ফরহাদ হোসেন, কয়রা (খুলনা)
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সুন্দরবনের যে ফলে তৈরি হয় আচার, রান্না হয় চিংড়ি মাছ

সুন্দরবনে নদীতীর ধরে দেখতে পাবেন সারি সারি কেওড়া গাছ। ছবি : কালবেলা
সুন্দরবনে নদীতীর ধরে দেখতে পাবেন সারি সারি কেওড়া গাছ। ছবি : কালবেলা

সুন্দরবন ঘেঁষা খুলনার কয়রা উপজেলা পাশেই বয়ে চলেছে শাকবাড়িয়া, কপোতাক্ষ নদী। গ্রামের মেঠোপথে হাঁটলেই শোনা যায় পাখির কিচিরমিচির ডাক। সেখানকার নদীতীর ধরে দেখতে পাবেন সারি সারি কেওড়াগাছ। ঘন সবুজ কেওড়াগাছে চেয়ে আছে চারপাশ।

বর্ষাকালে সুন্দরবনের এসব গাছে ধরে বুনো ফল কেওড়া। বনজীবীদের ভাষায় এটি বনের ফল হলেও বন্যপ্রাণীর কাছে এটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। বিশেষ করে হরিণ, বানর, কিছু পাখি ও অন্যান্য প্রাণী এই ফল খেয়ে থাকে।

সুন্দরবনের বিভিন্ন খালের ধারে ঝোপঝাড়ের মাঝে কেওড়া গাছের শাখায় শাখায় লটকে আছে ছোট-বড় অসংখ্য কেওড়া ফল। বর্ষা মৌসুমে এই ফল পাকতে শুরু করে এবং তখন প্রাণীদের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়। কেওড়া ফল দেখতে অনেকটা ডুমুরের কিংবা লটকনের মতো। সবুজ রঙের ফলের ওপরের মাংসল অংশ টক স্বাদের। ভেতরে বেশ বড় বীজ। সাধারণত ফাল্গুনে কেওড়াগাছে ফুল ফোটে আর চৈত্র-বৈশাখে ফল ধরে। আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত কেওড়া ফল পাওয়া যায়।

স্থানীয়রা বলছেন, উপকূলীয় জেলাগুলোর লোকজন কেওড়া ফলের সঙ্গে ছোট চিংড়ি মাছ ও মসুরের ডাল রান্না করে খেয়ে থাকে। তা ছাড়া কেওড়া ফল থেকে আচার ও চাটনি তৈরি করা হয়। এ ফল পেটের অসুখের চিকিৎসায় বিশেষত, বদহজমে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে সুন্দরবনে উৎপন্ন মধুর একটা বড় অংশ আসে কেওড়া ফুল থেকে। তাই এ গাছটি হয়ে উঠতে পারে লবণাক্ততায় আক্রান্ত কর্দমাক্ত জমির বিশেষ ফসল।

কেওড়াগাছ ২৯ মিটারের বেশি লম্বা হয় এবং মাটি শক্ত করে, জলবায়ু সহিষ্ণু, আবার উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধেও সহায়তা করে। ফলে সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে কেওড়ার মতো গাছের গুরুত্ব অপরিসীম।

কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আ. ব. ম আব্দুল মালেক বলেন, কেওড়া ফল সাধারণত বর্ষার সময়ে সুন্দরবনের গাছে ধরে থাকে। এটি দেখতে ডুমুরের মতো, এ ফল টক প্রকৃতির, যা সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার মানুষ আচার, চাটনি ও ডালের সঙ্গে রান্না করে খেয়ে থাকে। কেওড়ার ফুল থেকে মধু ও সংগ্রহ করা হয়, যেটা অত্যন্ত সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এই কেওড়া গাছ বনের খাদ্যচক্র ও বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সংরক্ষণে আমাদের সবার সচেতনতা দরকার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অতিরিক্ত গরম চা বা কফির তাপমাত্রা কি ক্যানসার সৃষ্টিকারী? যা বলছে গবেষণা

পদ্মায় জেলের জালে উঠে এলো ২৫ কে‌জির পাঙাশ, বিক্রি কত?

এক ইলিশের দাম ১৪ হাজার টাকা

রক্তদান করলে মাত্র ১০ মিনিটেই কি ৫০০ ক্যালোরি খরচ হয়, যা বলছেন চিকিৎসক

‘ইউল্যাব ফ্রেশার্স’ অরিয়েন্টেশনে শরীফুল ইসলামের বিশেষ উপস্থিতি

সহকর্মীর ছুরিকাঘাতে পোলট্রি ফিডের কর্মচারী নিহত

সিরাজ মিয়া মডেল স্কুলে গাছের চারা বিতরণ করল আমরা বিএনপি পরিবার

হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করলেন আখতার

বীরকন্যা প্রীতিলতার আত্মজীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তের দাবি

পাকিস্তানের বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে মাঠে নামতে পারে বাংলাদেশ

১০

মাস শেষে হাতে টাকা থাকছে না? এই ৫ কৌশল মেনে চলুন

১১

দুর্গাপূজায় সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে টানা ৮ দিন

১২

সিজারের সময় রোগীর মূত্রথলি ও ভুঁড়ি কাটলেন চিকিৎসক

১৩

ইয়ামাল ব্যালন ডি’অর না জেতার কারণ জানালেন লা লিগা সভাপতি

১৪

ধর্ষণের শিকার নারীকে মারধর করে চুল কাটার অভিযোগ 

১৫

বাংলাদেশের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য হারে বাণিজ্য বাড়াতে চায় পাকিস্তান

১৬

মঞ্চেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন অভিনেতা!

১৭

চার বিশ্বনেতার সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়েছে : প্রেস সচিব

১৮

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

১৯

অস্ত্রের মুখে বসতঘরে ডাকাতি, ২ ভাইকে কুপিয়ে জখম

২০
X