রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৫:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাতভর অভিযান, চোখে ধুলা দিয়ে পালালেন আ.লীগ নেতা

রাজশাহী নগরীর একটি বহুতল ভবনে যৌথবাহিনীর অভিযান, ইনসেটে আ.লীগ নেতা ব্যাটারি বাবু। ছবি : কালবেলা
রাজশাহী নগরীর একটি বহুতল ভবনে যৌথবাহিনীর অভিযান, ইনসেটে আ.লীগ নেতা ব্যাটারি বাবু। ছবি : কালবেলা

রাজশাহী নগরীর একটি বহুতল ভবনে ঢুকে ‘হাওয়া’ হয়ে গেছেন মোস্তাক আহমেদ বাবু নামের এক ব্যক্তি। ‘ব্যাটারি বাবু’ নামেও পরিচিত তিনি। ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় তার নাম ছিল, সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও তাকে স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে দেখা গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রাতভর অভিযানেও তাকে পাওয়া যায়নি, তাদের চোখে ধুলা দিয়ে পালিয়ে গেছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

মোস্তাক আহমেদ বাবু নগরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি। গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে ছাত্র-জনতা খবর পায় যে, বাবু নগরের কাদিরগঞ্জ এলাকার একটি বহুতল ভবনে নিজের ফ্ল্যাটে উঠেছেন। এরপর ভবনটি ঘেরাও করে পুলিশ, ডিবি পুলিশ, সিআরটি, সেনাবাহিনী এবং র‌্যাব। তল্লাশির পরও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভোররাত পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভবনটি ঘিরে রেখেছিল।

মোস্তাক আহমেদ বাবু রাজশাহীতে একটি ব্যাটারি দোকান পরিচালনা করেন, যার নাম ‘সাব্বির আয়রন স্টোর’। এ কারণেই তার ডাকনাম ‘ব্যাটারি বাবু’ হয়ে গেছে। ব্যাটারির ব্যবসা ছোট হলেও তিনি অত্যন্ত বিলাসী জীবনযাপন করেন। তার বিরুদ্ধে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।

তিনি গোদাগাড়ীর শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শীষ মোহাম্মদের সঙ্গে হেরোইনের কারবার চালাতেন এবং সারা দেশে নারী সাপ্লাই সিন্ডিকেটে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ব্যাটারি বাবু ২০০৩ সালে ক্রিকেটার জিকো হত্যার মামলার আসামিও ছিলেন। ওই মামলার পর তিনি মধ্যপ্রাচ্যে পালিয়ে যান এবং ২০১২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুর রহমান কিটুর ছত্রছায়ায় রাজনীতি শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজশাহী মহানগরের বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পান।

ব্যাটারি বাবুর খোঁজ পাওয়া না যাওয়ায় ছাত্র-জনতার মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এক নারী রাতেই ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ‘আমরা তাকে ঢুকতে দেখেছি। তারপর কীভাবে তিনি হাওয়া হয়ে গেলেন, তা বুঝতে পারছি না।’

অন্য একজন ছাত্র জানান, ফ্ল্যাটের সামনে গেলে তার পরিবারের সদস্যরা পাঁচ লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলেন তাকে গ্রেপ্তার না করানোর জন্য, কিন্তু তারা টাকা না নিয়ে পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন কালবেলাকে বলেন, ‘রাত ৩টা পর্যন্ত অভিযান চলেছে, কিন্তু আসামিকে পাওয়া যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জনপ্রিয় ব্রিটিশ পত্রিকায় বাংলাদেশ নারী দলের প্রশংসা

ইউআরপি ও ডিএলআর মডিউল প্রস্তুত / মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাবে শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে

রাশিয়া শক্তিশালী, এটা মেনে নিতেই হবে : ট্রাম্প

ময়মনসিংহ থেকে বাস চলাচল শুরু, ভাঙচুরের ঘটনায় কমিটি

আইপিএলে ভালো করলেও ভারত দলে জায়গা নিশ্চিত নয়

ফেব্রুয়ারির কত তারিখে রোজা শুরু হতে পারে 

দুই শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় আহমাদুল্লাহর উদ্বেগ

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

১০

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

১১

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

১২

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

১৩

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

১৪

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

১৫

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

১৬

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১৭

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

১৮

গাজা সীমান্তে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করল মিসর

১৯

জাজিরা হাসপাতালে দুদকের অভিযান, অনিয়মে জর্জরিত স্বাস্থ্যসেবা

২০
X