ফরিদপুরে কুমার নদে স্পিডবোটে করে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। সাউন্ড বক্সে উচ্চস্বরে গানের তালে তালে রামদা ও চাইনিজ কুড়ালের মতো অস্ত্র প্রদর্শন করে তারা।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভাঙ্গা থানার ওসি মো. আশরাফ হোসেন এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কুমার নদে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলা সদরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কুমার নদের প্রায় চার কিলোমিটার অংশে অন্তত ২০ থেকে ২৫টি স্পিডবোট ও অর্ধশতাধিক ট্রলার নিয়ে কিশোর ও তরুণরা এই মহড়া চালায়। বাইসাখালি, চণ্ডীদাসদী, আতাদী ও পূর্ব সদরদী এলাকাজুড়ে এই কর্মকাণ্ড চলে।
সূত্র জানায়, শত বছর ধরে বিশ্বকর্মা পূজার দিন কুমার নদে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হতো। ২০০৫ সালে সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার থেকে তা বন্ধ থাকলেও ২০০৯ সাল থেকে আবার এটি চালু হয়। এরপর রাজনৈতিক আধিপত্যের কারণে ২০১৮ সাল থেকে তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর স্থানীয় কিশোর-তরুণরা ট্রলার ও স্পিডবোট দিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে এই দিনে উৎসব পালন করে। তবে এ বছরই প্রথম সেখানে অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা গেল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া দুটি ভিডিওর মধ্যে ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্পিডবোট ও ট্রলারে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে কিছু কিশোর দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করছে। আরেকটি ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা একটি ট্রলার নিয়ে তাদের ধাওয়া করলে তারা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে পালিয়ে যায়।
ভাঙ্গা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জগদীশ মালো বলেন, নৌকাবাইচ বন্ধ থাকলেও প্রতি বছর বিশ্বকর্মা পূজার দিন কিশোর-তরুণরা মহড়া দেয়। তবে কোন স্পিডবোট থেকে অস্ত্র প্রদর্শন করা হয়েছে, সে বিষয়টি আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা তাদের আটকের চেষ্টা করি, কিন্তু কাউকে ধরা সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, তারা মাদারীপুরের রাজৈর থেকে ট্রলার ও স্পিডবোট ভাড়া করে এখানে এসেছিল। বিষয়টি রাজৈর থানাকে জানানো হয়েছে। রাজৈর থানা পুলিশ ওই অস্ত্র প্রদর্শনকারীদের আটকের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
মন্তব্য করুন