কুমিল্লায় বজ্রপাতে প্রাণ হারানো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেদুল ইসলামকে মরণোত্তর ‘চিরঞ্জীব সভাপতি’ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন।
রাসেদ মারা যাওয়ার আগে সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। দায়িত্ব পালনের সময় তার নিষ্ঠা, নেতৃত্বগুণ ও সহমর্মিতার স্মরণে সংগঠনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভবিষ্যতে আর কোনো সভাপতি পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আসিফ হাসান প্লাবন বলেন, ‘রাসেদ ছিলেন আমাদের এক অনুপ্রেরণার নাম। সংগঠনের প্রতিটি কাজে তার আন্তরিকতা ও নেতৃত্ব আজও আমাদের চালিত করে। তাই তার স্মৃতির প্রতি ভালোবাসা থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি—সভাপতি পদটি স্থায়ীভাবে তার নামেই থাকবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা জানিয়েছেন, সিনেমা ও সংগঠন—দুটো নিয়েই রাসেদের ছিল গভীর ভালোবাসা। পড়াশোনার পাশাপাশি সংগঠনের প্রতিটি কার্যক্রমে তার উপস্থিতি ছিল প্রাণবন্ত। তার আকস্মিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমাজে শোকের আবহ নেমে এসেছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে রাশেদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, গত রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘাঘুটিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর ঘাট এলাকায় বজ্রপাতে প্রাণ হারান রাসেদুল ইসলাম। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে খেয়া পার হওয়ার সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। একই ঘটনায় আরও দুই নারী প্রাণ হারান।
রাসেদ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার দুলালপুর ইউনিয়নের পাথালিয়াকান্দি গ্রামে। সহপাঠী ও শিক্ষকরা বলছেন, ‘রাশেদ শুধু একজন ছাত্র ছিল না, সে ছিল একজন উদ্যমী চলচ্চিত্রকর্মী, যার স্বপ্ন ছিল জীবন আর মানুষের গল্পকে সিনেমায় বাঁচিয়ে রাখা।’ চলে গেলেও সেই স্বপ্নের আলোই হয়ত তাকে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ‘চিরঞ্জীব’ করে রাখল।
মন্তব্য করুন