চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় দিনদুপুরে প্রকাশ্যে যুবদল কর্মী মো. সেলিমকে গুলি করে হত্যার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। রোববার (০৫ জুলাই) উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ঈষাণ ভট্টের হাট এলাকায় এ কিলিং মিশন চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান সেলিম।
এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সেলিম কদলপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শমসেরপাড়া এলাকার আমির হোসেনের ছেলে। তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী বলে জানা গেছে।
সোমবার (৭ জুলাই) সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় পাঁচজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এদের মধ্যে তিনজন ছিলেন বোরখা পরিহিত ও দুই জনের মুখে রুমাল মোড়ানো। সবার হাতে ছিল অস্ত্র।
পুলিশ জানিয়েছে, উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের ঈষাণ ভট্টের হাট এলাকায় হত্যার পর পালিয়ে যাওয়ার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজ এটি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, রোববার দুপুরে মুহাম্মদ সেলিম ইশানভট্টের হাটে একটি দোকানের সামনে বসে ছিলেন। এ সময় বোরকা পরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ৫-৬ জনের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এসে সেলিমকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পরে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ঈষাণ ভট্টের হাট এলাকায় সেলিমকে গুলি করার পর খুনিরা যে অটোরিকশা ব্যবহার করেছিল সেটা অর্ধ কিলোমিটার অদূরে হযরত আশরাফ শাহ (র.) এর মাজার গেট সংলগ্ন এলাকায় তাদের ছেড়ে দেয়। গেট সংলগ্ন এলাকায় এসে অপর একটি অটোরিকশায় উঠে কমলার টিলা নামক স্থান দিয়ে পাহাড়ের দিকে চলে যায় খুনিরা।
রাউজানের কমলার টিলা হয়ে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাউখালি উপজেলা ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গহীন অরণ্য পাহাড় অবস্থিত। তিন উপজেলা সীমান্তবর্তীর এই নির্জন পাহাড়ে যাওয়ার কোনো সড়কপথ নেই। পায়ে হেঁটে প্রায় ৫-৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায় খুনিরা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা দৃশ্যটি মূলত হজরত আশরাফ শাহ মাজারের স্থাপন করা ক্যামেরায় ধারণ করা।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির মুখে গুলি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চমেক হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। এখনো থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। দুজনই চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এদের একজনের নাম রায়হান ও অপরজন ধামা ইলিয়াস। বোরখা পরা তিনজনকে শনাক্তে কাজ চলছে।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার রাসেল কালবেলাকে বলেন, নিহত পরিবারের কেউ এখনো মামলা করেননি। তাদের সঙ্গে পুলিশ যোগযোগ করছে। তাছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে আসামিদের শনাক্তের কার্যক্রম চলছে।
মন্তব্য করুন