নারায়ণগঞ্জ শহরে যানজট নিরসনের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালকরা হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে ইজিবাইক চালকদের অভিযোগ শিক্ষার্থীরা তাদের আগে মারধর করেছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
এতে দুপক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, শহরের যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকায় যেন ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য কিছু স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন থেকে বেশ কিছু সংখ্যক যানজট নিরসন কর্মী নিয়োগ করা হয়। ইজিবাইক চালকরা যেন বিশৃঙ্খল চলাচল ও যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করতে না পারে সেজন্য এসব কর্মী বেশ কিছুদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। শহরের চাষাঢ়া এলাকায় ইজিবাইক প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণে মূলত যানজট নিরসন কর্মীদের সঙ্গে ইজিবাইকচালকদের বিরোধ ও সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ও বিজিবি নিয়োগ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
সংঘর্ষের পর ইজিবাইক চালকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী সাধারণ।
ইজিবাইক চালকদের অভিযোগ, যানজট নিরসনকর্মীরা তাদের আগে মারধর করেছেন, এতে তাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্বেচ্ছাসেবীকর্মীদের অভিযোগ, শহরে প্রবেশ করতে নিষেধ করলেও ইজিবাইক চালকরা জোর করে প্রবেশ করতে চায়।
এ দিকে সংঘর্ষের পর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দুপক্ষকে নিয়ে নিজ কার্যালয়ে আলোচনা বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, শহরের শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের দায়িত্ব। আমরা উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছি। ভবিষ্যতে যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক করেছি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, এ ধরনের সংঘাত যাতে আর না ঘটে, সে জন্য আমরা তাৎক্ষণিক বৈঠক করেছি। উভয় পক্ষকে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইজিবাইক চালকদের জন্য যে নির্দিষ্ট এলাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, তাদের অবশ্যই সে সীমানা মেনে চলতে হবে। সংঘর্ষে যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে। কেন এ ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা, শিক্ষার্থী ও ইজিবাইক চালকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন