প্রায়ই দেখা যায়, হঠাৎ রাস্তায় বা আশপাশে কুকুরের আক্রমণের শিকার হন অনেকে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে দেরি করলে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, কুকুরে কামড়ানোর পরপরই সঠিক পদক্ষেপ না নিলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে, টিস্যুর ক্ষয় হতে পারে এমনকি র্যাবিসের মতো প্রাণঘাতী রোগও দেখা দিতে পারে।
তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কামড়ানোর পর প্রথম ১৫ মিনিটই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে নেওয়া দ্রুত ব্যবস্থা জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নিই, প্রথম অবস্থায় কী কী করতে হবে—
১. রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ করুন
যদি কামড়ে প্রচুর রক্তপাত হয়, তাহলে পরিষ্কার কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে আলতো চাপ দিন। তবে খুব বেশি জোরে চাপ দেবেন না, কারণ এতে ব্যাকটেরিয়া আরও ভেতরে প্রবেশ করতে পারে।
২. ক্ষত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন
কামড়ানোর জায়গায় অন্তত ৫-১০ মিনিট ধরে পরিষ্কার পানি ঢালুন এবং হালকা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চিকিৎসকদের মতে, এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এতে কুকুরের মুখের লালা, মাটি ও ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে যায়।
৩. অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করুন
ক্ষত ধোয়ার পর পোভিডোন-আইডিন, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড বা অ্যালকোহলভিত্তিক জীবাণুনাশক লাগান। এটি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা দ্রুত কমিয়ে দেয় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করে।
৪. ক্ষত ঢেকে রাখুন
স্টেরাইল গজ বা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ক্ষত আলতো করে ঢেকে দিন। এতে বাইরের সংস্পর্শ থেকে ক্ষত সুরক্ষিত থাকবে। তবে গভীর ক্ষতের ক্ষেত্রে ব্যান্ডেজ খুব টাইট করে বাঁধবেন না, যতক্ষণ না চিকিৎসা পাচ্ছেন ততক্ষণ শুধু সুরক্ষিত রাখুন।
৫. চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন
ক্ষত ছোট মনে হলেও দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান। কারণ কুকুরের কামড়ে র্যাবিস, টিটেনাস এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। ডাক্তার প্রয়োজনে র্যাবিসের ভ্যাকসিন (PEP), টিটেনাস শট বা অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করবেন।
কেন সচেতনতা জরুরি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক সচেতনতা ও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে কুকুরের কামড়ের পর গুরুতর জটিলতার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তাই আতঙ্কিত না হয়ে প্রথম ১৫ মিনিটেই সঠিক পদক্ষেপ নিন, এটাই জীবন রক্ষার মূল চাবিকাঠি।
সূত্র : কন্টিনেন্টাল হসপিটাল ও দ্য ওয়াল
মন্তব্য করুন