বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন এখন—গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার পর, ফিফা কি তাদের আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করবে? জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন মাত্র এক মাস আগে প্রকাশ করেছে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চাপ বাড়লেও, ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন—ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ভূরাজনৈতিক সংকট মেটাতে পারবে না।
গত বৃহস্পতিবার জুরিখে ফিফা কাউন্সিল সভার শুরুতেই ইনফান্তিনো বিষয়টি স্পর্শ করেন। তবে তিনি এটিকে আনুষ্ঠানিক আলোচ্যসূচিতে আনেননি। উদ্বোধনী বক্তব্যে ৫৫ বছর বয়সী ইতালিয়ান বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে বহু সংঘাত চলছে। যারা কষ্ট পাচ্ছে, আমাদের হৃদয় তাদের সঙ্গে আছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা যা ফুটবল দিতে পারে তা হলো শান্তি ও ঐক্য। ফিফা ভূরাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে পারে না; কিন্তু ফুটবলের শিক্ষামূলক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে মানুষকে এক করতে পারে।’
সভা শেষে ইনফান্তিনো ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জিবরিল রাজৌবের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘এই কঠিন সময়ে রাজৌব ও ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের দৃঢ়তাকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। বিভক্ত পৃথিবীতে মানুষকে এক করতে ফিফা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
এদিকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ফিফা ও উয়েফাকে সরাসরি আহ্বান জানিয়েছে—ইসরায়েলকে বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতা থেকে সাসপেন্ড করতে। ফিফার সহসভাপতি ভিক্টর মন্তাগলিয়ানি অবশ্য বলছেন, এ সিদ্ধান্তের ভার উয়েফার।
বর্তমানে ইসরায়েলের জাতীয় দল উয়েফা আয়োজিত বিশ্বকাপ বাছাইয়ে খেলছে। তাদের ক্লাব দল মাকাবি তেল আবিবও খেলছে ইউরোপা লিগে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নরওয়ের পেছনে তারা এখন তৃতীয় স্থানে আছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজায় ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত পাঁচটির মধ্যে চারটি গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। পরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা ফিফা ও উয়েফাকে আহ্বান জানান—ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করতে, কারণ ‘খেলাধুলা কখনো ‘ব্যবসা চলবে আগের মতো’ এই ধারণা দিতে পারে না।’
তবে ইসরায়েল বরাবরের মতো অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে বলেছে ‘বিকৃত ও মিথ্যা’।
মন্তব্য করুন