কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৫, ০৬:০৪ এএম
আপডেট : ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যে বাঁক নিচ্ছে : সাইফুল হক

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীরা। ছবি : কালবেলা
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীরা। ছবি : কালবেলা

সরকারের অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

বুধবার (৯ জুলাই) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই শঙ্কা প্রকাশ করেন।

সাইফুল হক বলেন, জাতীয় নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে দেশের বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকিও তত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশজুড়ে মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়া নতুন উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। সরকারের অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে। সংস্কার ও নির্বাচনকে ঝুলিয়ে দিতে নানা অপতৎপরতা চলছে। পরিকল্পিতভাবে এসব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

তিনি বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বোঝাপড়ার সংবাদে রাজনৈতিক দলসহ জনগণের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি দেখা গেছে। সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দূরত্বও খানিকটা কমেছে বলে ধারণা করা যায়। কিন্তু সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নির্বাচনের সম্ভাব্য তপশিল নিয়ে কোনো কথা বলতে পারেননি। এই পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত নয়। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তপশিল মোটামুটি নির্বাচনের ৬০ দিন আগে ঘোষণা করার বিধান থাকলেও নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করা দরকার ছিল। আশা করি, নির্বাচন কমিশন এই সম্পর্কে নির্দিষ্টভাবে কথা বলবেন। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গত এক মাসে আবার নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিটাই অবান্তর। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বও নয়। গত ১৬ বছর দেশের মানুষ নিশ্চয় স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেনি।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনৈতিক দলসমূহ এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে পিআর পদ্ধতিতে ভোটের জন্য প্রস্তুত হতে পারেনি। এ কারণে আমরা এবার কেবল সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছি।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী জমানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়া জোরদার করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। নির্বাচনের আগে বিচারের উদ্যোগকে দেশবাসী দৃশ্যমান দেখতে চায়। আর সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া মতৈক্যের ভিত্তিতে বাকি সংস্কার সরকার নির্বাহী আদেশে এখনি সম্পন্ন করতে পারে। তবে সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও সংসদের প্রয়োজন হবে, যাতে জন সম্মতির ভিত্তিতে তা সংবিধানে যুক্ত হতে পারে। আশা করি, এই জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এই লক্ষ্যে ‘জাতীয় সনদ’ স্বাক্ষর করতে পারব। তিনি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আস্থায় নিতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জুলাই-আগস্ট ছাত্র শ্রমিক জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ, পার্টির দুই শহীদ বদিউজ্জামাল ও আবদুল লতিফসহ গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রংপুরে তিন শহীদের কবরে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনসহ সারা দেশে শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও সমাবেশ; ১৮ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে শহীদ পরিবারসমূহ ও আহতদের নিয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় শ্রমিক গণসমাবেশ; ২৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জে গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পরিবারসহ গণসমাবেশ; ২ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: গণআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভা; ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান। এছাড়া গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে পার্টির পোস্টার ও ‘ডাক দিয়ে যাই’ শীর্ষক স্মরণিকা প্রকাশিত হবে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারসমূহের পুনর্বাসন, আহতদের উপযুক্ত চিকিৎসা এবং তাদের পরিবারসমূহকে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতা প্রদানের দাবিও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, সাইফুল ইসলাম, ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরী, জামিরুল রহমান ডালিম প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভারতের আপত্তি উপেক্ষা করে ঢাকাতেই হবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভা!

ফল জালিয়াতি / ১০ বছর পর রাজশাহীর শিক্ষা কর্মকর্তা বরখাস্ত

রেজাল্ট খারাপ হওয়ার চেয়েও অনেক খারাপ কিছু হয় জীবনে: খায়রুল বাসার

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা জানাল ইরান

পাল্লেকেলেতে টস হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ, ফিরেছেন সাইফুদ্দিন

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের গুঞ্জন, স্পষ্ট করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ভিসা নীতিতে বড় পরিবর্তন চীনের

সরকারি কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ ডাকার নিয়ম বাতিল

কুমিল্লায় এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় ছাত্রীর আত্মহত্যা

কোনো নির্বাচনেই আর ইভিএম ব্যবহার হবে না : ইসি 

১০

রাডার ফাঁকি দিতে পারে এমন বিমান তৈরি করবে সৌদি

১১

পটুয়াখালীর ৪ প্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল, মোবাইল বন্ধ প্রধান শিক্ষকদের

১২

হেফাজতের বিক্ষোভ সমাবেশ শুক্রবার

১৩

ইসলামে আত্মহত্যার শাস্তি ভয়াবহ

১৪

নাম ছিল তার গুলবাহার, ফারিণের উদ্দেশে ভক্তের মন্তব্য

১৫

ভারতে গেল প্রধান উপদেষ্টার পাঠানো আম

১৬

দুই জাহাজ ডুবিয়ে এবার ইসরায়েলের বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

১৭

এসএসসিতে ৩২০ জন অংশ নিয়ে সবাই পেল জিপিএ ৫

১৮

এস আলম পরিবারের সিঙ্গাপুরের ব্যাংক হিসাব-শেয়ার ফ্রিজ

১৯

এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

২০
X