আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ ও বিশুদ্ধ মাংস উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন ধনবাড়ী উপজেলার খামারিরা। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারের ওপর ভিত্তি করে এসব খামারে কোরবানির পশু লালনপালন করা হচ্ছে। বাজারমূল্য ঠিক থাকলে এবারও লাভের মাধ্যমে স্বপ্নপূরণের আশা খামারিদের।
এদিকে শুধু ধনবাড়ী উপজেলায় নয় দেশের সব খামারে চলছে কোরবানির পশুর বাড়তি যত্ন। তবে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে গরুর দাম নিয়ে শঙ্কিত ধনবাড়ীর খামারিরা। দেশের বাইরে থেকে যেন দেশে গরু না আসে সে বিষয়েও জোর দাবি তাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধনবাড়ীর প্রায় প্রতিটি গ্রামে মোটাতাজাকরণের লক্ষ্যে গড়ে উঠেছে গরুর খামার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে খামারগুলোতে এখন চলছে অতিরিক্ত পরিচর্যা। দেশি গরুর সঙ্গে এবার ধনবাড়ীতে শাহিওয়াল জার্সি, ফিজিয়ান, ব্রাহামা প্রজাতির গরুকে প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে গরু পালন করলেও এই সময় বাজারের কেনা খাবার দিয়ে গরুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করতে ব্যস্ত খামারিরা।
এদিকে সামান্য অযত্নে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে এখন সতর্ক খামারিরা। তবে গত বছরের তুলনায় গোখাদ্যের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় এবং চাহিদার তুলনায় কোরবানির পশু বেশি থাকায় এবার গরুর দাম নিয়ে শঙ্কিত খামারিরা। এবারের কোরবানিতে দেশি গরুর বিক্রি বাড়াতে ভারতীয় গরুর প্রবেশ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছেন খামারিরা।
গ্রিন খামার (মুশুদ্দি) সমবায়ী খামারি কামাল জানান, আমরা প্রতি বছর ৫০-৬০টা গরু পালন করলেও এবার বাছুরের মূল্য ও খাদ্য মূল্য বেশি হওয়ায় গরু পালন কমিয়ে দিয়েছি।
মুশুদ্দি গ্রামের খামারি আবুতালেব জানান, ভালোজাত ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোরবানির ষাঁড় পালন করছি লাভের আশা করা যায়।
বলিবদ্র গ্রামের আরেক খামারি করিম জানান, প্রাকৃতিকভাবে গরু বড় করে আমরা বিক্রি করে আসছি। প্রায় ৩ একর জমিতে উন্নত জাতের কাঁচা ঘাসের চাষ করেছি। গরুর খাবারের দাম বেশি হওয়ায় চিন্তায় আছি। তবে যদি ভারতীয় গরু আসে তাহলে তো শেষ।
ধনবাড়ী উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. বিপ্লব কুমার পাল জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এখন থেকেই নিয়মিত খামার পরিদর্শন, ভ্যাকসিন দেয়া, প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামসহ নানা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। খামারিদের হরমোন স্টেরিয়ট জাতীয় খাদ্য না খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, ধনবাড়ী উপজেলাতে গরু, মহিষ, বলদ, গাভি সবমিলিয়ে ৩৬ হাজার ৬৬টা গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। যা ধনবাড়ী উপজেলাবাসীর কোরবানি চাহিদা মিটিয়েও অবশিষ্ট থাকবে। ধনবাড়ীতে প্রায় ছোট বড় ১১ হাজার খামারে চলছে গরু মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া।
মন্তব্য করুন