সিলেট নগরীতে অবৈধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ, জব্দ করা এবং এসব রিকশার চার্জিং পয়েন্টে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক মালিক-চালকরা।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলের অনুমোদন ও জব্দকৃত রিকশা ফেরতের দাবিতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এ বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
চৌহাট্টা আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন শত শত রিকশাচালক। পরে দুপুর ১২টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে এসে পৌঁছান এবং সেখানে বাঁশ ফেলে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন। পুলিশি উপস্থিতিতে বড় ধরনের অচলাবস্থা তৈরি না হলেও চালকদের উত্তেজিত স্লোগানে পুরো এলাকা সরব হয়ে ওঠে।
মিছিল শেষে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে রওনা হন। পথে পথে তারা ‘পারমিট চাই’, ‘রিকশা চালাতে দাও’, ‘গরিবের পেটে লাথি মেরো না’— এমন নানা স্লোগানে উত্তাল করে তোলেন নগরীর রাজপথ। মিছিল শেষে চালকরা বন্দরবাজার পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে সমবেত হন এবং সেখান থেকেও একই দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রিকশাচালকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যান। এ সময় সিটি করপোরেশনের একটি গাড়িসহ দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। সেখান থেকে দাবির পক্ষে স্মারকলিপি পেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এর আগে, গত তিনদিন ধরে সিলেট নগরীতে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে চালানো বিশেষ অভিযানে শতাধিক যানবাহন আটক ও মামলা করা হয়েছে। বুধবার অভিযানের তৃতীয় দিনে ৬৯টি যানবাহন আটক করা হয়, যার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যাই ছিল সবচেয়ে বেশি— মোট ৪৪টি।
এ ছাড়াও ৩১টি যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক করা যানবাহনের মধ্যে সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, পিকআপ, ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহনও ছিল।
অভিযানের অংশ হিসেবে নগরীর শামীমাবাদ এলাকায় পরিচালিত এক বিশেষ অভিযানে ১১টি গ্যারেজের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ১৪৫ ফুট বৈদ্যুতিক তার, ১৮০টি চার্জিং পয়েন্ট ও ১০টি অবৈধ মিটার জব্দ করা হয়েছে।
তবে রিকশা চালকদের দাবি, তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচতে চান। পারমিট না দিয়ে রিকশা আটক ও মামলা দিয়ে তাদের পথে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
মন্তব্য করুন