মমিনুল ইসলাম, মতলব উত্তর (চাঁদপুর)
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:৫৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ

কাজ ফেলে ‘গায়েব’ ঠিকাদার

অর্ধেক কাজ করে  ‘গায়েব’ ঠিকাদার। ছবি : কালবেলা
অর্ধেক কাজ করে ‘গায়েব’ ঠিকাদার। ছবি : কালবেলা

চাঁদপুরের শ্রীরায়েরচর-ছেংগারচর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে কাজের অগ্রগতি থমকে গেছে। ২৬ কোটি টাকার এই প্রকল্পে নির্ধারিত সময় পার হলেও এখনো প্রায় এক চতুর্থাংশ কাজ অসমাপ্ত। ৫ আগস্টের-২৪ পর থেকে নির্মাণকাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড’ কাজ ফেলে লোকজনসহ গা-ঢাকা দিয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। বৃষ্টির সময় পুরো সড়ক কাদায় ঢেকে যায়, আর শুকনো দিনে ধুলোর ঝড় ওঠে। স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী, শ্রমজীবী মানুষ এবং চালক সবাই চরম দুর্ভোগে।

এই সড়কটি শুধু মতলববাসীর নয়, বরং চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম অভিমুখে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতে এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে আরও সংযোগ বাড়ানোর প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে কাজ আটকে পড়ায় সব স্বপ্ন এখন প্রশ্নবিদ্ধ।

রিকশাচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, এই রাস্তায় ধুলায় চোখে কিছু দেখা যায় না। আবার বৃষ্টি হলে কাদায় আটকে যায় গাড়ি। কখনো পিছলে পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটে।

দেওয়ানজীকান্দির বাসিন্দা দিপালী আক্তার বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার সময় ঝাঁকুনিতে আমার বাচ্চা ভয় পেয়ে চিৎকার করে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য এ রাস্তায় চলাফেরা করা খুব বিপজ্জনক।

স্থানীয়রা বলছেন, কাজ শুরুতেই ধীরগতির কারণে আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। এখন তো পুরোপুরি বন্ধ। অবিলম্বে ঠিকাদারের চুক্তি বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে সড়কটি শেষ না করলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, এটাই একমাত্র রাস্তা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসার জন্য। এমন রাস্তায় রোগীরা মারাত্মক সমস্যায় পড়ছেন।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, শ্রীরায়েরচর থেকে ছেংগারচর পর্যন্ত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১০.৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে মাত্র ৫.২ কিলোমিটার কার্পেটিং শেষ হয়েছে। বাকি ৪.৮ কিলোমিটারে কাজের কোনো অগ্রগতি নেই। নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখলেও কোনো শ্রমিক বা প্রকৌশলীর দেখা নেই ১ বছর ধরে।

চাঁদপুর সওজ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঠিকাদার এবং তার কোনো প্রতিনিধিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আড়াই মাস আগে কাজ বাতিলের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। ইতোমধ্যে যে কাজ হয়েছে, তাও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চুক্তি বাতিল করলে নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ শুরু করতে পারব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এই সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। আমি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি। জনস্বার্থে দ্রুত নির্মাণকাজ শেষ করা প্রয়োজন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পুতিনকে ট্রাম্পপত্নীর গোপন চিঠি, কী আছে এতে?

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ম্যাক্সওয়েলের ঝলকে সিরিজ জিতল অস্ট্রেলিয়া

টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরুর তারিখ পরিবর্তন

ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক

ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচনী সমঝোতায় যাবে না এনসিপি

দলীয় শৃঙ্খলার ব্যত্যয় না ঘটায় এনসিপির ৫ নেতার শোকজ প্রত্যাহার

‘রাষ্ট্র কাঠামোয় সব মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে’

শেখ মুজিবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাসিনা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল : আবু হানিফ

স্ত্রীর প্রেমিককে গণধোলাই দিতে বললেন হিরো আলম

পুতিনের মাথার ওপরেই কেন বোমারু বিমান ওড়াল যুক্তরাষ্ট্র

১০

মোবাইলে ডাটা খরচ কমানোর ৮ কৌশল

১১

মেয়াদ শেষ হলেও শুরু হয়নি সাবমার্সিবল প্রকল্পের কাজ

১২

কম্বলের জন্য চিকিৎসা আটকে দিল নিটোর হাসপাতাল 

১৩

নেপালকে হারিয়ে টপ এন্ডে বাংলাদেশের প্রথম জয়

১৪

‘আমাদের এখন কী হবে?’

১৫

ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র কতটা ভয়ংকর?

১৬

হাটিকুমরুল থেকে বনপাড়া মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের দাবিতে মানববন্ধন

১৭

সিলিকা বালু লুটে হুমকির মুখে ছড়ার সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য

১৮

আমাকে ওর সঙ্গে তুলনা করছে, সেটা সমস্যা না : মাহি

১৯

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠিয়েছে ঐকমত্য কমিশন

২০
X