ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, শহীদ আবরার ফাহাদ বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। তিনি আধিপত্য ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রেরণার বাতিঘর। এ কারণেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে হাসিনা ও তার সহযোগীরা (নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ)।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্তানে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আবু সাদিক কায়েম বলেন, শহীদ আবরার ফাহাদের প্রতিবাদ থেকেই বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসে গণজাগরণ তৈরি হয়েছে। গত ১৬ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস চালিয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। যে কেউ আধিপত্য বা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে হত্যা বৈধ হয়ে উঠেছিল। বাংলাদেশ কার্যত ভারতের এক সাবলেট উপনিবেশে পরিণত হয়েছিল, যেখানে ভারতের ইচ্ছামতো সবকিছু চলেছে।
তিনি আরও বলেন, শহীদ আবরার ভাই যে প্রতিবাদের পথ দেখিয়েছেন, সেটির ভিত্তিতেই জুলাইয়ে বিপ্লব হয়েছে। আবরার যে চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে লড়েছেন, জুলাইয়ের শহীদ ও গাজীরাও সেই আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেছিলেন।
ভিপি সাদিক বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক শোষণ, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক গোলামির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ অবস্থার মধ্যেই আবরার ফাহাদ দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, প্রতিবাদ করেছিলেন। তাকে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। সব শহীদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করছি।
তিনি ঘোষণা দেন, ডাকসুর পক্ষ থেকে ৭ অক্টোবরকে 'আগ্রাসনবিরোধী দিবস' হিসেবে ঘোষণা করা হবে। আমরা সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন ও দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি এ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।
ডাকসু ভিপি আরও বলেন, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা যথাযথভাবে ধারণ করছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমাদের শহীদরা যে স্বপ্ন নিয়ে জীবন দিয়েছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনুরোধ করছি। তা না হলে, খুনি হাসিনা বা পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদীদের যেসব পরিণতি হয়েছে, তার চেয়েও ভয়াবহ পরিণতি তাদের হবে।
এর আগে বাংলাদেশ-ভারত অসম চুক্তি ও পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর ছাত্রলীগের হামলায় নিহত আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন তিনি। এসময় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ, ছাত্রশিবির ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন