পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ট্রেন ছাড়তে দেরি করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে শরৎনগর স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ অভিযোগ দেননি।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোরে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গুড়া স্টেশনে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস (৭০৫) ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেরামত কাজ চলমান থাকায় সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শরৎনগর স্টেশনে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে থামিয়ে রাখা হয়। ভাঙ্গুড়া স্টেশনে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনে কাজ শেষ না হওয়ায় ওই ট্রেনটি ছাড়তে দেরি হয়। কিন্তু এ নিয়ে যাত্রীরা হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
প্রথমে তারা স্টেশন মাস্টার তওহীদের সাথে তর্কবিতর্ক ও মারধরের চেষ্টা চালান। এরপর আরও যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনে হইচই করে স্টেশনে ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে স্টেশন মাস্টার পাশের মসজিদে ঢুকে আশ্রয় নেন। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে প্রাণ বাঁচাতে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে গ্রামবাসীদের আহ্বান জানানো হয়। পরে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে যাত্রীদের প্রতিরোধ করেন। খবর পেয়ে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ট্রেনটিকে স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় কামরুল হাসান রিফাত ও আকাশ নামে স্থানীয় দুই যুবক আহত হন ও ট্রেনযাত্রী কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এ বিষয়ে শরৎনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. তাওহীদ হোসেন বলেন, ভাঙ্গুড়া স্টেশনের কাছে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মেরামত কাজ চলছিল। যে কারণে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি সোমবার রাত ৮টা ৩২ মিনিটে শরৎনগর স্টেশনে আসার পর কন্ট্রেল রুমের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী দাঁড় করানো হয়। ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় রাত পৌনে সাড়ে ৯টার দিকে কয়েকজন যাত্রী এসে তার সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
তিনি বলেন, যাত্রীদের মধ্যেই দুগ্রুপ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে বেশি ক্ষুব্ধ গ্রুপটি তার কক্ষের একটি চেয়ার ভাঙচুর করে। বাধ্য হয়ে তিনি পাশের মসজিদে আশ্রায় নেন। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে আসার পর তারা চলে যায়। তখন ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ ট্রেনের জানালা ভাঙচুর করে। পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। রাত ১০টা ১০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে যায় বলে জানান তিনি।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। পরে ট্রেনটিকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যাত্রী ও এলাকাবাসীর মারামারিতে কয়েকজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেয়নি।
মন্তব্য করুন