চট্টগ্রামে বিয়েশাদি, গায়েহলুদসহ বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া, খাবার সরবরাহ ও সাজসজ্জার নামে নৈরাজ্য দিনদিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব ও লগ্নে এ নৈরাজ্যের মাত্রা আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটি।
বুধবার (০১ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন ক্যাব নেতারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার ও কনভেনশন হলে খাবার সরবরাহের নামে প্লেটপ্রতি গলাকাটা বিল আদায় হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে মালিকদের ইচ্ছামতো এসব অবৈধ ব্যবসা চললেও সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন কিংবা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকি নেই। ভাড়া ছাড়াও গ্রাহকদের কাঁধে লাইট, ফ্যান ও চেয়ারের বাড়তি খরচ চাপানো হয়।
ক্যাব নেতারা আরও জানান, বর্তমানে চট্টগ্রামে ন্যূনতম ৩০০ অতিথির আয়োজন করতে চাইলে একটি কমিউনিটি সেন্টারের ভাড়া লাখ টাকার নিচে নেই। বড় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ ভাড়া দাঁড়ায় ৫-৭ লাখ টাকায়। সাজসজ্জা ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের খরচ বাধ্যতামূলকভাবে চাপানো হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়। কিছু হলে খাবার সরবরাহও বাধ্যতামূলক, যার দাম নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় রান্নার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
এর সঙ্গে এলইডি, ভিডিওগ্রাফি, বিদ্যুৎ বিল এবং আসবাবের বাড়তি খরচ যুক্ত হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের অনুষ্ঠানে এই খরচ তিন থেকে পাঁচ গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কমিউনিটি সেন্টারগুলো অতিথির সংখ্যা অনুযায়ী বিল আদায় করলেও সরকারের নির্ধারিত ভ্যাট ফাঁকি দেয়। আয়োজকদের কাছ থেকে আদায় করা প্রকৃত খরচের তুলনায় কম ভ্যাট দেখানো হয়। এ ছাড়া খাবারে নিম্নমানের ঘি, ক্ষতিকারক কেমিক্যাল, সুগন্ধি কেওড়াজল ও রং মেশানো হয়, যা কোনো সরকারি তদারকির আওতায় নেই।
অনুষ্ঠান চলাকালে সড়কে সৃষ্ট যানজট নিয়ন্ত্রণেও এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো উদ্যোগ নেই, ফলে নগরবাসী ভোগান্তিতে পড়ছে। ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগ ও মহানগর কমিটি জেলা প্রশাসন এবং ভোক্তা অধিদপ্তরের মাধ্যমে কমিউনিটি সেন্টারগুলোর ভাড়া ও খরচ সরকারি নির্ধারণ এবং নিয়মিত তদারকি অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন