উৎপাদন খরচ না থাকলেও প্রাকৃতিক সম্পদ নদীতে বেড়ে ওঠা ইলিশের দাম ক্রেতার নাগালে আনতে মূল্য নির্ধারণ চেয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি)। বুধবার (১৮ জুন) মন্ত্রণালয়ে ইলিশের মূল্য নির্ধারণ চেয়ে এই চিঠি পাঠানো হয়। এ নিয়ে জেলাজুড়ে এখন চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অংশীজনরা দাম নির্ধারণ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) চাঁদপুর ঘাটে কথা হয় ক্রেতা কালু মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, আড়তদার ও দাদনচক্রে ইলিশের দাম বাড়ছে। নয়তো ইলিশের কেজি সর্বোচ্চ হওয়া উচিত ৫০০ টাকা বা তারও কম। আমি একজন সাধারণ ক্রেতা হিসেবে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২২-২৩শ’ টাকা দিয়ে কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই ইলিশের দাম নির্ধারণ জরুরি।
পুরান বাজারের জেলে আলম বলেন, নদীতে নেমেছিলাম অনেকটা আশা নিয়ে; কিন্তু দিনব্যাপী নদীতে থেকে ৩টি ইলিশ পেলাম বিকেল পর্যন্ত। এগুলোর দাম দিয়ে তেলের পয়সাও উঠবে না। নদীতে ইলিশই কম। কাজেই ইলিশ বেশি থাকলে দাম নির্ধারণ করলে কাজ হতো। যেখানে ইলিশই সংকট, সেখানে দাম নির্ধারণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি শবে বরাত বলেন, ইলিশ মাছ হচ্ছে কাঁচামাল। আর কাঁচামালের কখনো মূল্য নির্ধারণ করে বেচাবিক্রি সম্ভব নয়। একজন জেলে নদীতে নামলে নৌকা, জাল, তেল এবং তার পরিশ্রমের মূল্য রয়েছে। এখন দেখা যাক, সামগ্রিকভাবে মন্ত্রণালয় এটি নিয়ে কী করে।
চাঁদপুর কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ইলিশ আমাদের কৃষিজ পণ্যের আওতায়। কিছু দিন আগে মুরগির মাংস ও ডিমের দামও আমরা নির্ধারণ করতে সক্ষম হয়েছি। ইলিশের তো উৎপাদন খরচ নেই। এটা ধরতে জেলেরা নদীতে যাওয়া-আসা, জাল ও নৌকার খরচসহ আনুষঙ্গিক খরচ বিবেচনায় নিয়ে এর মূল্যও কৃষি বিপণন আইনে নির্ধারণ করা সম্ভব। মন্ত্রণালয়ে ইলিশের মূল্য নির্ধারণের চিঠি পাঠানোর উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহজাহান কবীর বলেন, ইলিশের মূল্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করলে জেলেদের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ তারা দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে অনেকটা জিম্মি।
মন্তব্য করুন