সরকারি আইন অমান্য করে নাটোরের হালতিবিলসহ বিভিন্ন বিলে মাছের পোনা নিধনের মহোৎসব চলছে। এ অঞ্চলের নদনদী ও খাল-বিলের পানিতে রাত-দিন প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালসহ বিভিন্নভাবে পোনা মাছ নিধন করছেন কিছু অসাধু জেলে। ফলে একদিকে যেমন মাছের স্বাভাবিক প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে এসব নিষিদ্ধ জালে ছেঁকে মাছ ধরার কারণে বিলের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হলেও প্রভাবশালীদের কারণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন অসাধু জেলেরা। সেইসঙ্গে প্রভাবশালীরা বিভিন্ন ব্রিজের মুখ আটকে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। যার ফলে পানির অভাবে কৃষকরা পাট জাগ দিতেও পারছেন না।
সরেজমিন দেখা গেছে, হালতিবিলসহ উপজেলার বিভিন্ন বিলে নৌকা নিয়ে অসাধু জেলেরা নিষিদ্ধ জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন। বাদাই জাল, চায়না দুয়ারি জাল ফেলে পোনা মাছ শিকার করছেন তারা। ভোরের আলো না ফুটতেই হালতিবিলের মাধনগর, পাটুলসহ বিভিন্ন বাজারগুলোয় আসতে শুরু করে নির্বিচারে জেলেদের জালে ধরা পড়া মাছের ছোট ছোট পোনাসহ বিভিন্ন মাছ। নামমাত্র দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পোনা মাছ।
দেশে যেসব জাল দিয়ে মাছ শিকার নিষেধ তার অন্যতম চায়না দুয়ারি জাল। মিহি এ জাল পেতে হালতিবিলের বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরছেন জেলেরা। নামে জাল হলেও চায়না দুয়ারি মূলত এক ধরনের মাছ ধরার ফাঁদ। যাতে আটকা পড়ে পুঁটি, টেংরা, শোল, বোয়ালসহ বিভিন্ন ধরনের মাছের পোনা। বেশিরভাগ জালে মাছের সঙ্গে সঙ্গে মারা পড়ছে বিভিন্ন জলজপ্রাণীও। এতে হুমকির মুখে পড়ছে হালতিবিলের প্রাণবৈচিত্র্য। অন্যায় জেনেও নির্বিচারে পোনা নিধন চালিয়ে যাচ্ছেন জেলেরা।
স্থানীয় এলাকাবাসী উজ্জ্বল হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রাশেদ আলমসহ অনেকে বলেন, হালতিবিলসহ উপজেলার বিভিন্ন বিলে নৌকা নিয়ে অসাধু জেলেরা নিষিদ্ধ জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন। বাদাই জাল, চায়না দুয়ারি জাল ফেলে পোনা মাছ শিকার করছে তারা। সেইসঙ্গে প্রভাবশালীরা বিভিন্ন ব্রিজের মুখ আটকে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন। যার ফলে পানির অভাবে কৃষকরা পাট জাগ দিতেও পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, ভোরের আলো না ফুটতেই বিভিন্ন মাছের আড়ৎ ও বাজারে বিক্রি চলছে। বেশিরভাগ জালে মাছের সঙ্গে সঙ্গে মারা পড়ছে বিভিন্ন জলজ প্রাণীও। এতে হুমকির মুখে পড়ছে হালতিবিলের প্রাণবৈচিত্র্য। এসব অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের ফলে ধ্বংস হবে হালতিবিল, প্রশাসনের আরও অভিযান চালিয়ে হালতিবিলসহ উপজেলার অন্যান্য খাল, বিল, নদী রক্ষার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালিম বলেন, মৎস্য আইন বাস্তবায়নে অবৈধ জাল উচ্ছেদসহ বিভিন্নভাবে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন জাল উদ্ধার ও বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। অবৈধ কার্যকম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হবে।
মন্তব্য করুন