মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২
ফরহাদ হোসেন, কয়রা (খুলনা)
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:৩৩ পিএম
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সুন্দরবনের যে ফলে তৈরি হয় আচার, রান্না হয় চিংড়ি মাছ

সুন্দরবনে নদীতীর ধরে দেখতে পাবেন সারি সারি কেওড়া গাছ। ছবি : কালবেলা
সুন্দরবনে নদীতীর ধরে দেখতে পাবেন সারি সারি কেওড়া গাছ। ছবি : কালবেলা

সুন্দরবন ঘেঁষা খুলনার কয়রা উপজেলা পাশেই বয়ে চলেছে শাকবাড়িয়া, কপোতাক্ষ নদী। গ্রামের মেঠোপথে হাঁটলেই শোনা যায় পাখির কিচিরমিচির ডাক। সেখানকার নদীতীর ধরে দেখতে পাবেন সারি সারি কেওড়াগাছ। ঘন সবুজ কেওড়াগাছে চেয়ে আছে চারপাশ।

বর্ষাকালে সুন্দরবনের এসব গাছে ধরে বুনো ফল কেওড়া। বনজীবীদের ভাষায় এটি বনের ফল হলেও বন্যপ্রাণীর কাছে এটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। বিশেষ করে হরিণ, বানর, কিছু পাখি ও অন্যান্য প্রাণী এই ফল খেয়ে থাকে।

সুন্দরবনের বিভিন্ন খালের ধারে ঝোপঝাড়ের মাঝে কেওড়া গাছের শাখায় শাখায় লটকে আছে ছোট-বড় অসংখ্য কেওড়া ফল। বর্ষা মৌসুমে এই ফল পাকতে শুরু করে এবং তখন প্রাণীদের আনাগোনা আরও বেড়ে যায়। কেওড়া ফল দেখতে অনেকটা ডুমুরের কিংবা লটকনের মতো। সবুজ রঙের ফলের ওপরের মাংসল অংশ টক স্বাদের। ভেতরে বেশ বড় বীজ। সাধারণত ফাল্গুনে কেওড়াগাছে ফুল ফোটে আর চৈত্র-বৈশাখে ফল ধরে। আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত কেওড়া ফল পাওয়া যায়।

স্থানীয়রা বলছেন, উপকূলীয় জেলাগুলোর লোকজন কেওড়া ফলের সঙ্গে ছোট চিংড়ি মাছ ও মসুরের ডাল রান্না করে খেয়ে থাকে। তা ছাড়া কেওড়া ফল থেকে আচার ও চাটনি তৈরি করা হয়। এ ফল পেটের অসুখের চিকিৎসায় বিশেষত, বদহজমে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে সুন্দরবনে উৎপন্ন মধুর একটা বড় অংশ আসে কেওড়া ফুল থেকে। তাই এ গাছটি হয়ে উঠতে পারে লবণাক্ততায় আক্রান্ত কর্দমাক্ত জমির বিশেষ ফসল।

কেওড়াগাছ ২৯ মিটারের বেশি লম্বা হয় এবং মাটি শক্ত করে, জলবায়ু সহিষ্ণু, আবার উপকূলীয় জলোচ্ছ্বাস প্রতিরোধেও সহায়তা করে। ফলে সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে কেওড়ার মতো গাছের গুরুত্ব অপরিসীম।

কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আ. ব. ম আব্দুল মালেক বলেন, কেওড়া ফল সাধারণত বর্ষার সময়ে সুন্দরবনের গাছে ধরে থাকে। এটি দেখতে ডুমুরের মতো, এ ফল টক প্রকৃতির, যা সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার মানুষ আচার, চাটনি ও ডালের সঙ্গে রান্না করে খেয়ে থাকে। কেওড়ার ফুল থেকে মধু ও সংগ্রহ করা হয়, যেটা অত্যন্ত সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর।

এ বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এই কেওড়া গাছ বনের খাদ্যচক্র ও বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সংরক্ষণে আমাদের সবার সচেতনতা দরকার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নাসিম শাহর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি

সরকারি মেডিকেল কলেজে কমলো ৩৫৫ আসন

মেডিকেল-ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার তারিখ জানা গেল, আবেদনে যোগ্য যারা

এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, আটক ৫

বিইউএফটি জাতীয় কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২৫ অনুষ্ঠিত

স্বাগতিকদের অম্লমধুর দিন

রাতে রাজধানীর আরেক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ

এনসিপির কার্যালয়ের সামনে ককটেল নিক্ষেপ

জামিনে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা, ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তরে কারও অনুমতি লাগবে না : গণপূর্ত মন্ত্রণালয়

১০

কুড়ির এশিয়ান কাপে সঙ্গী চীন

১১

প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন প্রত্যাহার

১২

বন্দর ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মাশুল নিয়ে দর-কষাকষি চলছে : নৌ উপদেষ্টা

১৩

দিল্লিতে বিস্ফোরণের আগে ‘রহস্যময়’ অভিযান, যা জানা গেল

১৪

দেশ কীভাবে পরিচালিত হবে ৩১ দফায় সবই রয়েছে : হারুনুর রশিদ

১৫

কর্মজীবী নারীদের নতুন প্রস্তাব দিলেন জামায়াত আমির

১৬

আমিনুলের ঘোষণায় শুরু হচ্ছে বিসিবির নতুন যুগ

১৭

হামিমের উদ্যোগে তারেক রহমানের জন্মদিনে ফ্রি মেডিকেল ক‍্যাম্প

১৮

দিল্লি কাঁপানো ৩৭ মিনিট, কী ঘটেছিল

১৯

বার্সাকে না জানিয়েই ক্যাম্প ন্যু’তে ফিরেন মেসি!

২০
X