পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস এখন দালালদের দখলে। ফলে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। দালাল ও অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, কুয়াকাটার যেসব বাড়িতে এখনো বিদ্যুৎ সংযোগ যায়নি, সেসব বাড়ির লোক সংযোগ নিতে কুয়াকাটা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এজিএম মোতাহার হোসেনের কাছে যান। সেখানে তার থেকে পরামর্শ ও সহযোগিতা না পেয়ে বাধ্য হয়ে যেতে হচ্ছে দালালের কাছে। আর দালালরা একটি মিটারের জন্য তিন থেকে চার হাজার টাকা নিয়ে ঘুরান বছরের পর বছর এমনটাই অভিযোগ গ্রাহকদের। অসাধু চক্রটি এজিএমের সঙ্গে জড়িত বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন।
এ ছাড়াও কুয়াকাটা পৌরসভা ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের জন্য আরও অনেক দালাল চক্র রয়েছে। দালালের মাধ্যমে মিটার পেতে কোনো রকম কাগজ দিলেই হচ্ছে। আর দালাল ছাড়া গেলে আসছে নানান বাহানা। অপরদিকে অনলাইনে ফরম পূরণ করে মিটার পেতে সময় লাগে এক থেকে দেড় মাস।
ভুক্তভোগী গ্রাহক সিফাত বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেলে আমার মার্কেটের ১২টি মিটার খুলে নিয়ে যায় বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন। পরে তারা বিল পরিশোধ করিনি এমন অভিযোগ তুলে মিটারগুলো স্থগিত করে রাখে। এমনকি আমার নামের একটি মিটার তারা অন্য এক ভাড়াটিয়াকে দিয়েছেন।
আরেক ভুক্তভোগী নজির মোল্লা বলেন, আমাদের বাসার ২ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হলে অফিসের লোক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যান। আমি পরেরদিন পরিশোধ করব বলে জানাই। পরে তারা আমার কাছ থেকে বিলের ৩ হাজার টাকা অফিসে পরিশোধের কথা বলে নিয়ে আসেন এবং তা অফিসে পরিশোধ না করে অন্যত্র বদলি হয়ে যান।
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ কুয়াকাটা শাখার এজিএম মোতাহার হোসেন কালবেলাকে বলেন, আমাদের অফিসে কয়েকজন ইলেকট্রিশিয়ান আছে। তবে তারা নিয়োগপ্রাপ্ত নন। তাদের সঙ্গে কেউ টাকা পয়সার লেনদেন করলে সে দায়ভার অফিস নেবে না। আমরা চাইলেও এদের তাড়াতে পারছি না। গ্রাহক তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
পটুয়াখালী জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, আমাদের অফিসে দালালের কোনো স্থান নেই। অফিসে এসে কেউ হয়রানি হলে অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের বিদ্যুৎ অফিস দালালমুক্ত রাখতে সবার সহযোগিতা চাই।
মন্তব্য করুন