রংপুরের তারাগঞ্জে ৫ মাস বয়সী নিজ শিশুসন্তানকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মা তুলসী রানী পুতুলের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টার দিকে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পশ্চিম পলাশবাড়ী এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তুলসী রানী দীর্ঘদিন ধরে মানসিক রোগে ভুগছিলেন। তাকে আজ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা। নিহত শিশুটির বাবা স্থানীয় হোটেল কর্মচারী বাবুলাল (৩৫)। তাদের ৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে আরও একটি ৫ বছর বয়সী কন্যাসন্তান রয়েছে। তুলসীর বাবার বাড়ি সৈয়দপুরের আদানীর মোড়ের দলুয়া বাড়ি এলাকায়।
শিশুটির দাদি পাতানি বালা শোকাহত কণ্ঠে বলেন, ছেলের বউ তুলসী কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। তাকে নিয়ে আজ চিকিৎসার জন্য রংপুরে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। আজ সকাল ৬টায় আমি নাতনিকে দুধ খাওয়াতে বলি। সে দুধ খাওয়াতে ঘরে ঢোকে আমার এই ফুটফুটে নিষ্পাপ ৫ মাস বয়সী নাতনিকে রান্না কাজে ব্যবহৃত কাটারি (ছুরি) দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে উঠানে ফেলে দেয়। সে যে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটাবে তা আমরা কেউ কল্পনাও করতে পারি নাই।
প্রতিবেশী আজো বালা বলেন, কিছুদিন ধরে তুলসী মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। দুই-তিন ধরে সে নিজেও খান না, শিশুটিকেও খাওয়ান না। প্রতিবেশীরা বলাবলি করলে শিশুটিকে দুধ খাওয়ান। কিন্তু আজ শিশুটিকে তার মা গলা কেটে হত্যা করে মারি ফেলায় (মেরে ফেলায়)।
ঘটনার পর তুলসী রানী নিজেই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, ‘আজকে কিছু হয় নাই। বাচ্চাটা তো আমি নিজে মারলাম। বাচ্চাটা হওয়ার পর থেকে আমি ভালো করে রান্না করে খাইতে পারি না। আরও একটা মেয়ে আছে তার সেবাযত্ন করতে পারি না, এটাই সমস্যা। এ জন্য গলা কেটে মেরে ফেলেছি। আমি নিজেও আর কিছু বলতে পারছি না।’
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং তুলসী রানীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধার করেছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে শিশুটির মা নিজে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছেন। শিশুসন্তানের চাপ এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ বলে মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছি।
মন্তব্য করুন