গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিচালনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, নতুন প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখাই হচ্ছে আমাদের জাতীয় সনদ। এর ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান হয়।
সুব্রত চৌধুরী বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেটি নিয়ে দেশি-বিদেশি কোনো শক্তি, কোনো ষড়যন্ত্রকারীর ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আমরা সহ্য করব না। সঠিক সময়ে এই নির্বাচন হবে। জুলাই সনদের নামে নানা রকম চক্রান্ত করা হচ্ছে। বিশেষ করে কয়েকটি দল, তাদের আমরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছি- জুলাই সনদ হবে সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। নতুন করে আবার ষড়যন্ত্র করে দেশকে ভিন্ন অবস্থানে নিয়ে যাবেন না।
তিনি বলেন, আমাদের যেগুলো অভাব-অভিযোগ আছে, আজকে রামু থেকে শুরু করে গঙ্গাচড়া পর্যন্ত কোনো একটি ঘটনারও বিচার হয়নি। আগামীতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে প্রতিটি ঘটনার বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার আলোকে আমরা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব। এটাই বিএনপির লক্ষ্য।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে বঞ্চনার শিকার হয়েছে। আশা করি, বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় আসলে তারা আর এভাবে বঞ্চনার শিকার হবেন না।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ইতিহাস বলে- ফ্যাসিবাদের পতনের পর সেই ফ্যাসিবাদ আর ফিরে আসে না। তাহলে হিটলার ফিরে আসতো, মুসোলিনী ফিরে আসতো। কিন্তু তারা আর ফিরে আসেনি। সুতরাং আওয়ামী ফ্যাসিবাদও আর ফিরবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, আগামীর বাংলাদেশে আমরা নতুন নেতৃত্বের আগমনের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। সেই পদধ্বনির জয় হোক। আমাদের প্রত্যাশা, আগামী দিনে আমরা সকলে মিলে বৈষম্য ও নির্যাতনমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ব।
নতুন বাংলাদেশ গড়তে ঐক্যের বিকল্প নেই উল্লেখ করে বিএনপির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়নবিষয়ক সহসম্পাদক ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস বলেন, বিএনপিতে বিভাজন বলে কিছু নেই। আমরা সবাই নিয়ে, সব ধর্মকে নিয়ে কাজ করব। আগামী নির্বাচনে আমরা দেখিয়ে দিব, একটি ভোটও বৃথা যাবে না। এ সময় তিনি আগামী নির্বাচনে ও সংগঠনে বিএনপিপন্থি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নেতাদের যথাযথ মূল্যায়নে তারেক রহমানের প্রতি অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, নিপুণ রায় চৌধুরী, হিন্দু ধর্মীয় ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব তরুণ দে, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব, ইসকন বাংলাদেশের প্রভু বিমলা প্রসাদ, কল্যাণ ফ্রন্টের মিল্টন বৈদ্য, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের জয়দেব রায় জয়, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের একাংশের সুশান্ত চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল বারী ড্যানি, জন গোমেজ, সুশীল বড়ুয়া, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বসু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন