গাজীপুরের শ্রীপুরে ইয়াবা সেবন করে এক নারীকে হত্যার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গাজীপুর ।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গাজীপুর পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন, শ্রীপুর থানার টেপিরবাড়ি গ্রামের মো. আবুল হোসেনের ছেলে মো. মোখলেসুর রহমান (৩১), একই গ্রামের ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. খোকন মিয়া (২৭) ও মো. মাসুদ রানার ছেলে মো. রাজীব মোড়ল (২৬)।
আসামিদের মধ্যে মোখলেসুর ও খোকন মিয়াকে মঙ্গলবার ভোরে ও রাজীব মোড়লকে পরদিন বুধবার রাতে টেপিরবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মরদেহটি সম্পূর্ণ পচনযুক্ত হওয়ায় আঙুলের ছাপ নেওয়া সম্ভব হয়নি, তাই অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, ইয়াবা সেবনের পর নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে তারা। একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কের লেনদেন নিয়ে কথাকাটাকাটি হলেই শ্বাসরোধে হত্যার পর হাত, পা ও কোমড়ে ইট বেঁধে ওই নারীর মরদেহ পানিতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ২৫ জুলাই গাজীপুরের শ্রীপুরের টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমন মিয়ার ডোবা থেকে হাত, পা বাঁধা ও কোমরে তিনটি ইট বাঁধা ৩০ বছর বয়সী এক নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক সজীব হাসান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ দুই মাস মামলাটি তদন্ত করে কোন তথ্য উৎঘাটিত না হওয়ায় গাজীপুর পিবিআইর কাছে মামলাটি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। দীর্ঘ সময় তদন্ত শেষে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইর উপপরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম জানান, গত বছর ঘটনার ৩/৪দিন আগে তারা তিন বন্ধু মিলে চায়ের দোকানে বসে ইয়াবা সেবনের পাশপাশি এক নারীকে এনে শারীরিক সম্পর্ক করে ফূর্তি করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাত ১০টার দিকে টেপিরবাড়ি গ্রামের সুমনের বাড়ির পাশে নির্জন জায়গাতে যায় এবং ইয়াবা সেবন করে। ইয়াবা সেবনের পর মেয়েটির সাথে তারা শারীরিক সম্পর্ক করে। পরে শারীরিক সম্পর্কের লেনদেন নিয়ে মেয়েটির সঙ্গে মোখলেস, খোকন ও রাজিবের কথাকাটাকাটি হলে একপর্যায়ে তারা মেয়েটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের সুমনের মালিকানাধীন একটি পানি ভর্তি ডোবায় মধ্যে হাত পাঁ ও কোমড়ে ইট বেঁধে মরদেহটি ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
গাজীপুর পিবিআইর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা। আসামিদের গ্রেপ্তার করলে মামলার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন হয় এবং আসামিরা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন