অসংখ্য দিন-রাত বিডিআর জওয়ান সোলায়মান মিয়ার।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় দীর্ঘ কারাবাসের পর মুক্তির স্বাদ পেলেন তিনি।

জামিনে মুক্ত হয়েই সোলায়মান মিয়া ছুটে যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়নের কেন্দুয়াই গ্রামে মমতাময়ী মায়ের কাছে। মাকে কাছে পেয়ে অঝোরে কাঁদেন তিনি।

এ সময় ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আদর করেন মা। দীর্ঘ ১৬ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাতে দুজনের চোখে গড়ায় আনন্দ অশ্রু। স্বজনরাও তাকে দেখতে এসেছেন। গ্রামের মানুষও আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করেছেন সোলায়মান মিয়াকে। তবে দীর্ঘ এ সময়ের মধ্যে বাবাসহ কয়েকজন স্বজনকে হারিয়েছেন সোলায়মান মিয়া।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে সোলায়মান মিয়ার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি জানান, বিদ্রোহের সময় স্বেচ্ছায় পিলখানা থেকে সরে যান। সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে আবার ফেরেন। এরপর তিনিসহ অনেক জওয়ানকে বিনা কারণে জেলে নেওয়া হয়।

সোলায়মান বলেন, আমাদের বিনা অপরাধে রাজনৈতিক কারণে এত বছর বন্দি রাখা হয়েছিল। আমাদের ধারণা ছিল, সরকার পরিবর্তন হলে আমরা হয়তো মুক্তি পাব। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কারণে আমরা মুক্তি পেলাম। আমরা তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।

সরকার যেন তাদের প্রাপ্যটা বুঝিয়ে দেন সেই দাবি করে সোলায়মান মিয়া বলেন, চাকরি শেষে পেনশনের টাকায় কিছু করব ভেবেছিলাম। এরই মধ্যে কপালে দুর্ভোগ নেমে আসে। এখন চলার মতো অবস্থা নেই। ধারদেনা করে দুই ছেলেকে প্রবাসে পাঠানো হলেও তারা ভালো নেই।

সোলায়মানের স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, স্বামী জেলে যাওয়ার পর কী ধরনের কষ্ট করেছি বলে বোঝানো যাবে না। খেয়ে বাঁচতে হাত পাততে হয়েছে। ধারদেনা করে দুই ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। তারাও ভালো নেই। এখনো অনেকে টাকা পাওনা।

ভাই ইসমাইল মিয়া বলেন, আমাদের বিশ্বাস ছিল ভাই বিপথগামী হয়নি। সেটা প্রমাণিত হলো। আমরা খুশি। সোলায়মানের মা জুলেখা খাতুন বলেন, আমার স্বামী শুধু সোলায়মানের পথ চেয়ে থাকত। রাস্তা দেখিয়ে বলত এই দিক দিয়েই আসবে। এখন স্বামী বেঁচে নেই। থাকলে অনেক খুশি হতেন।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিডিআরের (বর্তমানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি) সদর দপ্তর ঢাকার পিলখানায় বিদ্রোহ হয়। সেদিন বিডিআরের কয়েকশ সদস্য পিলখানায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালান। প্রায় দুদিনব্যাপী চলা বিদ্রোহে বিডিআরের তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদসহ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। সব মিলিয়ে ৭৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অযত্নে ‘অসুস্থ’ কোটি টাকার রেসকিউ বোট

হত্যাসহ ১২ মামলার আসামি আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

নরসিংদীতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শনিবার

ভূমিকম্পে চট্টগ্রামেও হেলে পড়েছে ভবন, বাসিন্দাদের জন্য মাইকিং

তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনায় ধানমন্ডিতে দোয়া মাহফিল

রিকশাচালকদের চাঁদা বন্ধের আশ্বাস আমিনুল হকের

আলাউদ্দিন মৃধা হত্যা মামলার আসামি মিন্টু গ্রেপ্তার

দেশের প্রথম আন্তঃচেইন হোটেল ‘ডি মোর’ লয়্যালটি ক্লাবের যাত্রা শুরু

২৮ জেলে-মাঝিসহ ট্রলার নিয়ে গেছে ভারতীয় কোস্টগার্ড

১০

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে সুপার ওভারে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

১১

হোয়াটসঅ্যাপে ফিরছে পুরোনো সেই ফিচার, যেসব সুবিধা পাবেন

১২

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য কামনায় রাজধানীতে শীতবস্ত্র বিতরণ

১৩

পোল্যান্ডে প্যাট্রিয়টসহ সেনা মোতায়েন নেদারল্যান্ডসের

১৪

দরজার ধাক্কায় আঙুল ভেঙে ফেললেন তারকা খেলোয়াড়

১৫

নরসিংদী কেন ভূমিকম্পের কেন্দ্র?

১৬

বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টানে ভেদাভেদ নেই : ড. এমএ কাইয়ুম

১৭

যতদিন ইনসাফ কায়েম না হবে ততদিন সংগ্রাম চলবে : সাদিক কায়েম

১৮

নির্বাচন উৎসবমুখর করতে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা 

১৯

গ্রামীণ ব্যাংকের আরও এক শাখায় অগ্নিকাণ্ডের চেষ্টা

২০
X