শর্তসাপেক্ষে অনলাইনে ইলিশ বিক্রির জন্য জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নিবন্ধন পেলেন চাঁদপুরের সাতজন উদ্যোক্তা। এ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধনের দৌড়ে এগোতে আবেদন করেছেন আরও ৩৫ জন উদ্যোক্তা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বিকেলে জেলার অনলাইন ইলিশ ব্যবসায়ীদের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
অনলাইনে ইলিশ বিক্রির জন্য নিবন্ধন পাওয়া ফেসবুক পেজগুলো হলো— ইলিশ ভাইয়া, চাঁদপুর-এর কর্ণধার মো. খোকন পাটওয়ারী, টেকিং শপ-এর আব্দুল্লাহ আল মামুন, তাজা ইলিশ ডক কম-এর আহাদ ইসলাম, ইলিশ বাড়ি-এর জান্নাতুল মাওয়া, রূপালী বাজার-এর মাসুদ রানা এবং সজীব ইলিশের বাজার চাঁদপুর-এর সজীব চন্দ্র দাস।
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সজীব চন্দ্র দাস বলেন, ইলিশ বিক্রির বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করল আমার প্রতিষ্ঠান সজীবের ইলিশের বাজার চাঁদপুর। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে নদীর মাছ নিয়ে কাজ করার পর এ সফলতা পেলাম। এই দীর্ঘ পথে গণমাধ্যমকর্মীসহ সব শুভাকাঙ্ক্ষীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আপনারা যেমন পাশে ছিলেন সামনেও তেমনি পাশে থাকবেন। আপনাদের নিয়েই আমার এই পথচলা। নিরাপদ খাদ্য হিসেবে আমি মনে করি নদীর মাছই এক নম্বরে থাকবে। সে মাছই আমরা আপনাদের জন্য সরবরাহ করছি।
শর্ত প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, নিবন্ধন পেতে হলে তাকে অবশ্যই চাঁদপুর জেলার বাসিন্দা হতে হবে। উদ্যোক্তার নির্দিষ্ট একটি ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল অবশ্যই থাকতে হবে। ছবিতে চাঁদপুরের ইলিশের ছবি দেখালে অবশ্যই স্থানীয় পদ্মা-মেঘনার ইলিশই বিক্রেতাকে দিতে হবে। হাতিয়া, রামগতি, ভোলা, চট্টগ্রামের ইলিশ চাঁদপুরের ইলিশ বলে ছবি প্রদর্শন বা বিক্রি করা যাবে না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এরশাদ উদ্দিন বলেন, যারা নিবন্ধিত হলেন তাদের তথ্য আমাদের কাছে থাকবে। তারা তাদের পেজে নিবন্ধন নং উল্লেখ করবে। এই পেজগুলো জবাবদিহিতার আওতায় এলো। ক্রেতাদের বলব, এই পেজ থেকে ইলিশ কিনলে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকবে। দ্রুত অন্যরাও নিবন্ধনের আওতায় চলে আসবে আশা করছি।
পুলিশ সুপার আব্দুর রকিব বলেন, চাঁদপুর জেলা ব্যতীত অন্য কেউ অনলাইনে ইলিশ বিক্রি করলে অর্থাৎ কেউ যদি মন্সুীগঞ্জ বা অন্য জেলার হয় তাহলে তাকে এখনি নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না। নিবন্ধিত জেলেরা সঠিকভাবে প্রচারণা করে চাঁদপুরের ইলিশ বিক্রি করলে প্রতারকরা আর প্রতারণার সুযোগ পাবে না এবং মানুষও নিরাপদভাবে ইলিশ ক্রয় করতে পারবে। এতে চাঁদপুরের ইলিশের সুনাম অক্ষুণ্ন থাকবে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, অনলাইন প্রতারণা ঠেকাতে এটি একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। তবে যারা নিবন্ধিত হলেন তাদের নজর রাখতে হবে। ভুয়া পেজগুলো যাতে নিজেদের নিবন্ধিত দাবি করে ইলিশ বিক্রির প্রতারণা করতে না পারে। এক্ষেত্রে নিবন্ধিত পেজগুলোর নাম ও ফোন নাম্বার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের ওয়েবসাইটগুলোতে দিয়ে দেওয়া হবে। আশা করছি, এখান থেকে ইলিশ কিনলে কেউ আর অর্থ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
এ সময় চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি রহিম বাদশাসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাগণ, গণমাধ্যমকর্মী এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজন উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন