উচ্চ আদালতের নির্দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিসহ দুটি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। অভিযানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বেদখল হয়ে থাকা ২৫ শতক জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের মসজিদ রোড এলাকায় জেলা প্রশাসেনর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নুসরাত জাবীন এ অভিযান পরিচালনা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের মসজিদ রোড এলাকায় জেলা প্রশাসন চেম্বারসহ স্থানীয়দের প্রায় ২৫ শতক জায়গা বন্দোবস্ত দেন। বিষয়টি চলামান মামলায় হেরে যায় জেলা প্রশাসন। উচ্চ আদালত জায়গাটি প্রকৃত মালিকদের বুঝিয়ে দিতে নির্দেশনা দেন।
দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মসজিদ রোড এলাকায় উপস্থিত হন। এ সময় চেম্বার অব কমার্সের ভবনে থাকা দোকানদারদের মালামাল সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন। ব্যবসায়ীরা মালামাল সরিয়ে নিয়ে জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালান করেন।
মামলার রায় ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসন অর্পিত সম্পত্তির ২৪ দশমিক ৮৯ শতক জায়গা জেলা চেম্বারসহ বিভিন্ন জনের কাছে বন্দোবস্ত দেন। প্রয়াত লীলাময় ভট্টাচার্য ২০১২ সালের জুলাই মাসে জায়গাটির মালিকানা দাবি করে আদালতে মামলা করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জেলা চেম্বার অব কমার্স। জায়গাটি অর্পিত সম্পত্তি হওয়ায় ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ লীলাময় ভট্টাচার্যের পক্ষে রায় দেন।
সরকার পক্ষ এই অর্পিত আপিল রায় ডিক্রির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে উচ্চ আদালতে রিভিউ করেন। পরে মামলার বাদী রিভিউর বিরুদ্ধে একটি আবেদন করেন। উচ্চ আদাললের আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সালের অর্পিত অপিল মোকদ্দমার রায় ডিক্রি বাস্তবায়নের জন্য এক আদেশ দেন। তবে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে উচ্ছেদের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। চেম্বারও কিছু বলেনি।
লীলাময় ভট্টাচার্যের ছেলে নির্মল ভট্টাচার্য বলেন, এটি আমাদের পূর্ব পুরুষের জায়গা ছিল। বিভিন্ন কারণে এটি অর্পিত সম্পত্তিতে রূপান্তরিত হয়। সরকারের অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যার্পনের আইন করার পর আমরা ২০১২ সালে মামলা করি এবং ২০১৮ সালে রায় হয়। ২০১৯ সালে উচ্ছেদের নোটিশ আসে। উচ্চ আদালতে দুইয়েকটি রিট হওয়ার পর রায় আমাদের পক্ষে আসে। জেলা প্রশাসন প্রত্যেক লিজ গ্রহীতাদের সরে যেতে নোটিশ দেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নুসরাত জাবীন কালবেলাকে বলেন, আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে চেম্বারসহ দুটি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন