খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবুর বাড়িতে বোমা ও গুলি বর্ষণের ঘটনার তিনদিন পার হলেও এখনো থানায় মামলা হয়নি। এমনকি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ বলছে, হামলার ঘটনায় দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের অভিযান শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে মোটরসাইকেলে করে দুর্বৃত্তরা বাবুর বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। পরে পাঁচজন যুবক বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে ককটেল নিক্ষেপ করে এবং পালানোর সময় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় বাড়ির ভেতরে পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রূপসার আইচগাতী এলাকার তানভীর আহম্মেদ তৌকিরের সঙ্গে তার ফুফাতো ভাই জ্যোতি ও জ্যোতির বন্ধুদের আর্থিক লেনদেনসংক্রান্ত বিরোধ ও রাজনৈতিক গ্রুপিং ছিল। সম্প্রতি অভিযানে অস্ত্রসহ জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে জ্যোতির বন্ধুরা তৌকিরের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে অজ্ঞাতনামা ১২-১৪ জন যুবক তৌকিরের মোটরসাইকেলে এসে ঘিরে ধরে। তৌকির পালিয়ে বিএনপি নেতা আবু হোসেন বাবুর বাড়িতে প্রবেশ করে রাত পর্যন্ত আশ্রয় নেয়। দুর্বৃত্তরা ওই বাড়ির আশেপাশে অবস্থান করে। পরে তারা আবু হোসেন বাবুর বাড়ি লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও দুই রাউন্ড গুলি চালায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেল বোমার অংশ বিশেষ সংগ্রহ করেছে।
আবু হোসেন বাবুর স্ত্রী ফারিয়া লিসা কালবেলাকে বলেন, হামলার এ ঘটনায় পরিবার থেকে এখনও মামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কল্পনাও করতে পারেনি যে আমাদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটবে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমরা খাবার খাচ্ছিলাম। এ সময় বাহিরে বিকট শব্দ হয়। এ সময় আমার দেবর আবু তাহের লিটন এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ধাওয়া খেয়ে তারা ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যায়।
ফারিয়া লিসা বলেন, আমার স্বামীর স্ট্রোকজনিত কারণে বিদেশে দীর্ঘ চিকিৎসার পর সম্প্রতি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। এটাতে অনেকের মাথাব্যথা। ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক কারণে তার ওপর এ হামলা করা হয়েছে। বাড়িতে হামলার পর থেকে রাতের বেলা পুলিশ এখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
রূপসা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাবেদ হোসেন মল্লিক বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা এ ঘটনা ঘটাতে পারে। এ ছাড়া এখন বিএনপির উপর আর কেউ হামলা করতে পারে না।
রূপসা থানার ওসি মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রকৃত দোষীদের শনাক্ত করা হয়েছে। আশপাশের লোকজন কোনো কিছু স্বীকার করছে না। দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে। বিএনপি নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো মামলা করা হয়নি। তবে পুলিশ এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করেছে।
মন্তব্য করুন