বরিশাল জেলার সংসদীয় ৬টি আসনে রিকশা প্রতীকের প্রার্থী ঘোষণা করেছে মামুনুল হকের দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার মাধ্যমে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের বরিশাল জেলার উপদেষ্টা মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের গালিব।
এ সময় আওয়ামী লীগসহ দেশের গণতন্ত্রবিরোধী দলসমূহের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ও পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবি এবং স্মার্ট, নিরাপদ ও শিল্পোন্নত বরিশাল নগরী গড়ে তুলতে ১৩ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন খেলাফত মজলিসের নেতারা।
৬টি আসনে প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে তারা হলেন- বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) মুহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম, বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) মুহাম্মাদ আশিকুর রহমান, বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) মুহাম্মদ আরিফ হোসেন, বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) মাওলানা মুহাম্মাদ জুবায়ের গালিব, বরিশাল-৫ (সদর) মুফতি সুলতান মাহমুদ ও বরিশাল বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) মাওলানা মুহাম্মাদ মিজানুর রহমান।
এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন- খেলাফত মজলিস জেলা শাখার উপদেষ্টা মাওলানা জুবায়ের গালিব। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন- কেন্দ্রীয় বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এবং ৬টি আসনের প্রার্থীসহ অন্যা নেতারা।
মতবিনিময় সভায় খেলাফত মজলিসের নেতারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের কর্মসূচি ও প্রার্থীদের পরিচিতি তুলে ধরে বলেন, দেশের সার্বিক সংকট সমাধান, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য খেলাফত মজলিস অঙ্গীকারবদ্ধ।
তারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে। এ ঘোষণাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্বাচনবিহীন চলতে পারে না। কিন্তু এ অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের সাধ্যমে গঠিত হয়েছে। তাদের নিকট জাতির প্রত্যাশা অনেক। বিশেষ করে তারা বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের ওয়াদাবদ্ধ হয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছেন। তাই আগামী নির্বাচনের আগে দৃশ্যমান বিচার ও সংস্কারসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান নেতারা।
দাবিগুলো হলো- অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা, আওয়ামী লীগসহ দেশের গণতন্ত্রবিরোধী দলসমূহের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা, আগামী নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা।
নেতারা বলেন, আমরা মনে করি এই পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়ন ছাড়া কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে এই দাবিগুলো কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে খেলাফত মজলিস বিজয়ী হলে বরিশালকে একটি স্মার্ট, নিরাপদ ও শিল্পোন্নত নগরীতে রূপান্তরিত করতে ১৩ দফা অঙ্গীকার ঘোষণা করেন।
অঙ্গীকারগুলো হলো- ১. পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন করা, ২ নদী ভাঙন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকরী ব্যবস্থাগ্রহণ, ৩. শিল্প উন্নয়ন ও বিনিয়োগ আহ্বান, ৪. শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন করা, ৫. স্বাস্থ্যসেবা আধুনিকীকরণ, ৬. কর্মসংস্থান ও বেকারত্ব হ্রাস করা, ৭. মাদক নির্মূল ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, ৮. কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ৯. পর্যটন ও সংস্কৃতি উন্নয়ন, ১০. সংখ্যালঘু জনহোষ্ঠার উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১১. ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা, ১২. যুব ও কর্মসংস্থান উন্নয়ন এবং ১৩. নারী, শিশু ও প্রবীণদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
মন্তব্য করুন