‎ সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বাড়ির আঙিনায় সাকার মাছ

‎চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাড়ির আঙিনায় ছোটাছুটি করছে রাক্ষুসে সাকার মাছ।
‎চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাড়ির আঙিনায় ছোটাছুটি করছে রাক্ষুসে সাকার মাছ।

‎চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাড়ির আঙিনায় ছোটাছুটি করছে রাক্ষুসে সাকার মাছ। রোববার (০৩ আগস্ট) সকালে সৈয়দপুর ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর গ্রামের সিরাজুল হকের বাড়ি থেকে রাক্ষুসে মাছটি ধরেছেন মোহাম্মদ রাকিব নামে এক প্রবাসী। মাছটির ওজন প্রায় এক কেজি।

এর আগেও উপজেলার বেশ কয়েক জায়গায় এ রাক্ষুসে মাছ পাওয়া গেলেও আকারে ও ওজনে ছিল ছোট। সাধারণত এ মাছ ঘরের বা অফিসে শোভাবর্ধনের জন্য অ্যাকুরিয়ামে রাখা হতো। এ মাছের চেহারা বিড়ালের মতো হওয়ায় মাউথ ক্যাটফিশ হিসেবেও পরিচিত। দেশে এ মাছ খাওয়া ও চাষ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

মোহাম্মদ রাকিব বলেন, সকালবেলা বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছিলাম। এ সময় বাড়ির আঙিনায় ছোটাছুটি করছিল মাছটি। বড় মাছ দেখে প্রথমে খুশি হলেও ধরার পরে দেখি এটি সাকার। এত বড় সাকার মাছ এর আগে দেখিনি। গ্রামগঞ্জে অনেকটা বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ।

ধারণ করা হচ্ছে, এ রাক্ষুসে মাছ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। ফলে দেশি মাছ খেয়ে ধ্বংস করে ফেলছে।

মো. ফারুক নামে এক যুবক বলেন, এ মাছ ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে ধরতে দেখেছি। আমার জানামতে এগুলো ভয়ংকর মাছ। গ্রামগঞ্জে পুকুরে থাকলে দেশীয় মাছ ধ্বংস করে ফেলে। এ মাছ এখানে এলো কীভাবে?

এদিকে মাছটি একনজর দেখার জন্য বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় করছেন। খবর পেয়ে ছুটে আসেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। পরে মাছটি কেটে হাঁস-মুরগিকে খাওয়ানো হয়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহ বলেন, সাকার মাছের নাম শুনেছি; কিন্তু দেখিনি। তাই মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে মাছটি দেখতে গিয়েছিলাম। এ মাছটি খুবই ভয়ংকর। এ রাক্ষুসে মাছ খালবিলে-পুকুরে থাকলে দেশীয় মাছ ধ্বংস হয়ে যাবে।

‎উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, সাকার মাছ খাওয়া ও চাষ করা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে সম্পূর্ণরূপ নিষিদ্ধ। সচরাচর এ মাছ পাওয়া গেলেও আকারে ও ওজনে অনেক ছোট। কিন্তু এটির ওজন ১ কেজি ১০০ গ্রাম। এগুলো ভয়ংকর প্রজাতির মাছ। পাখনা খুব ধারালো। পাখনার আঘাতে সহজেই অন্য মাছের দেহে ক্ষত তৈরি হয়। পরবর্তী সময়ে পচন ধরে সে মাছ মারা যায়।

তিনি আরও বলেন, মাছটি একবার কোনো জলাশয়ে ঢুকে পড়লে এর বিস্তার রোধ করা খুব কঠিন। চাষের পুকুরে এ মাছ ঢুকে পড়লে অন্য মাছের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করে। চাষযোগ্য মাছ সাকার ফিশের সঙ্গে খাবার ও বাসস্থানের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে না। মাছ চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েন। মাছটি পানি ছাড়াই প্রায় ২৪ ঘণ্টা বাঁচতে পারে।

দেশে ছড়িয়ে পড়ায় ২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মাছটি নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কেউ অমান্য করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। এ ছাড়া মাছটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলার জন্য বলেন তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নতুন চার ধরনের ভিসা চালু করল আমিরাত, পরিবর্তন পুরোনো নিয়মেও

সাকিবকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা আসিফের

ডেঙ্গুতে ঝরল আরও ৩ প্রাণ, হাসপাতালে ৭৩৫

দেশে নির্বাচনের সময়ক্ষেপণের ষড়যন্ত্র চলছে : এম এ মালেক

১৩ মাসে ১৪ খুন, উদ্বিগ্ন জনসাধারণ

৪০ কোটি টাকা পাচার, ১৪ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা 

ষড়যন্ত্রকারীরা গণতন্ত্রকে রুখতে পারবে না : গয়েশ্বর

লোভনীয় অফারে হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা, গ্রেপ্তার ৫

গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছেন থালাপতি বিজয়?

জাপার রওশনপন্থি মহাসচিব মামুনুর রশীদের ৬ দিনের রিমান্ড

১০

দুর্গাপূজায় অসহায়দের পাশে সনাতনী অধিকার আন্দোলন

১১

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কোরআনে হাফেজের মৃত্যু

১২

‘বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সমন্বিত স্বাস্থ্যখাত তৈরি করা হবে’ 

১৩

৮৯ বার পেছাল রিজার্ভ চুরি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন

১৪

নিজের জন্য সঠিক পারফিউম বাছাই করবেন কীভাবে

১৫

বিমানবন্দর থেকে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৬

এবার দুর্নীতির মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিক গ্রেপ্তার

১৭

পদ্মার এক ঢাই মাছ প্রায় অর্ধলাখ টাকায় বিক্রি

১৮

ঝড় তুললেন পরী মণি

১৯

রেলিং ভেঙে ঝুলে পড়ল ট্রাক

২০
X