সিলেটে প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরী হত্যা মামলায় তার ছেলেসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (০৬ মে) দুপুরে বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শাহাদত হোসেন প্রামাণিক এ রায় দেন। মামলায় ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন।
নিহত শামসুল ইসলাম চৌধুরী সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নিহতের ছোট ছেলে মো. মাসুদ আহমদ চৌধুরী, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের মো. জাহের আলী ও ছাতকের মো. আনসার আহমেদ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই থেকে আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরী নিখোঁজ আছেন জানিয়ে ১৮ জুলাই সিলেটের কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ছোট ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী। তবে ২২ জুলাই থেকে তিনি নিজেও নিখোঁজ হন। পরে শামসুল ইসলাম চৌধুরীর বড় ছেলে মাহমুদ আহমদ চৌধুরী ওই বছরের ৪ আগস্ট ছোট ভাই মাসুদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার তদন্তের পর ২০১৩ সালের ১৫ মে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, মাসুদ আহমদ চৌধুরী সম্পত্তির লোভে বাবাকে অন্য আসামিদের সহযোগিতায় তাদের বাড়ি থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীতে ফেলে দেন।
সিলেট বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের পাপলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো. আনছারুজ্জামান জানান, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে নামাজরত অবস্থায় প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীকে তার ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না পেছন থেকে প্রথমে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে আইনজীবী শামসুল ইসলামকে অচেতন অবস্থায় গাড়িতে তুলে সুনামগঞ্জের ছাতকের মল্লিকপুর এলাকার সুরমা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এর কয়েকদিন পর সুনামগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামে সুরমা নদীতে তার লাশ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মুন্নাকে গাড়িচালকসহ তিনজন সহযোগিতা করেন।
তিনি জানান, মামলার রায়ে ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না তার সহযোগী জাহের আলী ও আনসার আহমদকে মৃতদণ্ড এবং গাড়িচালক বোরহান উদ্দিনকে তিন বছরের সাজা দেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছেন। নিহত অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর চার মেয়ে দুই ছেলে। বড় ছেলে মাহমুদ আহমদ চৌধুরী এই মামলার বাদী।
মন্তব্য করুন